• We kindly request chatzozo forum members to follow forum rules to avoid getting a temporary suspension. Do not use non-English languages in the International Sex Chat Discussion section. This section is mainly created for everyone who uses English as their communication language.

সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা, সাপের কামড়ের লক্ষণ, সাপে কাটলে করণীয়,

subsar

Want to touch the Moon
Senior's
Chat Pro User
সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে আমরা সকলে জানতে আগ্রহী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সাপের কামড়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। বিশেষ করে ভারতে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, এদেশে ‌‌‌‌যত সাপে কামড়ানোর ঘটনা ঘটে তার মাত্র ২২ শতাংশ ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসে আর বাকি শতাংশ ওঝার কাছে যায়।

ভারতে রয়েছে প্রায় আড়াইশো প্রজাতির সাপ। তার মধ্যে ৫২ টি প্রজাতি বিষধর। এর মধ্যে ৪০ টির ও বেশি প্রজাতির সাপ সামুদ্রিক।

আর পশ্চিমবঙ্গে মাত্র ৬ টি বিষধর প্রজাতির সাপ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৪ টি সাপের কামড়েই বেশি মৃত্যু হয় l । এগুলি হল …..

১. গোখরো1704347633432.png

গোখরো হল ফণাযুক্ত সাপ।

স্পেক্টকেলভ কোবরা বা বাইনোসিলেট কোবরাও বলে।

ফণার পিছনে ‘ U ‘ অক্ষরের মতো একটি চিহ্ন থাকে। এই চিহ্নটি গরুর খুরের মতো দেখতে লাগে বলে এই গো – খুর থেকে গোখরা কথাটা এসেছে বলে মনে করা হয়।

এই প্রজাতির সাপগুলো আকারে বেশ বড়ই। এদের স্থানীয় নাম খরিস।

এক বাড় কামড়ালে ১৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত বিষ ঢালতে পারে। এদের বিষ শরীরের স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে।

২. কেউটে1704347821809.png

কেউটে হল ফণাধর সাপ। এদের ফণার পিছনে থাকে গোল বা পদ্মচিহ্ন। এদেরকে বলে মনোসিলেট কোবরা।

গোখরোর মত এদের বিষও নিউরোটক্সিক।

এদের স্থানীয় নাম আলকেউটে, কালকেউটে, শামুকভাঙা ইত্যাদি।

এরা ১৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত বিষ ঢালতে পারে।

৩. চন্দ্রবোড়া1704348003409.png

এটি বাংলার একমাত্র হিমোটক্সিক সাপ। অর্থাৎ এই সাপের বিষ রক্ত তঞ্চনের ব্যাঘাত ঘটায়। এই সাপ সবথেকে বেশি প্রাণ কাড়ছে বাংলায়।

সাপটি মোটা চেহারার। দেখতে ধূসর বা বাদামি রঙের আর গায়ে চাকা চাকা দাগ থাকে। ফণাহীন সাপ।

এই বর্গের মূলত দুধরনের সাপ খুবই বিষাক্ত – রাসেলস ভাইপার ও শস্কেলভ ভাইপার অর্থাৎ করাতের দাঁতের মতো গায়ে দাগ থাকে।

এই সাপ কামড়ালে রোগীর রক্ততঞ্চনে সমস্যা হয়। চিকিৎসায় দেরি হলে রোগীর কিডনি নষ্ট হতে থাকে।

৪. কালাচ1704348088617.png

কালাচ একটি ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ। ফণাহীন মাঝারি চেহারার এই সাপটির গায়ের রঙ কালো, তার উপর সরু সরু সাদা চুড়ির মতো ব্যাণ্ড।

দিনের বেলা খোলা বিছানার গরমে থাকতে এই সাপ পছন্দ করে।

ঘুমের মধ্যে নাড়াচাড়া করলেই এই সাপ কামড়ে দেয়।

সবথেকে ভয়ের ব্যাপার হল এই সাপের কামড়ের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায় না এবং যাকে কামড়ায় তৎক্ষণাৎ বুঝতেও পারে না।

হঠাৎ পেটে ব্যাথা বা অন্য উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে যেতে হয়।

অন্যান্য বিষধর সাপ​

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই চার ধরনের সাপ বিপদ ঘটায়। আরও দুধরনের বিষধর সাপ অবশ্য পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে।

এই দুধরনের বিষধর সাপ হল শাঁখামুটি1704348183182.png এবং শঙ্খচুড় বা কিং কোবরা1704348229179.png

তবে শঙ্খচুড় এখন প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। ডুয়ার্স এবং সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে হাতে গোনা দু-একটি রয়েছে। এই সাপ লোকালয়ে আসে না। সেজন্য এই সাপের কামড়ের ইতিহাস গত পাঁচ বছরে জানা যায় নি।

শাঁখামুটি খুব বিষধর সাপ। এই সাপ কামড়ালে বাঁচানো মুশকিল।‌ তবে এই সাপ নিরীহ প্রকৃতির, সাধারণত কাউকে কামড়ায় না।

কালাচ সাপের অন্য একটি ভ্যারাইটি রয়েছে। যাকে কৃষ্ণ কালাচ বলে। । এই সাপ মূলত উওরবঙ্গে দেখা যায়। দক্ষিণবঙ্গে দেখা যায় না।

উওরবঙ্গে চন্দ্রবোড়ার সংখ্যা কম, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে চন্দ্রবোড়ার সংখ্যা অনেক বেশি।

বিষহীন সাপ​

কিছু বিষহীন সাপ যেমন ঘরচিতি, কালনাগিনী, দাঁড়াশ, লাউডগা, লালবাতি বোড়া, অজগর, জলঢোঁড়া, মেটেলি, জলমেটেলি ইত্যাদি এদের কামড়ে মানুষের মৃত্যু হয় না।
সাপে কামড়ানোর লক্ষণ :

১। বিষধর সাপ কামড়ালে দুপাশে দুটি মাত্র বড় মাপের দাঁতের দাগ দেখা যায়।

২। দংশিত স্থান ফুলে উঠে, রক্ত ঝরতে থাকে এবং সেখানে প্রচণ্ড জ্বালা – যন্ত্রনা হয়।

৩। ক্রমশঃ ব্যথা বাড়তে থাকে এবং পরে অসাড়তার সৃষ্টি হয়।

৪। দুর্বলতা দেখা দেয়, মাথা ঘোরে, মাথা ঝিমঝিম করে।

৫। ক্রমশঃ জিভ, মুখমণ্ডল, হাত – পা সব অসাড় হয়ে যায়। হাত – পা ঠাণ্ডা হয়ে যায়।

৬। চামড়ায় কালশিড়া দাগ পরে এবং শরীর ক্রমশঃ নীল বর্ণ ধারণ করে।

৭। চোখের তারা বড় হয়ে যায়। অনেক সময় ছোট ও হয়ে যায়।

৮। শ্বাসকষ্ট হয়, বমিভাব হতে থাকে বা বমি হয়।

৯। শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তপাত হয়।

১০। রক্তচাপ খুব বেড়ে যায় অথবা খুব কমে যায়। হৃৎপিণ্ডের গতি বৃদ্ধি পায়।

১১। মূত্রাবরোধ ঘটে। রক্ত প্রস্রাবও হতে পারে।

১২। দু চোখের পাতা পড়ে আসে ( মূলত নিউরো – টক্সিক সাপের কামড়ের মূল লক্ষণ ) ।

১৩। কামড়ের স্থানে অসম্ভব জ্বালা – যন্ত্রনা ও রক্ত – ক্ষরণ ( মূলত চন্দ্র বোড়া সাপের কামড়ের মূল লক্ষণ ) ।

সাপে কামড়ানোর প্রাথমিক চিকিৎসা​

প্রথমত

সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা
– রোগীকে আশ্বস্ত করুন। কারণ রোগী খুবই আতঙ্কের মধ্যে থাকে। আতঙ্কও মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। রোগীকে বোঝান, সাপের কামড়ে আক্রান্ত বহু মানুষ চিকিৎসায় বেঁচে উঠেছেন, আপনিও নিশ্চিন্তে থাকুন।

দ্বিতীয়ত

সাপে কামড়ানোর প্রাথমিক চিকিৎসা
– যত কম নাড়াচাড়া হবে তত কম হারে বিষ সারা শরীরে ছড়াবে। স্কেল বা বাঁশের টুকরো সহ হাতে – পায়ে ( যে অংশে কামড়াবে ) কাপড় দিয়ে হালকা করে বেঁধে দিন। হাত বা পা ( কামড়ের নিকটতম স্থান ) যাতে তিনি ভাঁজ করতে না পারেন তাই এই ব্যবস্থা।

তৃতীয়ত

ফোন করে জেনে নিন আপনার নিকটতম যে হাসপাতালে A.V.S, নিওস্টিগমিন, অ্যট্রোপিন এবং অ্যড্রিনালিন ওষুধ গুলো আছে সেই হাস – পাতালে চলুন। মাথায় রাখবেন সাপের কামড়ের সম্পূর্ণ চিকিৎসা একটি ব্লক প্রাইমারি হেলথ সেণ্টারেও সম্ভব। সম্ভব হলে রোগীকে বাইকের মাঝে বসিয়ে রোগীর সাথে কথা বলতে বলতে চলুন। যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

চতুর্থ

হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসককে সাপের কামড়ে‌ র চিকিৎসা করতে বলুন। কথা বলতে গিয়ে রোগীর কথার মধ্যে কোনও অসঙ্গতি ( যেমন কথা জড়িয়ে আসা, যথাযথ ভাবে কতক্ষণ আগে শুরু হল চিকিৎসককে জানান।

সাপে কাটলে করণীয়​

মনে রাখুন – সাপে কামড়ানোর ১০০ মিনিটের মধ্যে ১০০ মিলিলিটার AVS শরীরে প্রবেশ করলে রোগীর বেঁচে যাবার সম্ভাবনা ১০০%। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে ওঝার কাছে না গিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান।

সাপে কামড়ালে কী করবেন না​

১। কোনও রকম শক্ত বাঁধন দেবেন না।

২। কামড়ের জায়গায় কোনও কেমিক্যাল লাগাবেন না।

৩। কামড়ের স্থানে ঠাণ্ডা, গরম, বরফ জল দেবেন না।

৪। কেটে চিরে বিষ বের করার চেষ্টা করবেন না। মনে রাখবেন, সাপ যখন কামড়ায় তার বিষ, দাঁতের মাধ্যমে ইঞ্জেকশনের মতো শরীরের ভিতরে চলে যায়। বিষ পাম্প বলে এরকম অবৈজ্ঞানিক বস্তু প্রয়োগ করে বিষ বের করা যায় না। এগুলি সব অর্থহীন। উল্টে চন্দ্র – বোড়া সাপের কামড়ের পর ক্ষতস্থান চিরলে মারাত্মক রক্তপাত হতে পারে।

৫। রোগী নিজে যেন দৌড়ে বা সাইকেল চালিয়ে না আসে সেইদিকে খেয়াল রাখবেন।

সাপের কামড় থেকে বাঁচার উপায়​

বাড়ির চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখুন। কার্বলিক অ্যাসিড শরীরে লাগলে ক্ষতি হয় তাই ব্যবহার না করায় ভালো। চুনের সঙ্গে ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে ছড়িয়ে দিন। এর ঝাঁঝানো গন্ধে সাপ আসে না।

রাতে অবশ্যই বিছানা ঝেড়ে মশারি টাঙিয়ে শোবেন। দরজা – জানালার নিচে ফাঁকা জায়গা কাপড় গুঁজে ভরাট করে রাখুন।

অন্ধকারে হাঁটাচলা করবেন না। জুতো পরার আগে সেটা ঝেড়ে নিন। বাড়িতে কোন গর্ত থাকলে তা বুঝিয়ে রাখুন।
 
সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে আমরা সকলে জানতে আগ্রহী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সাপের কামড়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। বিশেষ করে ভারতে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, এদেশে ‌‌‌‌যত সাপে কামড়ানোর ঘটনা ঘটে তার মাত্র ২২ শতাংশ ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসে আর বাকি শতাংশ ওঝার কাছে যায়।

ভারতে রয়েছে প্রায় আড়াইশো প্রজাতির সাপ। তার মধ্যে ৫২ টি প্রজাতি বিষধর। এর মধ্যে ৪০ টির ও বেশি প্রজাতির সাপ সামুদ্রিক।

আর পশ্চিমবঙ্গে মাত্র ৬ টি বিষধর প্রজাতির সাপ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৪ টি সাপের কামড়েই বেশি মৃত্যু হয় l । এগুলি হল …..

১. গোখরোView attachment 192282

গোখরো হল ফণাযুক্ত সাপ।

স্পেক্টকেলভ কোবরা বা বাইনোসিলেট কোবরাও বলে।

ফণার পিছনে ‘ U ‘ অক্ষরের মতো একটি চিহ্ন থাকে। এই চিহ্নটি গরুর খুরের মতো দেখতে লাগে বলে এই গো – খুর থেকে গোখরা কথাটা এসেছে বলে মনে করা হয়।

এই প্রজাতির সাপগুলো আকারে বেশ বড়ই। এদের স্থানীয় নাম খরিস।

এক বাড় কামড়ালে ১৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত বিষ ঢালতে পারে। এদের বিষ শরীরের স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে।

২. কেউটেView attachment 192284

কেউটে হল ফণাধর সাপ। এদের ফণার পিছনে থাকে গোল বা পদ্মচিহ্ন। এদেরকে বলে মনোসিলেট কোবরা।

গোখরোর মত এদের বিষও নিউরোটক্সিক।

এদের স্থানীয় নাম আলকেউটে, কালকেউটে, শামুকভাঙা ইত্যাদি।

এরা ১৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত বিষ ঢালতে পারে।

৩. চন্দ্রবোড়াView attachment 192285

এটি বাংলার একমাত্র হিমোটক্সিক সাপ। অর্থাৎ এই সাপের বিষ রক্ত তঞ্চনের ব্যাঘাত ঘটায়। এই সাপ সবথেকে বেশি প্রাণ কাড়ছে বাংলায়।

সাপটি মোটা চেহারার। দেখতে ধূসর বা বাদামি রঙের আর গায়ে চাকা চাকা দাগ থাকে। ফণাহীন সাপ।

এই বর্গের মূলত দুধরনের সাপ খুবই বিষাক্ত – রাসেলস ভাইপার ও শস্কেলভ ভাইপার অর্থাৎ করাতের দাঁতের মতো গায়ে দাগ থাকে।

এই সাপ কামড়ালে রোগীর রক্ততঞ্চনে সমস্যা হয়। চিকিৎসায় দেরি হলে রোগীর কিডনি নষ্ট হতে থাকে।

৪. কালাচView attachment 192287

কালাচ একটি ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ। ফণাহীন মাঝারি চেহারার এই সাপটির গায়ের রঙ কালো, তার উপর সরু সরু সাদা চুড়ির মতো ব্যাণ্ড।

দিনের বেলা খোলা বিছানার গরমে থাকতে এই সাপ পছন্দ করে।

ঘুমের মধ্যে নাড়াচাড়া করলেই এই সাপ কামড়ে দেয়।

সবথেকে ভয়ের ব্যাপার হল এই সাপের কামড়ের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায় না এবং যাকে কামড়ায় তৎক্ষণাৎ বুঝতেও পারে না।

হঠাৎ পেটে ব্যাথা বা অন্য উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে যেতে হয়।

অন্যান্য বিষধর সাপ​

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই চার ধরনের সাপ বিপদ ঘটায়। আরও দুধরনের বিষধর সাপ অবশ্য পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে।

এই দুধরনের বিষধর সাপ হল শাঁখামুটিView attachment 192288 এবং শঙ্খচুড় বা কিং কোবরাView attachment 192289

তবে শঙ্খচুড় এখন প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। ডুয়ার্স এবং সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে হাতে গোনা দু-একটি রয়েছে। এই সাপ লোকালয়ে আসে না। সেজন্য এই সাপের কামড়ের ইতিহাস গত পাঁচ বছরে জানা যায় নি।

শাঁখামুটি খুব বিষধর সাপ। এই সাপ কামড়ালে বাঁচানো মুশকিল।‌ তবে এই সাপ নিরীহ প্রকৃতির, সাধারণত কাউকে কামড়ায় না।

কালাচ সাপের অন্য একটি ভ্যারাইটি রয়েছে। যাকে কৃষ্ণ কালাচ বলে। । এই সাপ মূলত উওরবঙ্গে দেখা যায়। দক্ষিণবঙ্গে দেখা যায় না।

উওরবঙ্গে চন্দ্রবোড়ার সংখ্যা কম, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে চন্দ্রবোড়ার সংখ্যা অনেক বেশি।

বিষহীন সাপ​

কিছু বিষহীন সাপ যেমন ঘরচিতি, কালনাগিনী, দাঁড়াশ, লাউডগা, লালবাতি বোড়া, অজগর, জলঢোঁড়া, মেটেলি, জলমেটেলি ইত্যাদি এদের কামড়ে মানুষের মৃত্যু হয় না।
সাপে কামড়ানোর লক্ষণ :

১। বিষধর সাপ কামড়ালে দুপাশে দুটি মাত্র বড় মাপের দাঁতের দাগ দেখা যায়।

২। দংশিত স্থান ফুলে উঠে, রক্ত ঝরতে থাকে এবং সেখানে প্রচণ্ড জ্বালা – যন্ত্রনা হয়।

৩। ক্রমশঃ ব্যথা বাড়তে থাকে এবং পরে অসাড়তার সৃষ্টি হয়।

৪। দুর্বলতা দেখা দেয়, মাথা ঘোরে, মাথা ঝিমঝিম করে।

৫। ক্রমশঃ জিভ, মুখমণ্ডল, হাত – পা সব অসাড় হয়ে যায়। হাত – পা ঠাণ্ডা হয়ে যায়।

৬। চামড়ায় কালশিড়া দাগ পরে এবং শরীর ক্রমশঃ নীল বর্ণ ধারণ করে।

৭। চোখের তারা বড় হয়ে যায়। অনেক সময় ছোট ও হয়ে যায়।

৮। শ্বাসকষ্ট হয়, বমিভাব হতে থাকে বা বমি হয়।

৯। শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তপাত হয়।

১০। রক্তচাপ খুব বেড়ে যায় অথবা খুব কমে যায়। হৃৎপিণ্ডের গতি বৃদ্ধি পায়।

১১। মূত্রাবরোধ ঘটে। রক্ত প্রস্রাবও হতে পারে।

১২। দু চোখের পাতা পড়ে আসে ( মূলত নিউরো – টক্সিক সাপের কামড়ের মূল লক্ষণ ) ।

১৩। কামড়ের স্থানে অসম্ভব জ্বালা – যন্ত্রনা ও রক্ত – ক্ষরণ ( মূলত চন্দ্র বোড়া সাপের কামড়ের মূল লক্ষণ ) ।

সাপে কামড়ানোর প্রাথমিক চিকিৎসা​

প্রথমত

সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা
– রোগীকে আশ্বস্ত করুন। কারণ রোগী খুবই আতঙ্কের মধ্যে থাকে। আতঙ্কও মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। রোগীকে বোঝান, সাপের কামড়ে আক্রান্ত বহু মানুষ চিকিৎসায় বেঁচে উঠেছেন, আপনিও নিশ্চিন্তে থাকুন।

দ্বিতীয়ত

সাপে কামড়ানোর প্রাথমিক চিকিৎসা
– যত কম নাড়াচাড়া হবে তত কম হারে বিষ সারা শরীরে ছড়াবে। স্কেল বা বাঁশের টুকরো সহ হাতে – পায়ে ( যে অংশে কামড়াবে ) কাপড় দিয়ে হালকা করে বেঁধে দিন। হাত বা পা ( কামড়ের নিকটতম স্থান ) যাতে তিনি ভাঁজ করতে না পারেন তাই এই ব্যবস্থা।

তৃতীয়ত

ফোন করে জেনে নিন আপনার নিকটতম যে হাসপাতালে A.V.S, নিওস্টিগমিন, অ্যট্রোপিন এবং অ্যড্রিনালিন ওষুধ গুলো আছে সেই হাস – পাতালে চলুন। মাথায় রাখবেন সাপের কামড়ের সম্পূর্ণ চিকিৎসা একটি ব্লক প্রাইমারি হেলথ সেণ্টারেও সম্ভব। সম্ভব হলে রোগীকে বাইকের মাঝে বসিয়ে রোগীর সাথে কথা বলতে বলতে চলুন। যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

চতুর্থ

হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসককে সাপের কামড়ে‌ র চিকিৎসা করতে বলুন। কথা বলতে গিয়ে রোগীর কথার মধ্যে কোনও অসঙ্গতি ( যেমন কথা জড়িয়ে আসা, যথাযথ ভাবে কতক্ষণ আগে শুরু হল চিকিৎসককে জানান।

সাপে কাটলে করণীয়​

মনে রাখুন – সাপে কামড়ানোর ১০০ মিনিটের মধ্যে ১০০ মিলিলিটার AVS শরীরে প্রবেশ করলে রোগীর বেঁচে যাবার সম্ভাবনা ১০০%। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে ওঝার কাছে না গিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান।

সাপে কামড়ালে কী করবেন না​

১। কোনও রকম শক্ত বাঁধন দেবেন না।

২। কামড়ের জায়গায় কোনও কেমিক্যাল লাগাবেন না।

৩। কামড়ের স্থানে ঠাণ্ডা, গরম, বরফ জল দেবেন না।

৪। কেটে চিরে বিষ বের করার চেষ্টা করবেন না। মনে রাখবেন, সাপ যখন কামড়ায় তার বিষ, দাঁতের মাধ্যমে ইঞ্জেকশনের মতো শরীরের ভিতরে চলে যায়। বিষ পাম্প বলে এরকম অবৈজ্ঞানিক বস্তু প্রয়োগ করে বিষ বের করা যায় না। এগুলি সব অর্থহীন। উল্টে চন্দ্র – বোড়া সাপের কামড়ের পর ক্ষতস্থান চিরলে মারাত্মক রক্তপাত হতে পারে।

৫। রোগী নিজে যেন দৌড়ে বা সাইকেল চালিয়ে না আসে সেইদিকে খেয়াল রাখবেন।

সাপের কামড় থেকে বাঁচার উপায়​

বাড়ির চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখুন। কার্বলিক অ্যাসিড শরীরে লাগলে ক্ষতি হয় তাই ব্যবহার না করায় ভালো। চুনের সঙ্গে ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে ছড়িয়ে দিন। এর ঝাঁঝানো গন্ধে সাপ আসে না।

রাতে অবশ্যই বিছানা ঝেড়ে মশারি টাঙিয়ে শোবেন। দরজা – জানালার নিচে ফাঁকা জায়গা কাপড় গুঁজে ভরাট করে রাখুন।

অন্ধকারে হাঁটাচলা করবেন না। জুতো পরার আগে সেটা ঝেড়ে নিন। বাড়িতে কোন গর্ত থাকলে তা বুঝিয়ে রাখুন।
ওরে দারুন দারুন অসম্ভব সুন্দর একটা রিপোর্ট সত্যি তোমায় মানতে হবে বস ।তুমি পারো এত লিখতে আমার সাপ এর সমন্ধে একটা আলাদাই ইন্টারেস্ট ছিল আজ এই রিপোর্ট টা পড়ে সত্যি খুব ভালো লাগলো এটা সত্যি সবার জানা দরকার আমার মনে হয় ।ধন্যবাদ অনেক তোমাকে।8bf3e936-7024-491a-9cb5-1e0d1dd47950_498x280.gif
 
ওরে দারুন দারুন অসম্ভব সুন্দর একটা রিপোর্ট সত্যি তোমায় মানতে হবে বস ।তুমি পারো এত লিখতে আমার সাপ এর সমন্ধে একটা আলাদাই ইন্টারেস্ট ছিল আজ এই রিপোর্ট টা পড়ে সত্যি খুব ভালো লাগলো এটা সত্যি সবার জানা দরকার আমার মনে হয় ।ধন্যবাদ অনেক তোমাকে।View attachment 192295
Its my pleasure. Bhalo legeche jene utshito holam. Ektu holeo jodi kono upokare ase seijanyoi ei post. Tomake dhanyabaad.
 
সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে আমরা সকলে জানতে আগ্রহী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সাপের কামড়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। বিশেষ করে ভারতে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, এদেশে ‌‌‌‌যত সাপে কামড়ানোর ঘটনা ঘটে তার মাত্র ২২ শতাংশ ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসে আর বাকি শতাংশ ওঝার কাছে যায়।

ভারতে রয়েছে প্রায় আড়াইশো প্রজাতির সাপ। তার মধ্যে ৫২ টি প্রজাতি বিষধর। এর মধ্যে ৪০ টির ও বেশি প্রজাতির সাপ সামুদ্রিক।

আর পশ্চিমবঙ্গে মাত্র ৬ টি বিষধর প্রজাতির সাপ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৪ টি সাপের কামড়েই বেশি মৃত্যু হয় l । এগুলি হল …..

১. গোখরোView attachment 192282

গোখরো হল ফণাযুক্ত সাপ।

স্পেক্টকেলভ কোবরা বা বাইনোসিলেট কোবরাও বলে।

ফণার পিছনে ‘ U ‘ অক্ষরের মতো একটি চিহ্ন থাকে। এই চিহ্নটি গরুর খুরের মতো দেখতে লাগে বলে এই গো – খুর থেকে গোখরা কথাটা এসেছে বলে মনে করা হয়।

এই প্রজাতির সাপগুলো আকারে বেশ বড়ই। এদের স্থানীয় নাম খরিস।

এক বাড় কামড়ালে ১৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত বিষ ঢালতে পারে। এদের বিষ শরীরের স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে।

২. কেউটেView attachment 192284

কেউটে হল ফণাধর সাপ। এদের ফণার পিছনে থাকে গোল বা পদ্মচিহ্ন। এদেরকে বলে মনোসিলেট কোবরা।

গোখরোর মত এদের বিষও নিউরোটক্সিক।

এদের স্থানীয় নাম আলকেউটে, কালকেউটে, শামুকভাঙা ইত্যাদি।

এরা ১৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত বিষ ঢালতে পারে।

৩. চন্দ্রবোড়াView attachment 192285

এটি বাংলার একমাত্র হিমোটক্সিক সাপ। অর্থাৎ এই সাপের বিষ রক্ত তঞ্চনের ব্যাঘাত ঘটায়। এই সাপ সবথেকে বেশি প্রাণ কাড়ছে বাংলায়।

সাপটি মোটা চেহারার। দেখতে ধূসর বা বাদামি রঙের আর গায়ে চাকা চাকা দাগ থাকে। ফণাহীন সাপ।

এই বর্গের মূলত দুধরনের সাপ খুবই বিষাক্ত – রাসেলস ভাইপার ও শস্কেলভ ভাইপার অর্থাৎ করাতের দাঁতের মতো গায়ে দাগ থাকে।

এই সাপ কামড়ালে রোগীর রক্ততঞ্চনে সমস্যা হয়। চিকিৎসায় দেরি হলে রোগীর কিডনি নষ্ট হতে থাকে।

৪. কালাচView attachment 192287

কালাচ একটি ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ। ফণাহীন মাঝারি চেহারার এই সাপটির গায়ের রঙ কালো, তার উপর সরু সরু সাদা চুড়ির মতো ব্যাণ্ড।

দিনের বেলা খোলা বিছানার গরমে থাকতে এই সাপ পছন্দ করে।

ঘুমের মধ্যে নাড়াচাড়া করলেই এই সাপ কামড়ে দেয়।

সবথেকে ভয়ের ব্যাপার হল এই সাপের কামড়ের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায় না এবং যাকে কামড়ায় তৎক্ষণাৎ বুঝতেও পারে না।

হঠাৎ পেটে ব্যাথা বা অন্য উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে যেতে হয়।

অন্যান্য বিষধর সাপ​

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই চার ধরনের সাপ বিপদ ঘটায়। আরও দুধরনের বিষধর সাপ অবশ্য পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে।

এই দুধরনের বিষধর সাপ হল শাঁখামুটিView attachment 192288 এবং শঙ্খচুড় বা কিং কোবরাView attachment 192289

তবে শঙ্খচুড় এখন প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। ডুয়ার্স এবং সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে হাতে গোনা দু-একটি রয়েছে। এই সাপ লোকালয়ে আসে না। সেজন্য এই সাপের কামড়ের ইতিহাস গত পাঁচ বছরে জানা যায় নি।

শাঁখামুটি খুব বিষধর সাপ। এই সাপ কামড়ালে বাঁচানো মুশকিল।‌ তবে এই সাপ নিরীহ প্রকৃতির, সাধারণত কাউকে কামড়ায় না।

কালাচ সাপের অন্য একটি ভ্যারাইটি রয়েছে। যাকে কৃষ্ণ কালাচ বলে। । এই সাপ মূলত উওরবঙ্গে দেখা যায়। দক্ষিণবঙ্গে দেখা যায় না।

উওরবঙ্গে চন্দ্রবোড়ার সংখ্যা কম, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে চন্দ্রবোড়ার সংখ্যা অনেক বেশি।

বিষহীন সাপ​

কিছু বিষহীন সাপ যেমন ঘরচিতি, কালনাগিনী, দাঁড়াশ, লাউডগা, লালবাতি বোড়া, অজগর, জলঢোঁড়া, মেটেলি, জলমেটেলি ইত্যাদি এদের কামড়ে মানুষের মৃত্যু হয় না।
সাপে কামড়ানোর লক্ষণ :

১। বিষধর সাপ কামড়ালে দুপাশে দুটি মাত্র বড় মাপের দাঁতের দাগ দেখা যায়।

২। দংশিত স্থান ফুলে উঠে, রক্ত ঝরতে থাকে এবং সেখানে প্রচণ্ড জ্বালা – যন্ত্রনা হয়।

৩। ক্রমশঃ ব্যথা বাড়তে থাকে এবং পরে অসাড়তার সৃষ্টি হয়।

৪। দুর্বলতা দেখা দেয়, মাথা ঘোরে, মাথা ঝিমঝিম করে।

৫। ক্রমশঃ জিভ, মুখমণ্ডল, হাত – পা সব অসাড় হয়ে যায়। হাত – পা ঠাণ্ডা হয়ে যায়।

৬। চামড়ায় কালশিড়া দাগ পরে এবং শরীর ক্রমশঃ নীল বর্ণ ধারণ করে।

৭। চোখের তারা বড় হয়ে যায়। অনেক সময় ছোট ও হয়ে যায়।

৮। শ্বাসকষ্ট হয়, বমিভাব হতে থাকে বা বমি হয়।

৯। শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তপাত হয়।

১০। রক্তচাপ খুব বেড়ে যায় অথবা খুব কমে যায়। হৃৎপিণ্ডের গতি বৃদ্ধি পায়।

১১। মূত্রাবরোধ ঘটে। রক্ত প্রস্রাবও হতে পারে।

১২। দু চোখের পাতা পড়ে আসে ( মূলত নিউরো – টক্সিক সাপের কামড়ের মূল লক্ষণ ) ।

১৩। কামড়ের স্থানে অসম্ভব জ্বালা – যন্ত্রনা ও রক্ত – ক্ষরণ ( মূলত চন্দ্র বোড়া সাপের কামড়ের মূল লক্ষণ ) ।

সাপে কামড়ানোর প্রাথমিক চিকিৎসা​

প্রথমত

সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা
– রোগীকে আশ্বস্ত করুন। কারণ রোগী খুবই আতঙ্কের মধ্যে থাকে। আতঙ্কও মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। রোগীকে বোঝান, সাপের কামড়ে আক্রান্ত বহু মানুষ চিকিৎসায় বেঁচে উঠেছেন, আপনিও নিশ্চিন্তে থাকুন।

দ্বিতীয়ত

সাপে কামড়ানোর প্রাথমিক চিকিৎসা
– যত কম নাড়াচাড়া হবে তত কম হারে বিষ সারা শরীরে ছড়াবে। স্কেল বা বাঁশের টুকরো সহ হাতে – পায়ে ( যে অংশে কামড়াবে ) কাপড় দিয়ে হালকা করে বেঁধে দিন। হাত বা পা ( কামড়ের নিকটতম স্থান ) যাতে তিনি ভাঁজ করতে না পারেন তাই এই ব্যবস্থা।

তৃতীয়ত

ফোন করে জেনে নিন আপনার নিকটতম যে হাসপাতালে A.V.S, নিওস্টিগমিন, অ্যট্রোপিন এবং অ্যড্রিনালিন ওষুধ গুলো আছে সেই হাস – পাতালে চলুন। মাথায় রাখবেন সাপের কামড়ের সম্পূর্ণ চিকিৎসা একটি ব্লক প্রাইমারি হেলথ সেণ্টারেও সম্ভব। সম্ভব হলে রোগীকে বাইকের মাঝে বসিয়ে রোগীর সাথে কথা বলতে বলতে চলুন। যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

চতুর্থ

হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসককে সাপের কামড়ে‌ র চিকিৎসা করতে বলুন। কথা বলতে গিয়ে রোগীর কথার মধ্যে কোনও অসঙ্গতি ( যেমন কথা জড়িয়ে আসা, যথাযথ ভাবে কতক্ষণ আগে শুরু হল চিকিৎসককে জানান।

সাপে কাটলে করণীয়​

মনে রাখুন – সাপে কামড়ানোর ১০০ মিনিটের মধ্যে ১০০ মিলিলিটার AVS শরীরে প্রবেশ করলে রোগীর বেঁচে যাবার সম্ভাবনা ১০০%। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে ওঝার কাছে না গিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান।

সাপে কামড়ালে কী করবেন না​

১। কোনও রকম শক্ত বাঁধন দেবেন না।

২। কামড়ের জায়গায় কোনও কেমিক্যাল লাগাবেন না।

৩। কামড়ের স্থানে ঠাণ্ডা, গরম, বরফ জল দেবেন না।

৪। কেটে চিরে বিষ বের করার চেষ্টা করবেন না। মনে রাখবেন, সাপ যখন কামড়ায় তার বিষ, দাঁতের মাধ্যমে ইঞ্জেকশনের মতো শরীরের ভিতরে চলে যায়। বিষ পাম্প বলে এরকম অবৈজ্ঞানিক বস্তু প্রয়োগ করে বিষ বের করা যায় না। এগুলি সব অর্থহীন। উল্টে চন্দ্র – বোড়া সাপের কামড়ের পর ক্ষতস্থান চিরলে মারাত্মক রক্তপাত হতে পারে।

৫। রোগী নিজে যেন দৌড়ে বা সাইকেল চালিয়ে না আসে সেইদিকে খেয়াল রাখবেন।

সাপের কামড় থেকে বাঁচার উপায়​

বাড়ির চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখুন। কার্বলিক অ্যাসিড শরীরে লাগলে ক্ষতি হয় তাই ব্যবহার না করায় ভালো। চুনের সঙ্গে ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে ছড়িয়ে দিন। এর ঝাঁঝানো গন্ধে সাপ আসে না।

রাতে অবশ্যই বিছানা ঝেড়ে মশারি টাঙিয়ে শোবেন। দরজা – জানালার নিচে ফাঁকা জায়গা কাপড় গুঁজে ভরাট করে রাখুন।

অন্ধকারে হাঁটাচলা করবেন না। জুতো পরার আগে সেটা ঝেড়ে নিন। বাড়িতে কোন গর্ত থাকলে তা বুঝিয়ে রাখুন।
Satty bro...ei akjon maharani ache jeh tomar lekha ei important information gulo khutiye pore...pagli tar interest ache... :giggle:.....jak Amar khub valo laglo tomar information ta... fatafati....
 
সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে আমরা সকলে জানতে আগ্রহী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সাপের কামড়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। বিশেষ করে ভারতে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, এদেশে ‌‌‌‌যত সাপে কামড়ানোর ঘটনা ঘটে তার মাত্র ২২ শতাংশ ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসে আর বাকি শতাংশ ওঝার কাছে যায়।

ভারতে রয়েছে প্রায় আড়াইশো প্রজাতির সাপ। তার মধ্যে ৫২ টি প্রজাতি বিষধর। এর মধ্যে ৪০ টির ও বেশি প্রজাতির সাপ সামুদ্রিক।

আর পশ্চিমবঙ্গে মাত্র ৬ টি বিষধর প্রজাতির সাপ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৪ টি সাপের কামড়েই বেশি মৃত্যু হয় l । এগুলি হল …..

১. গোখরোView attachment 192282

গোখরো হল ফণাযুক্ত সাপ।

স্পেক্টকেলভ কোবরা বা বাইনোসিলেট কোবরাও বলে।

ফণার পিছনে ‘ U ‘ অক্ষরের মতো একটি চিহ্ন থাকে। এই চিহ্নটি গরুর খুরের মতো দেখতে লাগে বলে এই গো – খুর থেকে গোখরা কথাটা এসেছে বলে মনে করা হয়।

এই প্রজাতির সাপগুলো আকারে বেশ বড়ই। এদের স্থানীয় নাম খরিস।

এক বাড় কামড়ালে ১৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত বিষ ঢালতে পারে। এদের বিষ শরীরের স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে।

২. কেউটেView attachment 192284

কেউটে হল ফণাধর সাপ। এদের ফণার পিছনে থাকে গোল বা পদ্মচিহ্ন। এদেরকে বলে মনোসিলেট কোবরা।

গোখরোর মত এদের বিষও নিউরোটক্সিক।

এদের স্থানীয় নাম আলকেউটে, কালকেউটে, শামুকভাঙা ইত্যাদি।

এরা ১৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত বিষ ঢালতে পারে।

৩. চন্দ্রবোড়াView attachment 192285

এটি বাংলার একমাত্র হিমোটক্সিক সাপ। অর্থাৎ এই সাপের বিষ রক্ত তঞ্চনের ব্যাঘাত ঘটায়। এই সাপ সবথেকে বেশি প্রাণ কাড়ছে বাংলায়।

সাপটি মোটা চেহারার। দেখতে ধূসর বা বাদামি রঙের আর গায়ে চাকা চাকা দাগ থাকে। ফণাহীন সাপ।

এই বর্গের মূলত দুধরনের সাপ খুবই বিষাক্ত – রাসেলস ভাইপার ও শস্কেলভ ভাইপার অর্থাৎ করাতের দাঁতের মতো গায়ে দাগ থাকে।

এই সাপ কামড়ালে রোগীর রক্ততঞ্চনে সমস্যা হয়। চিকিৎসায় দেরি হলে রোগীর কিডনি নষ্ট হতে থাকে।

৪. কালাচView attachment 192287

কালাচ একটি ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ। ফণাহীন মাঝারি চেহারার এই সাপটির গায়ের রঙ কালো, তার উপর সরু সরু সাদা চুড়ির মতো ব্যাণ্ড।

দিনের বেলা খোলা বিছানার গরমে থাকতে এই সাপ পছন্দ করে।

ঘুমের মধ্যে নাড়াচাড়া করলেই এই সাপ কামড়ে দেয়।

সবথেকে ভয়ের ব্যাপার হল এই সাপের কামড়ের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায় না এবং যাকে কামড়ায় তৎক্ষণাৎ বুঝতেও পারে না।

হঠাৎ পেটে ব্যাথা বা অন্য উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে যেতে হয়।

অন্যান্য বিষধর সাপ​

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই চার ধরনের সাপ বিপদ ঘটায়। আরও দুধরনের বিষধর সাপ অবশ্য পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে।

এই দুধরনের বিষধর সাপ হল শাঁখামুটিView attachment 192288 এবং শঙ্খচুড় বা কিং কোবরাView attachment 192289

তবে শঙ্খচুড় এখন প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। ডুয়ার্স এবং সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে হাতে গোনা দু-একটি রয়েছে। এই সাপ লোকালয়ে আসে না। সেজন্য এই সাপের কামড়ের ইতিহাস গত পাঁচ বছরে জানা যায় নি।

শাঁখামুটি খুব বিষধর সাপ। এই সাপ কামড়ালে বাঁচানো মুশকিল।‌ তবে এই সাপ নিরীহ প্রকৃতির, সাধারণত কাউকে কামড়ায় না।

কালাচ সাপের অন্য একটি ভ্যারাইটি রয়েছে। যাকে কৃষ্ণ কালাচ বলে। । এই সাপ মূলত উওরবঙ্গে দেখা যায়। দক্ষিণবঙ্গে দেখা যায় না।

উওরবঙ্গে চন্দ্রবোড়ার সংখ্যা কম, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে চন্দ্রবোড়ার সংখ্যা অনেক বেশি।

বিষহীন সাপ​

কিছু বিষহীন সাপ যেমন ঘরচিতি, কালনাগিনী, দাঁড়াশ, লাউডগা, লালবাতি বোড়া, অজগর, জলঢোঁড়া, মেটেলি, জলমেটেলি ইত্যাদি এদের কামড়ে মানুষের মৃত্যু হয় না।
সাপে কামড়ানোর লক্ষণ :

১। বিষধর সাপ কামড়ালে দুপাশে দুটি মাত্র বড় মাপের দাঁতের দাগ দেখা যায়।

২। দংশিত স্থান ফুলে উঠে, রক্ত ঝরতে থাকে এবং সেখানে প্রচণ্ড জ্বালা – যন্ত্রনা হয়।

৩। ক্রমশঃ ব্যথা বাড়তে থাকে এবং পরে অসাড়তার সৃষ্টি হয়।

৪। দুর্বলতা দেখা দেয়, মাথা ঘোরে, মাথা ঝিমঝিম করে।

৫। ক্রমশঃ জিভ, মুখমণ্ডল, হাত – পা সব অসাড় হয়ে যায়। হাত – পা ঠাণ্ডা হয়ে যায়।

৬। চামড়ায় কালশিড়া দাগ পরে এবং শরীর ক্রমশঃ নীল বর্ণ ধারণ করে।

৭। চোখের তারা বড় হয়ে যায়। অনেক সময় ছোট ও হয়ে যায়।

৮। শ্বাসকষ্ট হয়, বমিভাব হতে থাকে বা বমি হয়।

৯। শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তপাত হয়।

১০। রক্তচাপ খুব বেড়ে যায় অথবা খুব কমে যায়। হৃৎপিণ্ডের গতি বৃদ্ধি পায়।

১১। মূত্রাবরোধ ঘটে। রক্ত প্রস্রাবও হতে পারে।

১২। দু চোখের পাতা পড়ে আসে ( মূলত নিউরো – টক্সিক সাপের কামড়ের মূল লক্ষণ ) ।

১৩। কামড়ের স্থানে অসম্ভব জ্বালা – যন্ত্রনা ও রক্ত – ক্ষরণ ( মূলত চন্দ্র বোড়া সাপের কামড়ের মূল লক্ষণ ) ।

সাপে কামড়ানোর প্রাথমিক চিকিৎসা​

প্রথমত

সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা
– রোগীকে আশ্বস্ত করুন। কারণ রোগী খুবই আতঙ্কের মধ্যে থাকে। আতঙ্কও মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। রোগীকে বোঝান, সাপের কামড়ে আক্রান্ত বহু মানুষ চিকিৎসায় বেঁচে উঠেছেন, আপনিও নিশ্চিন্তে থাকুন।

দ্বিতীয়ত

সাপে কামড়ানোর প্রাথমিক চিকিৎসা
– যত কম নাড়াচাড়া হবে তত কম হারে বিষ সারা শরীরে ছড়াবে। স্কেল বা বাঁশের টুকরো সহ হাতে – পায়ে ( যে অংশে কামড়াবে ) কাপড় দিয়ে হালকা করে বেঁধে দিন। হাত বা পা ( কামড়ের নিকটতম স্থান ) যাতে তিনি ভাঁজ করতে না পারেন তাই এই ব্যবস্থা।

তৃতীয়ত

ফোন করে জেনে নিন আপনার নিকটতম যে হাসপাতালে A.V.S, নিওস্টিগমিন, অ্যট্রোপিন এবং অ্যড্রিনালিন ওষুধ গুলো আছে সেই হাস – পাতালে চলুন। মাথায় রাখবেন সাপের কামড়ের সম্পূর্ণ চিকিৎসা একটি ব্লক প্রাইমারি হেলথ সেণ্টারেও সম্ভব। সম্ভব হলে রোগীকে বাইকের মাঝে বসিয়ে রোগীর সাথে কথা বলতে বলতে চলুন। যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

চতুর্থ

হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসককে সাপের কামড়ে‌ র চিকিৎসা করতে বলুন। কথা বলতে গিয়ে রোগীর কথার মধ্যে কোনও অসঙ্গতি ( যেমন কথা জড়িয়ে আসা, যথাযথ ভাবে কতক্ষণ আগে শুরু হল চিকিৎসককে জানান।

সাপে কাটলে করণীয়​

মনে রাখুন – সাপে কামড়ানোর ১০০ মিনিটের মধ্যে ১০০ মিলিলিটার AVS শরীরে প্রবেশ করলে রোগীর বেঁচে যাবার সম্ভাবনা ১০০%। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে ওঝার কাছে না গিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান।

সাপে কামড়ালে কী করবেন না​

১। কোনও রকম শক্ত বাঁধন দেবেন না।

২। কামড়ের জায়গায় কোনও কেমিক্যাল লাগাবেন না।

৩। কামড়ের স্থানে ঠাণ্ডা, গরম, বরফ জল দেবেন না।

৪। কেটে চিরে বিষ বের করার চেষ্টা করবেন না। মনে রাখবেন, সাপ যখন কামড়ায় তার বিষ, দাঁতের মাধ্যমে ইঞ্জেকশনের মতো শরীরের ভিতরে চলে যায়। বিষ পাম্প বলে এরকম অবৈজ্ঞানিক বস্তু প্রয়োগ করে বিষ বের করা যায় না। এগুলি সব অর্থহীন। উল্টে চন্দ্র – বোড়া সাপের কামড়ের পর ক্ষতস্থান চিরলে মারাত্মক রক্তপাত হতে পারে।

৫। রোগী নিজে যেন দৌড়ে বা সাইকেল চালিয়ে না আসে সেইদিকে খেয়াল রাখবেন।

সাপের কামড় থেকে বাঁচার উপায়​

বাড়ির চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখুন। কার্বলিক অ্যাসিড শরীরে লাগলে ক্ষতি হয় তাই ব্যবহার না করায় ভালো। চুনের সঙ্গে ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে ছড়িয়ে দিন। এর ঝাঁঝানো গন্ধে সাপ আসে না।

রাতে অবশ্যই বিছানা ঝেড়ে মশারি টাঙিয়ে শোবেন। দরজা – জানালার নিচে ফাঁকা জায়গা কাপড় গুঁজে ভরাট করে রাখুন।

অন্ধকারে হাঁটাচলা করবেন না। জুতো পরার আগে সেটা ঝেড়ে নিন। বাড়িতে কোন গর্ত থাকলে তা বুঝিয়ে রাখুন।
Informative. Thank u. :angel:
 
সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে আমরা সকলে জানতে আগ্রহী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সাপের কামড়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। বিশেষ করে ভারতে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, এদেশে ‌‌‌‌যত সাপে কামড়ানোর ঘটনা ঘটে তার মাত্র ২২ শতাংশ ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসে আর বাকি শতাংশ ওঝার কাছে যায়।

ভারতে রয়েছে প্রায় আড়াইশো প্রজাতির সাপ। তার মধ্যে ৫২ টি প্রজাতি বিষধর। এর মধ্যে ৪০ টির ও বেশি প্রজাতির সাপ সামুদ্রিক।

আর পশ্চিমবঙ্গে মাত্র ৬ টি বিষধর প্রজাতির সাপ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৪ টি সাপের কামড়েই বেশি মৃত্যু হয় l । এগুলি হল …..

১. গোখরোView attachment 192282

গোখরো হল ফণাযুক্ত সাপ।

স্পেক্টকেলভ কোবরা বা বাইনোসিলেট কোবরাও বলে।

ফণার পিছনে ‘ U ‘ অক্ষরের মতো একটি চিহ্ন থাকে। এই চিহ্নটি গরুর খুরের মতো দেখতে লাগে বলে এই গো – খুর থেকে গোখরা কথাটা এসেছে বলে মনে করা হয়।

এই প্রজাতির সাপগুলো আকারে বেশ বড়ই। এদের স্থানীয় নাম খরিস।

এক বাড় কামড়ালে ১৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত বিষ ঢালতে পারে। এদের বিষ শরীরের স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে।

২. কেউটেView attachment 192284

কেউটে হল ফণাধর সাপ। এদের ফণার পিছনে থাকে গোল বা পদ্মচিহ্ন। এদেরকে বলে মনোসিলেট কোবরা।

গোখরোর মত এদের বিষও নিউরোটক্সিক।

এদের স্থানীয় নাম আলকেউটে, কালকেউটে, শামুকভাঙা ইত্যাদি।

এরা ১৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত বিষ ঢালতে পারে।

৩. চন্দ্রবোড়াView attachment 192285

এটি বাংলার একমাত্র হিমোটক্সিক সাপ। অর্থাৎ এই সাপের বিষ রক্ত তঞ্চনের ব্যাঘাত ঘটায়। এই সাপ সবথেকে বেশি প্রাণ কাড়ছে বাংলায়।

সাপটি মোটা চেহারার। দেখতে ধূসর বা বাদামি রঙের আর গায়ে চাকা চাকা দাগ থাকে। ফণাহীন সাপ।

এই বর্গের মূলত দুধরনের সাপ খুবই বিষাক্ত – রাসেলস ভাইপার ও শস্কেলভ ভাইপার অর্থাৎ করাতের দাঁতের মতো গায়ে দাগ থাকে।

এই সাপ কামড়ালে রোগীর রক্ততঞ্চনে সমস্যা হয়। চিকিৎসায় দেরি হলে রোগীর কিডনি নষ্ট হতে থাকে।

৪. কালাচView attachment 192287

কালাচ একটি ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ। ফণাহীন মাঝারি চেহারার এই সাপটির গায়ের রঙ কালো, তার উপর সরু সরু সাদা চুড়ির মতো ব্যাণ্ড।

দিনের বেলা খোলা বিছানার গরমে থাকতে এই সাপ পছন্দ করে।

ঘুমের মধ্যে নাড়াচাড়া করলেই এই সাপ কামড়ে দেয়।

সবথেকে ভয়ের ব্যাপার হল এই সাপের কামড়ের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায় না এবং যাকে কামড়ায় তৎক্ষণাৎ বুঝতেও পারে না।

হঠাৎ পেটে ব্যাথা বা অন্য উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে যেতে হয়।

অন্যান্য বিষধর সাপ​

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই চার ধরনের সাপ বিপদ ঘটায়। আরও দুধরনের বিষধর সাপ অবশ্য পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে।

এই দুধরনের বিষধর সাপ হল শাঁখামুটিView attachment 192288 এবং শঙ্খচুড় বা কিং কোবরাView attachment 192289

তবে শঙ্খচুড় এখন প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। ডুয়ার্স এবং সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে হাতে গোনা দু-একটি রয়েছে। এই সাপ লোকালয়ে আসে না। সেজন্য এই সাপের কামড়ের ইতিহাস গত পাঁচ বছরে জানা যায় নি।

শাঁখামুটি খুব বিষধর সাপ। এই সাপ কামড়ালে বাঁচানো মুশকিল।‌ তবে এই সাপ নিরীহ প্রকৃতির, সাধারণত কাউকে কামড়ায় না।

কালাচ সাপের অন্য একটি ভ্যারাইটি রয়েছে। যাকে কৃষ্ণ কালাচ বলে। । এই সাপ মূলত উওরবঙ্গে দেখা যায়। দক্ষিণবঙ্গে দেখা যায় না।

উওরবঙ্গে চন্দ্রবোড়ার সংখ্যা কম, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে চন্দ্রবোড়ার সংখ্যা অনেক বেশি।

বিষহীন সাপ​

কিছু বিষহীন সাপ যেমন ঘরচিতি, কালনাগিনী, দাঁড়াশ, লাউডগা, লালবাতি বোড়া, অজগর, জলঢোঁড়া, মেটেলি, জলমেটেলি ইত্যাদি এদের কামড়ে মানুষের মৃত্যু হয় না।
সাপে কামড়ানোর লক্ষণ :

১। বিষধর সাপ কামড়ালে দুপাশে দুটি মাত্র বড় মাপের দাঁতের দাগ দেখা যায়।

২। দংশিত স্থান ফুলে উঠে, রক্ত ঝরতে থাকে এবং সেখানে প্রচণ্ড জ্বালা – যন্ত্রনা হয়।

৩। ক্রমশঃ ব্যথা বাড়তে থাকে এবং পরে অসাড়তার সৃষ্টি হয়।

৪। দুর্বলতা দেখা দেয়, মাথা ঘোরে, মাথা ঝিমঝিম করে।

৫। ক্রমশঃ জিভ, মুখমণ্ডল, হাত – পা সব অসাড় হয়ে যায়। হাত – পা ঠাণ্ডা হয়ে যায়।

৬। চামড়ায় কালশিড়া দাগ পরে এবং শরীর ক্রমশঃ নীল বর্ণ ধারণ করে।

৭। চোখের তারা বড় হয়ে যায়। অনেক সময় ছোট ও হয়ে যায়।

৮। শ্বাসকষ্ট হয়, বমিভাব হতে থাকে বা বমি হয়।

৯। শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তপাত হয়।

১০। রক্তচাপ খুব বেড়ে যায় অথবা খুব কমে যায়। হৃৎপিণ্ডের গতি বৃদ্ধি পায়।

১১। মূত্রাবরোধ ঘটে। রক্ত প্রস্রাবও হতে পারে।

১২। দু চোখের পাতা পড়ে আসে ( মূলত নিউরো – টক্সিক সাপের কামড়ের মূল লক্ষণ ) ।

১৩। কামড়ের স্থানে অসম্ভব জ্বালা – যন্ত্রনা ও রক্ত – ক্ষরণ ( মূলত চন্দ্র বোড়া সাপের কামড়ের মূল লক্ষণ ) ।

সাপে কামড়ানোর প্রাথমিক চিকিৎসা​

প্রথমত

সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা
– রোগীকে আশ্বস্ত করুন। কারণ রোগী খুবই আতঙ্কের মধ্যে থাকে। আতঙ্কও মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। রোগীকে বোঝান, সাপের কামড়ে আক্রান্ত বহু মানুষ চিকিৎসায় বেঁচে উঠেছেন, আপনিও নিশ্চিন্তে থাকুন।

দ্বিতীয়ত

সাপে কামড়ানোর প্রাথমিক চিকিৎসা
– যত কম নাড়াচাড়া হবে তত কম হারে বিষ সারা শরীরে ছড়াবে। স্কেল বা বাঁশের টুকরো সহ হাতে – পায়ে ( যে অংশে কামড়াবে ) কাপড় দিয়ে হালকা করে বেঁধে দিন। হাত বা পা ( কামড়ের নিকটতম স্থান ) যাতে তিনি ভাঁজ করতে না পারেন তাই এই ব্যবস্থা।

তৃতীয়ত

ফোন করে জেনে নিন আপনার নিকটতম যে হাসপাতালে A.V.S, নিওস্টিগমিন, অ্যট্রোপিন এবং অ্যড্রিনালিন ওষুধ গুলো আছে সেই হাস – পাতালে চলুন। মাথায় রাখবেন সাপের কামড়ের সম্পূর্ণ চিকিৎসা একটি ব্লক প্রাইমারি হেলথ সেণ্টারেও সম্ভব। সম্ভব হলে রোগীকে বাইকের মাঝে বসিয়ে রোগীর সাথে কথা বলতে বলতে চলুন। যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

চতুর্থ

হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসককে সাপের কামড়ে‌ র চিকিৎসা করতে বলুন। কথা বলতে গিয়ে রোগীর কথার মধ্যে কোনও অসঙ্গতি ( যেমন কথা জড়িয়ে আসা, যথাযথ ভাবে কতক্ষণ আগে শুরু হল চিকিৎসককে জানান।

সাপে কাটলে করণীয়​

মনে রাখুন – সাপে কামড়ানোর ১০০ মিনিটের মধ্যে ১০০ মিলিলিটার AVS শরীরে প্রবেশ করলে রোগীর বেঁচে যাবার সম্ভাবনা ১০০%। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে ওঝার কাছে না গিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান।

সাপে কামড়ালে কী করবেন না​

১। কোনও রকম শক্ত বাঁধন দেবেন না।

২। কামড়ের জায়গায় কোনও কেমিক্যাল লাগাবেন না।

৩। কামড়ের স্থানে ঠাণ্ডা, গরম, বরফ জল দেবেন না।

৪। কেটে চিরে বিষ বের করার চেষ্টা করবেন না। মনে রাখবেন, সাপ যখন কামড়ায় তার বিষ, দাঁতের মাধ্যমে ইঞ্জেকশনের মতো শরীরের ভিতরে চলে যায়। বিষ পাম্প বলে এরকম অবৈজ্ঞানিক বস্তু প্রয়োগ করে বিষ বের করা যায় না। এগুলি সব অর্থহীন। উল্টে চন্দ্র – বোড়া সাপের কামড়ের পর ক্ষতস্থান চিরলে মারাত্মক রক্তপাত হতে পারে।

৫। রোগী নিজে যেন দৌড়ে বা সাইকেল চালিয়ে না আসে সেইদিকে খেয়াল রাখবেন।

সাপের কামড় থেকে বাঁচার উপায়​

বাড়ির চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখুন। কার্বলিক অ্যাসিড শরীরে লাগলে ক্ষতি হয় তাই ব্যবহার না করায় ভালো। চুনের সঙ্গে ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে ছড়িয়ে দিন। এর ঝাঁঝানো গন্ধে সাপ আসে না।

রাতে অবশ্যই বিছানা ঝেড়ে মশারি টাঙিয়ে শোবেন। দরজা – জানালার নিচে ফাঁকা জায়গা কাপড় গুঁজে ভরাট করে রাখুন।

অন্ধকারে হাঁটাচলা করবেন না। জুতো পরার আগে সেটা ঝেড়ে নিন। বাড়িতে কোন গর্ত থাকলে তা বুঝিয়ে রাখুন।
Abar valo akta post pelam tomar kache onekr kaje lagbe jene rakha dorkar sob kichu jinis sotty broo onek sundor post thank you jan Kari debar jonno boss
 
Top