• We kindly request chatzozo forum members to follow forum rules to avoid getting a temporary suspension. Do not use non-English languages in the International Sex Chat Discussion section. This section is mainly created for everyone who uses English as their communication language.

সত্যজিৎ রয় × শেখ মুজিব।

Aranyaak

Wellknown Ace
FB_IMG_1684222223711.jpg

"আমি ছেলেবেলা থেকে শুনে আসছি যে, পূর্ববঙ্গে (কিশোরগঞ্জের মশুয়া) নাকি আমার দেশ। যখন আমার পাঁচ কি ছয় বছর বয়স, তখন আমি একবার ঢাকা শহরে এসেছিলাম। দু'তিনদিন মাত্র ছিলাম। আমার মামাবাড়ি ছিল ওয়ারিতে, রঙ্কেন (র‍্যাংকিন) স্ট্রিটে। সে বাড়ি এখনও আছে কিনা জানিনা। সে রাস্তা এখনও আছে কিনা জানি না। বাড়ির কথা কিছু মনে নেই। মনে আছে শুধু প্রচণ্ড বাঁদরের উপদ্রব, সে বাঁদরও এখনও আছে কিনা তাও আমি জানি না। তারপর মনে আছে, পদ্মায় স্টিমারে আসছি, ভোরবেলা ঘুম ভেঙে গিয়েছে, মা আমায় বাইরে ডেকে এনে দেখাচ্ছেন পদ্মায় সূর্যোদয় হচ্ছে। আর দেখাচ্ছেন, পদ্মায় যেখানে শীতলক্ষা এসে মিশেছে সেখানে এক নদীর জলের সঙ্গে অন্য নদীর জলের কত তফাৎ। সেই থেকে বারবার মনে হয়েছে, একবার নিজের দেশটা গিয়ে দেখে আসতে পারলে ভাল হত। কিন্তু সেই আসাটা, বিশেষত দেশবিভাগের পর, ক্রমেই দুরাশায় পরিণত হতে চলছিল।হঠাৎ কিছুদিন আগে ইতিহাসের চাকা ঘুরে গেল। আমার কাছে আমার দেশের দরজা খুলে গেল। এবং আজ আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে, ঢাকা শহরে এসে, আমার স্বপ্ন অন্তত কিছুটা অংশে সফল হল। এবার আমি অনেক জরুরি কাজ ফেলে চলে এসেছি। এবার আর বেশিদিন থাকা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু আমার ইচ্ছে আছে, আমার আশা আছে, অদূর ভবিষ্যতে আমি আবার এদেশে ফিরে আসব, এই দেশটাকে ভাল করে দেখব। এদেশের মানুষের সঙ্গে এমন ভাবে জনসভায় নয়, সামনাসামনি মুখোমুখি বসে তাঁদের সঙ্গে পরিচয় করব। গত বিশ বছরে অনেক জায়গায় অনেক দেশে অনেকবার নানা ভাবে সম্মানিত হওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। কিন্তু আমি জোর গলায় আজকে এখানে দাঁড়িয়ে এই শহিদ দিবসের পূণ্যতিথিতে আমি বলতে পারি, আজকে যে সম্মান নিজ দেশে পেলাম সেই সম্মানের কাছে আগের সমস্ত সম্মান হার মেনে যায়। এর চেয়ে বড় সম্মান আমি কখনও পাইনি। আর আমার মনে হয় না আর কখনও পাব। জয় বাংলা।"

১৯৭২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারী ঢাকার পল্টন ময়দানে ছাত্রলীগ আয়োজিত ভাষাদিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে এসেছিলেন সত্যজিৎ রায়! নানা বিষয়ে বিপুল প্রতিভাধর এই মানুষটি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির তালিকা করলে সংক্ষিপ্ত তালিকাতেই থাকবেন।

ছবিতে- শেখ মুজিবুর রহমান ও সত্যজিৎ রায়
 
View attachment 131935

"আমি ছেলেবেলা থেকে শুনে আসছি যে, পূর্ববঙ্গে (কিশোরগঞ্জের মশুয়া) নাকি আমার দেশ। যখন আমার পাঁচ কি ছয় বছর বয়স, তখন আমি একবার ঢাকা শহরে এসেছিলাম। দু'তিনদিন মাত্র ছিলাম। আমার মামাবাড়ি ছিল ওয়ারিতে, রঙ্কেন (র‍্যাংকিন) স্ট্রিটে। সে বাড়ি এখনও আছে কিনা জানিনা। সে রাস্তা এখনও আছে কিনা জানি না। বাড়ির কথা কিছু মনে নেই। মনে আছে শুধু প্রচণ্ড বাঁদরের উপদ্রব, সে বাঁদরও এখনও আছে কিনা তাও আমি জানি না। তারপর মনে আছে, পদ্মায় স্টিমারে আসছি, ভোরবেলা ঘুম ভেঙে গিয়েছে, মা আমায় বাইরে ডেকে এনে দেখাচ্ছেন পদ্মায় সূর্যোদয় হচ্ছে। আর দেখাচ্ছেন, পদ্মায় যেখানে শীতলক্ষা এসে মিশেছে সেখানে এক নদীর জলের সঙ্গে অন্য নদীর জলের কত তফাৎ। সেই থেকে বারবার মনে হয়েছে, একবার নিজের দেশটা গিয়ে দেখে আসতে পারলে ভাল হত। কিন্তু সেই আসাটা, বিশেষত দেশবিভাগের পর, ক্রমেই দুরাশায় পরিণত হতে চলছিল।হঠাৎ কিছুদিন আগে ইতিহাসের চাকা ঘুরে গেল। আমার কাছে আমার দেশের দরজা খুলে গেল। এবং আজ আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে, ঢাকা শহরে এসে, আমার স্বপ্ন অন্তত কিছুটা অংশে সফল হল। এবার আমি অনেক জরুরি কাজ ফেলে চলে এসেছি। এবার আর বেশিদিন থাকা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু আমার ইচ্ছে আছে, আমার আশা আছে, অদূর ভবিষ্যতে আমি আবার এদেশে ফিরে আসব, এই দেশটাকে ভাল করে দেখব। এদেশের মানুষের সঙ্গে এমন ভাবে জনসভায় নয়, সামনাসামনি মুখোমুখি বসে তাঁদের সঙ্গে পরিচয় করব। গত বিশ বছরে অনেক জায়গায় অনেক দেশে অনেকবার নানা ভাবে সম্মানিত হওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। কিন্তু আমি জোর গলায় আজকে এখানে দাঁড়িয়ে এই শহিদ দিবসের পূণ্যতিথিতে আমি বলতে পারি, আজকে যে সম্মান নিজ দেশে পেলাম সেই সম্মানের কাছে আগের সমস্ত সম্মান হার মেনে যায়। এর চেয়ে বড় সম্মান আমি কখনও পাইনি। আর আমার মনে হয় না আর কখনও পাব। জয় বাংলা।"

১৯৭২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারী ঢাকার পল্টন ময়দানে ছাত্রলীগ আয়োজিত ভাষাদিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে এসেছিলেন সত্যজিৎ রায়! নানা বিষয়ে বিপুল প্রতিভাধর এই মানুষটি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির তালিকা করলে সংক্ষিপ্ত তালিকাতেই থাকবেন।

ছবিতে- শেখ মুজিবুর রহমান ও সত্যজিৎ রায়
Darun
 
View attachment 131935

"আমি ছেলেবেলা থেকে শুনে আসছি যে, পূর্ববঙ্গে (কিশোরগঞ্জের মশুয়া) নাকি আমার দেশ। যখন আমার পাঁচ কি ছয় বছর বয়স, তখন আমি একবার ঢাকা শহরে এসেছিলাম। দু'তিনদিন মাত্র ছিলাম। আমার মামাবাড়ি ছিল ওয়ারিতে, রঙ্কেন (র‍্যাংকিন) স্ট্রিটে। সে বাড়ি এখনও আছে কিনা জানিনা। সে রাস্তা এখনও আছে কিনা জানি না। বাড়ির কথা কিছু মনে নেই। মনে আছে শুধু প্রচণ্ড বাঁদরের উপদ্রব, সে বাঁদরও এখনও আছে কিনা তাও আমি জানি না। তারপর মনে আছে, পদ্মায় স্টিমারে আসছি, ভোরবেলা ঘুম ভেঙে গিয়েছে, মা আমায় বাইরে ডেকে এনে দেখাচ্ছেন পদ্মায় সূর্যোদয় হচ্ছে। আর দেখাচ্ছেন, পদ্মায় যেখানে শীতলক্ষা এসে মিশেছে সেখানে এক নদীর জলের সঙ্গে অন্য নদীর জলের কত তফাৎ। সেই থেকে বারবার মনে হয়েছে, একবার নিজের দেশটা গিয়ে দেখে আসতে পারলে ভাল হত। কিন্তু সেই আসাটা, বিশেষত দেশবিভাগের পর, ক্রমেই দুরাশায় পরিণত হতে চলছিল।হঠাৎ কিছুদিন আগে ইতিহাসের চাকা ঘুরে গেল। আমার কাছে আমার দেশের দরজা খুলে গেল। এবং আজ আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে, ঢাকা শহরে এসে, আমার স্বপ্ন অন্তত কিছুটা অংশে সফল হল। এবার আমি অনেক জরুরি কাজ ফেলে চলে এসেছি। এবার আর বেশিদিন থাকা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু আমার ইচ্ছে আছে, আমার আশা আছে, অদূর ভবিষ্যতে আমি আবার এদেশে ফিরে আসব, এই দেশটাকে ভাল করে দেখব। এদেশের মানুষের সঙ্গে এমন ভাবে জনসভায় নয়, সামনাসামনি মুখোমুখি বসে তাঁদের সঙ্গে পরিচয় করব। গত বিশ বছরে অনেক জায়গায় অনেক দেশে অনেকবার নানা ভাবে সম্মানিত হওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। কিন্তু আমি জোর গলায় আজকে এখানে দাঁড়িয়ে এই শহিদ দিবসের পূণ্যতিথিতে আমি বলতে পারি, আজকে যে সম্মান নিজ দেশে পেলাম সেই সম্মানের কাছে আগের সমস্ত সম্মান হার মেনে যায়। এর চেয়ে বড় সম্মান আমি কখনও পাইনি। আর আমার মনে হয় না আর কখনও পাব। জয় বাংলা।"

১৯৭২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারী ঢাকার পল্টন ময়দানে ছাত্রলীগ আয়োজিত ভাষাদিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে এসেছিলেন সত্যজিৎ রায়! নানা বিষয়ে বিপুল প্রতিভাধর এই মানুষটি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির তালিকা করলে সংক্ষিপ্ত তালিকাতেই থাকবেন।

ছবিতে- শেখ মুজিবুর রহমান ও সত্যজিৎ রায়
Niceee
 
Top