চরিতার্থে ধোঁয়া হইলেও, আমি আগা গোড়াই রক্ত মাংসের একটি মানব। তাই শৈশব কাল হইতেই ইহা ধারণা ছিল যে, মানব শরীর সংবেদনশীল। অর্থাৎ চিমটি কাটিলে লাগিবেক, মারিলে ব্যথা পাইবে ইত্যাদি। কিন্তু বাল্য কালে, কিঞ্চিৎ বন্ধু বান্ধব হইয়াছিল, যাহারা আমাকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করিয়াছিল যে, "দেখ ভাই, চোখ মারলে হেব্বি মজা পাবি!" হাত নয় পা নয়, শেষ কালে এক্কেবারে চক্ষু মারিলে মজা পাওয়া যায়! ইহার ব্যাপকতা আমাকে ভাবুক করিয়া তোলে। বন্ধু বান্ধব হইতে চক্ষু লজ্জার খাতিরে, নিজেকে উন্নত করার প্রচেষ্টায় ইহা পরীক্ষা করিয়া দেখার বিপুল ইচ্ছা লইয়া, একদিন বৈশাখ মাসের ভর দুপুর বেলায় স্কুল হইতে ফিরিবার পথে এক আম গাছের তলায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করিতে থাকি চক্ষু মারার অপেক্ষায়। দুপুরে সব গরমের ছুটি উপভোগ করিতেছে, নিদ্রামগ্ন, রাস্তা সুনসান। মানুষের দেখা না পাইয়া, শেষ কালে একটি কুকুর কে দেখিলাম আমার দিকে তাকাইয়া আছে। হয়তো ভাবিতেছে এই বেদো মানব সন্তান টির মতলব কি? অপরপ্রান্তে আমি ভাবিলাম, প্রথম ধাপেই মানব স্পেসিমেন না লইয়া, এই চার পেয়ে টির উপর পরীক্ষা করিলে কেমন হয় ? যেমন ভাবা তেমনকাজ, পাশের দো আধলা ইট টা উঠিয়ে চার পেয়ে টির চক্ষু তাক করিয়া ছুঁড়িয়া চক্ষু মারবার উপক্রম করিবা মাত্র, ভগবানের দূত টি কিভাবে জানিনা আগাম সন্দেহ করিয়া ভৌ ভৌ করিয়া উল্কা বেগে আমার প্রতি চূড়ান্ত বেগে ধাওয়া করিতে শুরু করে, নিজের চপ্পল জোড়া মাথায় তুলিয়া তীর বেগে ২.৫ কিমি দৌড় করিয়া সে যাত্রা প্রাণে বাঁচিয়া যাই। এই পরীক্ষা হইয়া দুটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলাম তখন, যে আমার গতিবেগ আর কিছু নাই হোক, চার পেয়ে দের তুলনায় বেশী, আর কার্যপ্রণালী না জানিয়া উপযুক্ত সাবধানতা অবলম্বন না করিয়া কোনো পরীক্ষা করিতে নেই।
জনহিতে জারী।
জনহিতে জারী।