• We kindly request chatzozo forum members to follow forum rules to avoid getting a temporary suspension. Do not use non-English languages in the International Sex Chat Discussion section. This section is mainly created for everyone who uses English as their communication language.

ভ্রষ্টা মন গল্পের শেষাংশ****

Bose Arun

Favoured Frenzy
*** রঞ্জন ***
( ভ্রষ্টা মন গল্পের শেষাংশ)
জয়ার সাথে দেখা করার জন্য রঞ্জন জয়ার ডালহৌসির টুরিজিম অফিসে গিয়ে জয়ার খোঁজ করতে গিয়ে যা শুনলো তাতে শুধু অবাকই নয় একটা ধাক্কাই খেয়ে গেলো। জয়া বিয়ের জন্য পনেরো দিন ছুটি নিয়েছে এবং হিসেব মতো দুদিন আগেই জয়ার বিয়ে হয়ে গেছে। জয়ার বিয়ের খবরটা শুনে মনে মনে ধাক্কা খেলেও কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিল না রঞ্জন জয়া বিয়েতে
ওকে ডাকলো না কেন বা আগেও কিছুই জানালনা কেন। এত ভালো বন্ধু ওরা দুজন, সপ্তাহে এক দিন দুদিন দেখা না হলে পেটের ভাতই হজম হত না দুজনের। সেই জয়া ওকে অন্ধকারে রেখে একেবারে বিয়ের পিড়িতে? কিছুতেই খবরটা বিশ্বাস করতে পারছিল না রঞ্জন।
কেন জয়া ওর সাথে এই রকম ব্যাবহারটা করলো তার কোনো ব্যাখ্যাই খুঁজে পাচ্ছে না রঞ্জন।
মনে মনে জয়াকে রঞ্জন খুব ভালোবাসতো, সেই ওর অফিসে প্রথম দেখা থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত।
আস্তে আস্তে জয়ার অফিস থেকে বেড়িয়ে আসে রঞ্জন। হাটতে হাটতে চলে যায় বাবু ঘাটে গঙ্গার পাড়ে।
একটা খালি বেঞ্চ দেখে বসে পরে তাকায় দ্বিতীয় হুগলী সেতুর দিকে, পরন্ত বিকেলের আলোয় সেতুটা কেমন আস্তে আস্তে রঙ পাল্টাচ্ছে।
ভাবে মেয়েদের মনের রঙও কি এই ভাবে সময়ের সাথে সাথে পালটে যায়? কি জানি হবে হয়তো। আসলে জয়ার সাথে পরিচয় হওয়ার আগে রঞ্জন সেই ভাবে কোনো মেয়ের সাথে মেশেনি।
মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে রঞ্জন, কেরিয়ারের স্বপ্ন দেখে, পরিবারের সবাই ওর মুখ চেয়ে বসে আছে, ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে একটা ভালো চাকরী করবে, সংসারের হাল ধরবে, দুই দিদির বিয়ে দেবে। ওর কি মেয়ে বন্ধু করার বিলাসিতা সাজে। এই মানসিকতার মাঝে জয়ার সাথে ওর পরিচয়। একঘেয়ে জীবনের পথটা হটাত কেমন এক অজানা রঙে রঙিন হয়ে উঠছিল রঞ্জনের। জয়ার সান্নিধ্যে
কেমন যেন ভালোলাগা, মনটা খুশিখুশি হয়ে ওঠা, বুঝতে পারে না রঞ্জন এটাকেই কি ভালোবাসা বলে? প্রেম বলে?
আস্তে আস্তে পশ্চিম আকাশে সূর্য ঢলে পরছে, পরন্ত সূর্যের আলোয় দ্বিতীয় হুগলী সেতুটা লালে লাল হয়ে গেছে।
সামনে গঙ্গার জল যেন আলতা নদী, মুগ্ধ চোখে দেখে রঞ্জন দিনের শেষ বিদায়ের রঙের খেলা। চোখের সামনে ভেসে ওঠে রঞ্জনের লাভা লোলেগাও এর পাহাড়ের ধারে বসে জয়ার সাথে সন্ধ্যা বেলায় সূর্যের অস্ত যাওয়া দেখা। দুজনে দুজনের হাত ধরে মুগ্ধ চোখে দেখতো প্রকৃতির রঙের খেলা।
কেমন এক অজানা ভালোলাগাতে মনটা আবিষ্ট হয়ে যেত রঞ্জনের। সেই ভালোলাগাতে কলকাতাতে ফিরে এসেও বার বার ছুটে আসতো রঞ্জন জয়ার অফিসে ওকে একবার দেখার জন্য।
ধীরে ধীরে সূর্য অস্ত যায় পশ্চিম আকাশে, অন্ধকার নেমে আসে গঙ্গার বুকে। আলোয় ঝলমল করে ওঠে গঙ্গার পাড়। আস্তে আস্তে ভীর হয়ে যাচ্ছে। উঠে পরে রঞ্জন, হাটতে থাকে।
ভালো লাগছে না, হটাত যেন বুকের ভেতরটা কেমন ফাকা ফাকা লাগছে।
নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। বুঝতে পারে না রঞ্জন কেন এত কষ্ট হচ্ছে, কোনো দিনই তো রঞ্জন ভাবে নি জয়াকে ও পুরপুরি নিজের করে পাবে। নিজের সামাজিক, পারিবারিক স্ট্যাটাস সম্বন্ধে রঞ্জন যথেষ্ট প্র‍্যাক্টিকাল।ও বুঝতো জয়াকে নিজের করে পাওয়া আর পূর্ণিমা চাঁদে হাত দেয়া একই কথা। তাও মনে মনে কত কি অলিক কল্পনা করেছে জয়াকে নিয়ে। মনটাকে আটকাতে পারতো না, ভালো লাগতো কল্পনা করতে। রঞ্জন বুঝতে পারতো জয়ারও ভালো লাগতো ওর সাহচর্য। মাঝে মাঝে রঞ্জন অবাক হয়ে অনুভব করেছে কখনো সিনেমা দেখতে গিয়ে জয়ার হাতটা ধরলে জয়া যেন কেমন হয়ে যেতো, বুঝতে পারতো ওর শরীরের ছোঁয়া পেয়ে জয়া কেমন অবশ হয়ে যেত, মাঝে মাঝে ওর হাতটা চেপে ধরতো জয়া, রঞ্জন বুঝতে পারতো জয়া কেমন থরথর করে কাঁপছে। রঞ্জনের শরীরেও যেন আগুন ধরে যেতো, কিন্তু নিজের শালীনতা বোধ রঞ্জনকে আটকে রাখতো। এই ভাবে দিন কেটে যাচ্ছিল,দুজনে দুজনের কাছে আরো কাছাকাছি এসে যাচ্ছিল। মনে পরে একদিন জয়া ওর বাড়ি যেতে চেয়েছিল, খুব খুশি হয়ে রঞ্জন জয়াকে ওর বেহালার বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল।
মা বাবা আর দুই দিদির সাথে আলাপ করিয়ে দিয়েছিল। খুবই সাধারণ আর সাদামাটা রঞ্জনের পরিবার, সেদিন জয়া সকলের সাথে অনেক গল্পগুজব করেছিল। রঞ্জনেরও খুব ভালো লাগছিলো জয়াকে ওর পরিবারের সকলের সাথে মিশে যেতে দেখে। সেদিন থেকে রঞ্জনের মনের মধ্যে একটা অদ্ভুত অলিক ইচ্ছা দানা বাঁধতে শুরু করেছিলো।
কিছুদিনের মধ্যে রঞ্জন ওর ফাইনাল পার্ট ইঞ্জিনিয়ারিং এর এক্সাম এসে যাওয়াতে এক মাসের ওপর জয়ার সাথে দেখা করতে পারেনি, অল্প বিস্তর টেলিফোনে কথা হয়েছে।
পরীক্ষার ঝামেলা পুরপুরি মিটে যাওয়ার পর আজই প্রথম রঞ্জন জয়ার সাথে দেখা করতে গিয়েছিল ওর অফিসে। ধীরে ধীরে রাত হয়ে যাচ্ছে, আস্তে আস্তে রঞ্জন হাটতে থাকে বাস স্ট্যান্ডের দিকে, ভালোই হলো জয়ার বিয়ে হয়ে যাওয়াতে, বাস্তবের নিষ্ঠুর আঘাত পাওয়ার থেকে কল্পনায় দূর থেকে আকাশের পূর্ণিমার চাঁদকে কাছে পাওয়ার স্বপ্ন দেখা ওর মত সাধারন একটি ছেলের কাছে অনেক।
নাঃ ভুলেই গিয়েছিল রঞ্জন আজ বড়দিকে দেখতে আসবে পাত্রপক্ষ।

তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে হবে।
 
Top