• We kindly request chatzozo forum members to follow forum rules to avoid getting a temporary suspension. Do not use non-English languages in the International Sex Chat Discussion section. This section is mainly created for everyone who uses English as their communication language.

রিনি

Bose Arun

Favoured Frenzy
**** রিনি ****
@@@@
শ্রাবণ মাস অঝরে ঝরে চলেছে।বৃষ্টি, কলকাতা থেকে পালাতে চাইছিল মন। তাই শহরের ব্যাস্ততা থেকে আমি আর মিষ্টি পালিয়ে এসেছি দীঘায় উঠেছি দীঘার। সি হক হোটেলে। হোটেলের সমুদ্রের ধার ঘেষে তিনটে ছোট ছোট হানিমুন কটেজ, প্রত্যেকটার পাশে সুন্দর একটুকরো করে ফুলের বাগান আর একটা করে দোলনা।
আমি আর মিষ্টি এসে উঠেছি সি হকের একদম সমুদ্রের
ধার ঘেষা কটেজটাতে। কফির মগ হাতে বসে আছি বারান্দায় একটা বেতের চেয়ারে। চোখের সামনে
দিগন্তবিস্তৃত সমুদ্র। বর্ষার সমুদ্রের বিশাল বিশাল ঢেউ গুলো ভেঙে পড়ছে পাড়ে এসে। সারাদিন সারারাত ঢেউএর শব্দে মনের মধ্যে যেন একটা মাদকতা এনে দেয়। অবিরাম বৃষ্টি হয়ে চলেছে, ছোট্ট বাগানটাতে লতানো জূঁই আর বেলি ফুলের গাছ গুলো ফুলে ফুলে ভরে আছে। বাগানের সামনের দিকে বারান্দা ঘেষে একটা গন্ধরাজ ফুলের গাছ। অকাল ঋতুতেও চারটে ফুল ফুটে আছে, ধবধবে সাদা ফুলগুলো। বৃষ্টিতে ভিজছে আর সমুদ্রের হাওয়ায় দুলছে। ফুল গুলো দেখতে দেখতে আমার মনটাও কেমন দুলে উঠলো।
মনটা চলে গেলো অনেক অনেক পেছনে। চোখের সামনে ভেসে উঠলো রিনির নাচের স্কুল, পাশের একটা রকে বিকাল বেলা আমরা তিন বন্ধু হাতে, পাতা সহ গন্ধরাজ ফুল নিয়ে বসে থাকতাম, আমরা জানতাম রিনি গন্ধরাজ ফুল ভালোবাসে। বন্ধুদের সাথে আমাদের পাশ দিয়ে নাচের ক্লাসে যেতে যেতে দৌড়ে এসে একজনের হাত থেকে ছোঁ মেরে গন্ধরাজ ফুলের গুচ্ছটা নিয়ে একটু মিষ্টি হেসে আবার ছুটে বন্ধুদের কাছে চলে যেত। আকাশ কালো হয়ে বৃষ্টি যেন আরো জোরে নামছে, সমুদ্রের জলে কালো মেঘের ছায়া,বৃষ্টির তোরে চোখের সামনে সমুদ্র আবছা হয়ে আছে।
ঘরের ভেতর মিষ্টির আইপডে বেজে চলেছে, " আজি ঝর ঝর মুখর বাদল দিনে,জানিনে জানিনে কিছুতে কেন যে মন লাগে না "। সত্যি আমার মনটাকেও ধরে রাখতে পারছি না। সমুদ্রের ঝোড়ো বাতাসে চলে যাচ্ছে সুদূর অতিতে।
যখন আমরা তিন বন্ধু রিনির জন্য ফুল নিয়ে ওর নাচের স্কুলের কাছে দাঁড়িয়ে থাকাম, তখন আমার বয়েস ষোলো, স্কুল ফাইনালের স্টুডেন্ট, বয়ঃসন্ধি, মনে উচ্ছ্বাস, অকাল বসন্তের শিমূল কৃষ্ণচূড়ার রঙে রঙীন মন। সম বয়সী কোনো মেয়ে দেখলেই কেমন ভালোবাসতে ইচ্ছে করতো আর প্রেমে পরে যেতে ইচ্ছে করতো। অবশ্য তখন প্রেম কাকে বলে জানতামই না।
বৃষ্টিটা একটু ধরেছে, সমুদ্রের ঢেউ গুলোও যেন একটু শান্ত হয়ে খিলখিল করে হাসছে আর সাঁতার কেটে মাঝ সমুদ্রে গিয়ে লক্ষী মেয়ের মত শান্ত হয়ে যাচ্ছে। দুপুরের লাঞ্চ আসতে এখনো দেরী আছে, কয়েকটা সমুদ্র হাস আনন্দে ঠিক ঢেউ গুলোর ওপরে উড়ে উড়ে যেন খেলা করছে, একবার করে ডানায় সমুদ্রের ঢেউ ছুঁয়ে আবার উড়ে যাচ্ছে। ঠিক যেন আমার রঙীন অতিত আমার মনের ঢেউ ছুঁয়ে বার বার পালিয়ে যাচ্ছে। মনে পরছে আমার এক বন্ধুর দাদার বিয়ে, কলকাতার কাছেই সোনারপুরে। তখনকার সোনারপুর সবুজ আর সবুজে ঘেরা ছোট্ট একটা গ্রাম। বন্ধুর সাথে আমিও বরযাত্রী যাবো। কলকাতা থেকে একটা বাসে করে যেতে হবে। সেই সময় আমরা ওই বয়েসে হাফ প্যান্ট পড়তাম, এখন তো দেখি বুড়ো বুড়ো লোকগুলোও হাফ প্যান্ট পড়ে ঘুরে বেড়ায়। যাইহোক বিয়ের দিন মাখনজীনের একটা ফুল প্যান্টের সাথে ম্যাচ করা সার্ট পরে চুলে টেরি করে রেডি। লুকিয়ে দিদির অগুরু সেন্টটাও একটু জামায় মেখে নিয়েছিলাম।
যথা সময় বাসে উঠেছি দেখছি কোনো জানলার ধারের সিট খালি আছে কিনা। হটাত দেখি রিনি বসে আছে একটা জানলার পাশে আমাকে দেখে মিটমিট করে হাসছে। আমার বুকের ভেতরে এক ঝলক অদ্ভুত রোমাঞ্চকর অনুভূতি আমার সারা শরীরে ছড়িয়ে পরলো। রিনির পাশের সিটটা খালি। দেখি রিনি হাত নেড়ে আমাকে ডাকছে,কাছে যেতেই পাশে বসতে বললো। আমার যে তখন কি অবস্থা বলে বোঝাতে পারবোনা। রিনির পাশে বসে তখন আমার মনে হচ্ছিলো প সাত রাজ্য জয় করা আমি যেন নেপোলিয়ন বোনাপার্ট, রিনিকে আমি জয় করে নিয়েছি।
বৃষ্টি থেমেছে, আমাদের লাঞ্চ হয়ে গেছে, একটু রেষ্ট নিয়ে মিষ্টিকে সংগে নিয়ে সি বিচে নেমে এলাম।
আমরা যে কটেজটাতে আছি ওরই পাশে একটা ছোটো গেট, গেট খুললেই সি বিচ। ভিজে বালির ওপর দিয়ে সমুদ্রের জলের ধার বরাবর খালি পায় দুজনে হাটছি, ছোটছোট ঢেউ এসে আমাদের পায়ের পাতা ভিজিয়ে দিচ্ছে। আনমনে হাটছি আর মনে পরে যাচ্ছে সোনার পুরের বিয়ে বাড়ি যাওয়া। বাস চলছে আমি রিনির পাশে বসে, মনে হচ্ছে যেন।স্বপ্ন দেখছি। ভাড়ার বাস গুলোর সিট চওড়ায় অনেক ছোটো। তাই আমি রিনির পাশে বসে আছি ওর। গা ঘেষে। বাস চলছে আমার যেন মনে হচ্ছে আমি আর রিনি মেঘের রাজ্যে দুজনে দুজনের হাত ধরে উড়ে চলেছি। ওর গায়ের মিষ্টি গন্ধে আমি কেমন বিভোর হয়ে যাচ্ছি মনে হচ্ছে যেন স্বপ্ন স্বপ্ন স্বপ্ন দেখছে মন।
ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নেমে আসছে, সমুদ্রের পশ্চিম আকাশে রক্তিম সূর্য যেন ঢেউএর সাথে মিতালী পাতিয়ে সমুদ্রের বুকে লাল আবীর ছরিয়ে হারিয়ে যেতে চাইছে সমুদ্রের
বুকে। ভেজা বালিতে পায়ের চিহ্ন রেখে কটেজে ফেরার পথ ধরলাম।
মনে আছে সোনার পুরের বিয়ে বাড়ি থেকে কলতায় ফিরে আসার পর রিনির সাথে আমার একটা মিষ্টি সম্পর্ক তৈরী হয়েছিল। রোজ বিকেল বেলায় আমাদের দেখা হতো। আমি আমার পড়াশোনা আর হাত খরচের জন্য একটা টিউশন করতাম। যা পেতাম তাতেই আমার সব খরচ করেও রিনিকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতাম। মনে আছে একদিন স্কুল পালিয়ে রিনিকে নিয়ে গ্লোবে একটা সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম। আগেই চার্ট দেখে একদম পেছনের রোড় দেয়ালের দিকের দুটো সিট। হলে গিয়ে দেখি হল ফাকা কোনো ভীড় নেই, আমাদের পাশের সিট গুলো সব খালি। শো শুরু হতেই হল অন্ধকার হয়ে গেলো। খানিক্ষণ বাদে আমি রিনির হাতটা ধরতেই ও আমার হাতটা ধরে ওর কাধের ওপর নিয়ে মাথাটা আমার কাধে রেখে আমার মুখটা ওর মুখের ওপর চেপে ধরলো। আমার ঠোঁট দুটো ওর ঠোঁট
দুটোর ওপরে চেপে আছে। আমার জীবনের প্রথম কোনো মেয়ের নরম ঠোঁটের চুমুর স্পর্শ আমার ঠোঁটে। আমি বুঝতে পারছি রিনিও কেমন এক অজানা রোমাঞ্চের অনুভূতিতে কেঁপে কেঁপে উঠছে। সে দিন আমাদের দুজনেরই সিনেমা দেখা হয়ে ওঠেনি। হলের অন্ধকারে দুজনে দুজনকে আদর করতে করতে মনে হচ্ছিলো শরীরের সমুদ্র মন্থন করে কোনো গরল নয় শুধু অমৃত আর অমৃত উঠে এসেছিল। সন্ধ্যা পহয়ে গেছে হোটেলের কটেজের বাগান গুলো আধো অন্ধকার আধো আলো একটা মায়াবী পরিবেশ। কটেজে ঢুকে মিষ্টি ফোনে চা এর। অর্ডার দিলো আর ডিনারে কি দেবে তাও বলে দিল। আমি আমার এক ডাক্তার বন্ধুর পরামর্শে রোজ সন্ধ্যা বেলায় দু থেকে তিন পেগ হুইস্কি নি, তাতে আমার শরীর ফিট থাকে। কটেজে ফিরে একটা পেগ বানিয়ে বারান্দায় বসলাম, মিষ্টির হাতে চায়ের কাপ। বাইরে রাতের আকাশের চাঁদের আলোয় সমুদ্রের বুকে এক।মায়াবী দৃশ্য, ঢেউএর চুড়ো গুলো রেডিয়ামের নীলচে আলোয় চিকচিক করছে। মনটা আবার পালিয়ে গেল। মনের পেছনের দরজা দিয়ে অনেক অনেক অতিতে।
দেখতে দেখতে তিনটে বছর কেটে গেছে। ভালোবাসার রঙে রঙীন আমাদের দুটো মন। রিনি এখন আঠারো বছরের পরিপুর্ন যুবতী। আমি সেকেন্ড ইয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি। দুজনে ঘুরে বেড়াতাম, কিন্তু রিনিকে আমার জীবনের জীবন সঙ্গী করার অঙ্গীকার করতে পারিনি। আমাকে আমার কেরিয়ার গড়ে তুলতে হবে আমার নিজের সংসারের দায়িত্ব নিতে হবে। রিনিও বুঝত আমাকে। তাই কোনো দিন আমার কাছে কথা চায়নি। একদিন সন্ধ্যা বেলা বালিগঞ্জ লেকের জলের ধারে আধো অন্ধকারে আমাকে জড়িয়ে ধরে খুব শান্ত ভাবে রিনি বললো আজ তোমার কাছ থেকে একটা পারমিশন নিতে এসেছি, আমার জন্য বিয়ের একটা সম্বন্ধ এসেছে, ছেলে এন আর আই, লন্ডনে বড় সার্ভিস করে। তুমিতো বুঝতেই পারছো তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করে এই দেশে আমি থাকতে পারবো না, তাই এই বিয়েতে আমি অমত করিনি, জানি এই পৃথিবীতে তুমিই একমাত্র যে আমাকে কোনো দিন ভুল বুঝবে না। আজকেই তোমার সাথে আমার শেষ দেখা। বলে চুমায় চুমায় আমার মুখ ভড়িয়ে
দিয়েছিল।
পরের দিন সকালে আমাদের কলকাতায় ফেরার পালা। মিষ্টি সব গোছগাছ করছে। রুম সার্ভিসের ছেলেটা ঘরটাকে গুছিয়ে দিচ্ছে, আমি ছেলেটিকে বললাম আমাকে ওই গাছের গন্ধরাজ ফুল চারটে।পাতা সমেত এনে দেবে? ছেলেটি ততক্ষণাৎ ফুল চারটে পেড়ে এনে
দিলো। হাতে ধরা বৃষ্টি ভেজা ধবধবে সাদা গন্ধরাজ ফুল গুলো যেন আমাকে বলছে, কেমন হারিয়ে ফেলেছিলে আমাকে,আবার মনে পোড়লোতো?
 
**** রিনি ****
@@@@
শ্রাবণ মাস অঝরে ঝরে চলেছে।বৃষ্টি, কলকাতা থেকে পালাতে চাইছিল মন। তাই শহরের ব্যাস্ততা থেকে আমি আর মিষ্টি পালিয়ে এসেছি দীঘায় উঠেছি দীঘার। সি হক হোটেলে। হোটেলের সমুদ্রের ধার ঘেষে তিনটে ছোট ছোট হানিমুন কটেজ, প্রত্যেকটার পাশে সুন্দর একটুকরো করে ফুলের বাগান আর একটা করে দোলনা।
আমি আর মিষ্টি এসে উঠেছি সি হকের একদম সমুদ্রের
ধার ঘেষা কটেজটাতে। কফির মগ হাতে বসে আছি বারান্দায় একটা বেতের চেয়ারে। চোখের সামনে
দিগন্তবিস্তৃত সমুদ্র। বর্ষার সমুদ্রের বিশাল বিশাল ঢেউ গুলো ভেঙে পড়ছে পাড়ে এসে। সারাদিন সারারাত ঢেউএর শব্দে মনের মধ্যে যেন একটা মাদকতা এনে দেয়। অবিরাম বৃষ্টি হয়ে চলেছে, ছোট্ট বাগানটাতে লতানো জূঁই আর বেলি ফুলের গাছ গুলো ফুলে ফুলে ভরে আছে। বাগানের সামনের দিকে বারান্দা ঘেষে একটা গন্ধরাজ ফুলের গাছ। অকাল ঋতুতেও চারটে ফুল ফুটে আছে, ধবধবে সাদা ফুলগুলো। বৃষ্টিতে ভিজছে আর সমুদ্রের হাওয়ায় দুলছে। ফুল গুলো দেখতে দেখতে আমার মনটাও কেমন দুলে উঠলো।
মনটা চলে গেলো অনেক অনেক পেছনে। চোখের সামনে ভেসে উঠলো রিনির নাচের স্কুল, পাশের একটা রকে বিকাল বেলা আমরা তিন বন্ধু হাতে, পাতা সহ গন্ধরাজ ফুল নিয়ে বসে থাকতাম, আমরা জানতাম রিনি গন্ধরাজ ফুল ভালোবাসে। বন্ধুদের সাথে আমাদের পাশ দিয়ে নাচের ক্লাসে যেতে যেতে দৌড়ে এসে একজনের হাত থেকে ছোঁ মেরে গন্ধরাজ ফুলের গুচ্ছটা নিয়ে একটু মিষ্টি হেসে আবার ছুটে বন্ধুদের কাছে চলে যেত। আকাশ কালো হয়ে বৃষ্টি যেন আরো জোরে নামছে, সমুদ্রের জলে কালো মেঘের ছায়া,বৃষ্টির তোরে চোখের সামনে সমুদ্র আবছা হয়ে আছে।
ঘরের ভেতর মিষ্টির আইপডে বেজে চলেছে, " আজি ঝর ঝর মুখর বাদল দিনে,জানিনে জানিনে কিছুতে কেন যে মন লাগে না "। সত্যি আমার মনটাকেও ধরে রাখতে পারছি না। সমুদ্রের ঝোড়ো বাতাসে চলে যাচ্ছে সুদূর অতিতে।
যখন আমরা তিন বন্ধু রিনির জন্য ফুল নিয়ে ওর নাচের স্কুলের কাছে দাঁড়িয়ে থাকাম, তখন আমার বয়েস ষোলো, স্কুল ফাইনালের স্টুডেন্ট, বয়ঃসন্ধি, মনে উচ্ছ্বাস, অকাল বসন্তের শিমূল কৃষ্ণচূড়ার রঙে রঙীন মন। সম বয়সী কোনো মেয়ে দেখলেই কেমন ভালোবাসতে ইচ্ছে করতো আর প্রেমে পরে যেতে ইচ্ছে করতো। অবশ্য তখন প্রেম কাকে বলে জানতামই না।

বৃষ্টিটা একটু ধরেছে, সমুদ্রের ঢেউ গুলোও যেন একটু শান্ত হয়ে খিলখিল করে হাসছে আর সাঁতার কেটে মাঝ সমুদ্রে গিয়ে লক্ষী মেয়ের মত শান্ত হয়ে যাচ্ছে। দুপুরের লাঞ্চ আসতে এখনো দেরী আছে, কয়েকটা সমুদ্র হাস আনন্দে ঠিক ঢেউ গুলোর ওপরে উড়ে উড়ে যেন খেলা করছে, একবার করে ডানায় সমুদ্রের ঢেউ ছুঁয়ে আবার উড়ে যাচ্ছে। ঠিক যেন আমার রঙীন অতিত আমার মনের ঢেউ ছুঁয়ে বার বার পালিয়ে যাচ্ছে। মনে পরছে আমার এক বন্ধুর দাদার বিয়ে, কলকাতার কাছেই সোনারপুরে। তখনকার সোনারপুর সবুজ আর সবুজে ঘেরা ছোট্ট একটা গ্রাম। বন্ধুর সাথে আমিও বরযাত্রী যাবো। কলকাতা থেকে একটা বাসে করে যেতে হবে। সেই সময় আমরা ওই বয়েসে হাফ প্যান্ট পড়তাম, এখন তো দেখি বুড়ো বুড়ো লোকগুলোও হাফ প্যান্ট পড়ে ঘুরে বেড়ায়। যাইহোক বিয়ের দিন মাখনজীনের একটা ফুল প্যান্টের সাথে ম্যাচ করা সার্ট পরে চুলে টেরি করে রেডি। লুকিয়ে দিদির অগুরু সেন্টটাও একটু জামায় মেখে নিয়েছিলাম।
যথা সময় বাসে উঠেছি দেখছি কোনো জানলার ধারের সিট খালি আছে কিনা। হটাত দেখি রিনি বসে আছে একটা জানলার পাশে আমাকে দেখে মিটমিট করে হাসছে। আমার বুকের ভেতরে এক ঝলক অদ্ভুত রোমাঞ্চকর অনুভূতি আমার সারা শরীরে ছড়িয়ে পরলো। রিনির পাশের সিটটা খালি। দেখি রিনি হাত নেড়ে আমাকে ডাকছে,কাছে যেতেই পাশে বসতে বললো। আমার যে তখন কি অবস্থা বলে বোঝাতে পারবোনা। রিনির পাশে বসে তখন আমার মনে হচ্ছিলো প সাত রাজ্য জয় করা আমি যেন নেপোলিয়ন বোনাপার্ট, রিনিকে আমি জয় করে নিয়েছি।
বৃষ্টি থেমেছে, আমাদের লাঞ্চ হয়ে গেছে, একটু রেষ্ট নিয়ে মিষ্টিকে সংগে নিয়ে সি বিচে নেমে এলাম।
আমরা যে কটেজটাতে আছি ওরই পাশে একটা ছোটো গেট, গেট খুললেই সি বিচ। ভিজে বালির ওপর দিয়ে সমুদ্রের জলের ধার বরাবর খালি পায় দুজনে হাটছি, ছোটছোট ঢেউ এসে আমাদের পায়ের পাতা ভিজিয়ে দিচ্ছে। আনমনে হাটছি আর মনে পরে যাচ্ছে সোনার পুরের বিয়ে বাড়ি যাওয়া। বাস চলছে আমি রিনির পাশে বসে, মনে হচ্ছে যেন।স্বপ্ন দেখছি। ভাড়ার বাস গুলোর সিট চওড়ায় অনেক ছোটো। তাই আমি রিনির পাশে বসে আছি ওর। গা ঘেষে। বাস চলছে আমার যেন মনে হচ্ছে আমি আর রিনি মেঘের রাজ্যে দুজনে দুজনের হাত ধরে উড়ে চলেছি। ওর গায়ের মিষ্টি গন্ধে আমি কেমন বিভোর হয়ে যাচ্ছি মনে হচ্ছে যেন স্বপ্ন স্বপ্ন স্বপ্ন দেখছে মন।
ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নেমে আসছে, সমুদ্রের পশ্চিম আকাশে রক্তিম সূর্য যেন ঢেউএর সাথে মিতালী পাতিয়ে সমুদ্রের বুকে লাল আবীর ছরিয়ে হারিয়ে যেতে চাইছে সমুদ্রের
বুকে। ভেজা বালিতে পায়ের চিহ্ন রেখে কটেজে ফেরার পথ ধরলাম।

মনে আছে সোনার পুরের বিয়ে বাড়ি থেকে কলতায় ফিরে আসার পর রিনির সাথে আমার একটা মিষ্টি সম্পর্ক তৈরী হয়েছিল। রোজ বিকেল বেলায় আমাদের দেখা হতো। আমি আমার পড়াশোনা আর হাত খরচের জন্য একটা টিউশন করতাম। যা পেতাম তাতেই আমার সব খরচ করেও রিনিকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতাম। মনে আছে একদিন স্কুল পালিয়ে রিনিকে নিয়ে গ্লোবে একটা সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম। আগেই চার্ট দেখে একদম পেছনের রোড় দেয়ালের দিকের দুটো সিট। হলে গিয়ে দেখি হল ফাকা কোনো ভীড় নেই, আমাদের পাশের সিট গুলো সব খালি। শো শুরু হতেই হল অন্ধকার হয়ে গেলো। খানিক্ষণ বাদে আমি রিনির হাতটা ধরতেই ও আমার হাতটা ধরে ওর কাধের ওপর নিয়ে মাথাটা আমার কাধে রেখে আমার মুখটা ওর মুখের ওপর চেপে ধরলো। আমার ঠোঁট দুটো ওর ঠোঁট
দুটোর ওপরে চেপে আছে। আমার জীবনের প্রথম কোনো মেয়ের নরম ঠোঁটের চুমুর স্পর্শ আমার ঠোঁটে। আমি বুঝতে পারছি রিনিও কেমন এক অজানা রোমাঞ্চের অনুভূতিতে কেঁপে কেঁপে উঠছে। সে দিন আমাদের দুজনেরই সিনেমা দেখা হয়ে ওঠেনি। হলের অন্ধকারে দুজনে দুজনকে আদর করতে করতে মনে হচ্ছিলো শরীরের সমুদ্র মন্থন করে কোনো গরল নয় শুধু অমৃত আর অমৃত উঠে এসেছিল। সন্ধ্যা পহয়ে গেছে হোটেলের কটেজের বাগান গুলো আধো অন্ধকার আধো আলো একটা মায়াবী পরিবেশ। কটেজে ঢুকে মিষ্টি ফোনে চা এর। অর্ডার দিলো আর ডিনারে কি দেবে তাও বলে দিল। আমি আমার এক ডাক্তার বন্ধুর পরামর্শে রোজ সন্ধ্যা বেলায় দু থেকে তিন পেগ হুইস্কি নি, তাতে আমার শরীর ফিট থাকে। কটেজে ফিরে একটা পেগ বানিয়ে বারান্দায় বসলাম, মিষ্টির হাতে চায়ের কাপ। বাইরে রাতের আকাশের চাঁদের আলোয় সমুদ্রের বুকে এক।মায়াবী দৃশ্য, ঢেউএর চুড়ো গুলো রেডিয়ামের নীলচে আলোয় চিকচিক করছে। মনটা আবার পালিয়ে গেল। মনের পেছনের দরজা দিয়ে অনেক অনেক অতিতে।
দেখতে দেখতে তিনটে বছর কেটে গেছে। ভালোবাসার রঙে রঙীন আমাদের দুটো মন। রিনি এখন আঠারো বছরের পরিপুর্ন যুবতী। আমি সেকেন্ড ইয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি। দুজনে ঘুরে বেড়াতাম, কিন্তু রিনিকে আমার জীবনের জীবন সঙ্গী করার অঙ্গীকার করতে পারিনি। আমাকে আমার কেরিয়ার গড়ে তুলতে হবে আমার নিজের সংসারের দায়িত্ব নিতে হবে। রিনিও বুঝত আমাকে। তাই কোনো দিন আমার কাছে কথা চায়নি। একদিন সন্ধ্যা বেলা বালিগঞ্জ লেকের জলের ধারে আধো অন্ধকারে আমাকে জড়িয়ে ধরে খুব শান্ত ভাবে রিনি বললো আজ তোমার কাছ থেকে একটা পারমিশন নিতে এসেছি, আমার জন্য বিয়ের একটা সম্বন্ধ এসেছে, ছেলে এন আর আই, লন্ডনে বড় সার্ভিস করে। তুমিতো বুঝতেই পারছো তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করে এই দেশে আমি থাকতে পারবো না, তাই এই বিয়েতে আমি অমত করিনি, জানি এই পৃথিবীতে তুমিই একমাত্র যে আমাকে কোনো দিন ভুল বুঝবে না। আজকেই তোমার সাথে আমার শেষ দেখা। বলে চুমায় চুমায় আমার মুখ ভড়িয়ে
দিয়েছিল।
পরের দিন সকালে আমাদের কলকাতায় ফেরার পালা। মিষ্টি সব গোছগাছ করছে। রুম সার্ভিসের ছেলেটা ঘরটাকে গুছিয়ে দিচ্ছে, আমি ছেলেটিকে বললাম আমাকে ওই গাছের গন্ধরাজ ফুল চারটে।পাতা সমেত এনে দেবে? ছেলেটি ততক্ষণাৎ ফুল চারটে পেড়ে এনে
দিলো। হাতে ধরা বৃষ্টি ভেজা ধবধবে সাদা গন্ধরাজ ফুল গুলো যেন আমাকে বলছে, কেমন হারিয়ে ফেলেছিলে আমাকে,আবার মনে পোড়লোতো?
Nice
 
Top