• We kindly request chatzozo forum members to follow forum rules to avoid getting a temporary suspension. Do not use non-English languages in the International Sex Chat Discussion section. This section is mainly created for everyone who uses English as their communication language.

বড় গল্প --- হৃদয়

Bose Arun

Favoured Frenzy
**** হৃদয় ****
## ##
পাঁচ নাম্বার সেক্টরের বারো তলার ওপরের অফিস ঘরে রিভলভিং চেয়ারে হেলান দিয়ে জানলার কাচের মধ্য দিয়ে বাইরের দিকে তাকায় আজকের বিখ্যাত আই টি ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট মিস্টার
অর্ণব সেন। আজকের মত সব কাজ শেষ। ছটা বাঁজে, স্টাফেরা সব চলে গেছে। হরি, সাহেবের জন্য এক কাপ চা নিয়ে আসতেই কাপটা হাতে নিয়ে অর্ণব জানলার পাশে এসে দাঁড়ায়। কাচের জানলা, সম্পূর্ণ অফিসটা সেন্ট্রালি এয়ারকন্ডিশন্ড। অর্ণব বাইরের দিকে তাকায়। পুরো সল্টলেক সিটিটা চোখের সামনে। রঙ বেরঙের আলোয় সেজে উঠছে এই সল্টলেক। প্রগতি আর আধুনিকতার মোড়কে ঝলমল করে উঠছে আজকের সল্টলেক। ধীরে ধীরে মধ্য কলকাতা অফিস পাড়া থেকে বড় বড় অফিস গুলো চলে আসছে এই সল্টলেকে। ভালোই লাগে অর্ণবের। দেশ উন্নত হচ্ছে।
বাড়ী যেতে ইচ্ছে করছে না, ভাবলো ক্লাবে যাবে তাও ভালো লাগছে না।
স্ত্রী গত হয়েছেন তাও দেখতে দেখতে পাঁচ ছ বছর হয়ে গেলো। বাড়ীতে শুধু রাহুল একা। মোবাইলটা হাতে নিয়ে সুদেষ্ণাকে ফোন করে অর্ণব। কিছুটা সময় ওর সাথেই কাটাতে ইচ্ছে করছে।
ডঃ সুদেষ্ণা বসু। কলকাতার ওয়ান অফ দা টপ মোস্ট কার্ডিওলজিস্ট কাম কার্ডিয়াক সার্জেন। মোটামুটি দুমাসের আগে যার ডেট পাওয়া খুবই দুষ্কর।
সেপারেটেড ফ্রম হার হাসব্যান্ড। অর্ণবের স্ত্রীর ট্রিটমেন্ট এর সময় থেকে ওর সাথে আলাপ অর্ণবের। সেই থেকে একটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক দুজনের মধ্যে।
দুজনে দুজনের প্রতি খুবই কেয়ারিং।
সন্ধ্যা ছটার সময় সব থেকে বেশি বিজি থাকে সুদেষ্ণা, এই সময়টাতে ওর এপোলোর চেম্বার, কোনো হসপিটালে সার্ভিস করে না সুদেষ্ণা, কিন্তু অনেক গুলো প্রাইভেট হাসপাতালের সাথে যুক্ত। রোজই একটা দুটো করে ওটি থাকে। আজ এই ছটার সময় ডঃসুদেষ্ণা এপোলোতে। আজ বেশি রকম পেসেন্ট দেখার নেই, ভাবছিলো একটু তারাতারি বাড়ী ফিরবে। তার মাঝেই অর্ণবের ফোন। ওর সাথে দেখা করতে চায়। সুদেষ্ণা জানে, যখনি অর্ণব খুব একা ফিল করে, ওকে কাছে ডেকে নেয়। সুদেষ্ণার ভেতরেই অর্ণব খুঁজে পায় ওর মনের শান্তি। এটা বোঁঝে বলেই অর্ণব ডাকলে সুদেষ্ণা না করতে পারে না। সুদেষ্ণা অর্ণবকে ফোন করে বলে দেয়, ও গাড়ী ছেড়ে দিচ্ছে অর্ণব যেন ওকে এপোলো থেকে তুলে নেয়।
রাহুল সেন ইন্ড্রাস্ট্রিয়ালিস্ট অর্ণব সেনের এক মাত্র ছেলে। দেখতে দেখতে সায়েন্স স্ট্রিমে কলকাতা ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী কম্পলিট করে যাদবপুর ইউনিভার্সিটি তে আইটি ইঞ্জিনিয়ারিং এর স্টুডেন্ট।
বাবার বিশাল আইটি ফার্ম এর ভবিষ্যৎ মালিক। কিন্তু ছোট বয়েস থেকে রাহুলের হার্টে একটা সমস্যা আছে। মাঝে মাঝে বুকের বা দিকে প্রচণ্ড ব্যাথা হয়। কার্ডিয়াক যত রকম টেস্ট আছে রেগুলার মনিটরিং করা হয়। এখন রাহুল আন্টি ডঃ সুদেষ্ণা বসুর আন্ডারে রয়েছে।
অর্ণব সেন ছেলের জন্য খুবই চিন্তিত।
এক মাত্র ছেলে এই বিশাল বিজনেস ওকেই দেখতে হবে। কিন্তু রাহুলের হার্টের অসুখটা খুবই ভাবাচ্ছে অর্ণব সেনকে। প্রতি মাসেই এপোলেতে নিয়ে সুদেষ্ণা আন্টি ওর হার্টের সব চেক আপ করে দেখে নেয়। ইদানিং রাহুলের হার্টের রিপোর্ট গুলোতে সুদেষ্ণা খুশী হতে পারছে না। কারেন্ট মাসের রিপোর্ট একদম ভালো নয়। হার্টের মাংস পেশী কেমন যেন উইক হয়ে যাচ্ছে, ঠিক মত ব্লাড পাম্প করতে পারছে না। সুদেষ্ণার কাছে শুনে অর্ণব ও খুবই চিন্তিত। সুদেস্না মোটামুটি আকার ইঙ্গিতে অর্ণবকে বুঝিয়ে দিয়েছে, তেমন বুঝলে হার্ট ট্রান্সপ্লান্টেশন করতে হতে পারে। ইন্ডিয়াতে এই অপারেশটা তেমন ভাবে সাক্সেস ফুল নয়। অর্ণব বিদেশে নিয়ে অপারেশন করাবার কথাও সুদেস্নার সাথে আলোচনা করেছে। এদেশে হার্ট ডোনার পাওয়াও খুব কঠিন।
কিন্তু এখনি সুদেষ্ণা চাইছে না রাহুলকে বিদেশে অপারেশনের জন্য পাঠাতে। যদি ডোনার পাওয়া যায় তবে এখানেই সুদেষ্ণাই অপারেশনের দায়িত্ব টা নিজে নেবে। অর্ণবেরও সুদেস্নার ওপরে আস্থা আছে। দিন কেটে যায়
রাহুলের ফাইনাল আই টি ইঞ্জিনিয়ারিং এর ফাইনাল এক্সাম কমপ্লিট। রেজাল্ট বেড়োতে দু মাসতো বটেই। এক দিন রাতে বাবা আর সুদেস্না আন্টির সাথে বড় একটা হোটেলে ডিনার আর গল্প চলছে। হটাত রাহুল ফিল করছে ওর বুকের ভেতরটা একটা চিনচিনে ব্যাথা শুরু হয়েছে। হোটেলের ঠান্ডা হলের মধ্যেও রাহুলের কপালে ঘাম। ডঃ সুদেষ্ণার অভিজ্ঞ চোখে ব্যাপারটা সুবিধের মনে হলো না। ততক্ষনাৎ ডিনার ফেলে রেখে অর্ণবকে নিয়ে সোজা আপোলো। সারা রাত রাহুলকে নানা রকম টেস্টের মধ্য দিয়ে এক্সাম করার পর আরো দুজন সকারী হার্ট সার্জন এর সাথে পরামর্শ করে ডিসিশন নেয়া হলো হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট ইস দি ফাইনাল সলিউশন অফ কিওরিং।
রাহুলের হার্ট যত তারাতারি সম্ভব পাল্টাতে হবে। ভাবলেই হার্টের ডোনার পাওয়া যায়না। অর্থ দিয়েও নয়। অপেক্ষা করতে হয়ে, ভাগ্যও সহায় হতে হয়। রাহুলকে সুদেষ্ণা এপোলোতেই এডমিট করে নেয়। অপারেশনের আগে যত রকম টেস্ট আছে সব কিছু করে ডঃসুদেষ্ণা আরো দুজন কার্ডিয়াক সার্জন এর সাথে রেডি হয়ে আছে, যাতে যেই মুহুর্তে ডোনার পাওয়া যাবে যাতে ওটি শুরু করে দেয়া যায়। শুধু ডোনার পাওয়া গেলেই হবে না অন্য কারুর বডি অর্গান পেসেন্টের বডিতে ম্যাচ করবে কি না সেটাও একটা ফ্যাক্টর। ডোনারের বয়েস হতে হবে লেস দ্যান সিক্সটি ইয়ার্স, ক্রিটিকাল কোনো ডিজিজ থাকলে চলবে না। এই রকম মেডিকাল প্যারামিটারস।
এই ভাবে একটা একটা করে দিন কেটে যায়, রাহুল আপোলোর কেবিনে শুয়ে বসে পেপার আর বই পড়ে দিন কাটায়। রোজই অর্ণব ছেলেকে দেখতে আসে। এক মাত্র সন্তান, মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। ছেলেই বাবাকে শান্তনা দেয় বলে দেখো বাবা ঠিক হার্ট পাওয়া যাবে, বাবার সাথে মজা করে বলে আসলে কি জানো বাবা কারুর হৃদয়েরও তো আমাকে পছন্দ হতে হবে। ছেলের কথা শুনে চোখে জল নিয়েও হেসে ফেলে অর্ণব।
ডঃ সুদেস্না সহকারী আরো দুজন কার্ডিয়াক সার্জেন দের সাথে বার বার আলোচনা করে মোটামুটি ফাইনাল ডিসিশনে এসেছেন, রাহুলের হার্টের ইন্টারনাল চারটে ক্যাভিটি রাইট লেফট আর্টিয়াম, রাইট লেফট ভেনট্রিকিল আর ওকে। বোঝা যাচ্ছে রাহুলের হার্টের মাংস পেশীতে ঠিক মত ব্লাড সার্কুলেশন হতে পারছে না, যার জন্য মাংস পেশী উইক হয়ে পরছে তাই ঠিক প্রপার ব্লাড পাম্প করতে পারছে না। তিন জন স্পেশালিষ্ট ই একমত, রাহুলের হার্টের মাংস পেশীতে ব্লাড সার্কুলেশনের আর্টারীর কিছু অংশের রিপ্লেসমেন্ট দরকার। তার জন্য চাই ফ্রেস ম্যাচিং হার্ট।
অপেক্ষায় দিন কাটে। হটাৎ এক দিন বাইপাস বেলেঘাটা কানেক্টারের কাছে একটা মোটর বাইক আর বাসের সামনা সামনি এক্সিডেন্টে বাইক আরোহী সিরিয়াস ইঞ্জুরী নিয়ে এপোলোতে ভর্তি হয়। সঙ্গে সঙ্গে অপারেশন করা হলেও ডাক্তাররা বুঝতে পারেন পেসেন্টকে বাচানো সম্ভব নয়। ছেলেটির বয়েস ত্রিশের কোঠায়। হাসপাতালে উপস্থিত ছেলেটির দুজন বন্ধু আর ওর অল্প বয়েসি স্ত্রী সোমা। এক্সিডেন্ট এর খবরটা শোনার পর থেকেই এক নাগারে কেঁদে যাচ্ছে সোমা। সোমাকে হাসপাতাল থেকে জানানো হলো ওর হাসব্যান্ড কোমায় চলে গিয়েছে, আর কোনো চান্স নেই বাচার, যে কোনো সময় ব্রেন ডেথ হয়ে যেতে পারে।
হাসপাতালের সবাই জানত এখানে এডমিটেড এক জন পেসেন্টের একটি হার্টের খুব প্রয়োজন। হাসপাতাল থেকে সঙ্গে সঙ্গে ডঃ সুদেস্নার সাথে কন্টাক্ট করা হয়। সুদেষ্ণা হাসপাতালে এসে মুমুর্ষূ ছেলেটির ওয়াইফ সোমার সাথে কথা বলে, ওর হার্ট টি পাবার জন্য। টাকাও অফার করে। ভালো করে বোঝায় সোমাকে, ও রাজি হলে একটি তরতাজা মানুষ জীবন ফিরে পাবে। টাকার অফারটা ফিরিয়ে দেয় সোমা। সোমা প্রানের থেকেও বেশী ভালোবাসতো অরুণকে। দুবছর আগে বাড়ী থেকে পালিয়ে এসে কালিঘাটে দুজনে বিয়ে করেছিল। গড়িয়ার দিকে শহরতলীতে ছোট একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতো দুজনে। অরুণ একটা প্রাভেট কোম্পানির সেলসম্যান ছিল। সুখেই দিন কাটছিল সোমার। দুবছর বিয়ে হয়েছে কোনো ইসু হয় নি এখনো। কিন্তু ভাগ্যে সইলনা। আজ অরুণ হারিয়ে যাচ্ছে সোমার জীবন থেকে।
অনেক ভেবে সোমা মনঃস্থির করে, যে মানুষটার হৃদয় সব সময় ওর জন্য ছটফট করতো, ভালোবাসায় জড়িয়ে থাকতো ওর মনকে, সেই হৃদয় কে কিছুতেই চিতার আগুনে পুড়ে যেতে দেখতে পারবেনা সোমা। তার থেকে ওর ভালোবাসার হৃদয়টা বেঁচে থাকুক আরেক জন মানুষের বুকে। তাওতো সোমা ভাবতে পারবে ওর অরুণ বেঁচে আছে ওর জন্য, এখনো ধুকপুক করে চলেছে। এই কথা ভেবে ডঃ সুদেষ্ণার প্রস্তাবে রাজী হয়ে যায় সোমা অর্থের বিনিময়ে নয় স্বামীকে অপরিসীম ভালোবাসার বিনিময়ে, কল্পনায় অরুণকে এই পৃথিবীতে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। হাসপাতালের আইনি কাগজ পত্র সই করে দেয় সোমা।
পরের দিন সকালে হাসপাতালে গিয়ে সোমা জানতে পারে, অরুনের ব্রেন ডেথ হয়ে গেছে, চিরকালের জন্য হারিয়ে গেছে অরুণ সোমার কাছ থেকে। ডুকরে কেঁদে ওঠে সোমা।
মেডিকাল সাইন্স অনুযায়ী ব্রেন ডেথের ছয় ঘন্টার মধ্যে মৃত মানুষের অর্গান তুলে নিয়ে অন্য মানুষের দেহে প্রতিস্থাপন করতে হয়। সেই মত ডঃ সুদেষ্ণা সহকারীদের নিয়ে অরুণের শরীর থেকে হার্ট তুলে প্রয়োজনীয় পার্টস অর্থটোপিক প্রসিজিওর মেথডে রাহুলের হার্টে প্রতিস্থাপন করে। মোটামুটি সাত ঘন্টায় অপারেশন কম্পলিট হয়ে যায়। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে সুদেষ্ণা। অপারেশন সাক্সেসফুল।
মাস তিনেকের মধ্যে রাহুল সেন পুরোপুরি সুস্থ জীবনে ফিরে এসেছে।
আইটি ফাইনালের রেসাল্ট ইতিমধ্যে আউট হয়ে গেছে। রাহুল ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে উত্তির্ন। এত বড় একটা অপারেশন হয়ে গেলো তাই বাবা অর্ণব সেন এখুনি রাহুলের ওপরে বিজনেসের চাপ দিতে চাইছে না।
হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে এসেছে রাহুল। আগের অভ্যস্ত জীবনে ফিরে গেছে। মাঝে মাঝে মনের মধ্যে একটা কৌতূহল উঁকি দেয় রাহুলের, জানতে ইচ্ছে করে কার হৃদয় ওর বুকের মাঝে ধুকপুক করছে। হয়ত তার আত্মীয় পরিজন, হয়ত তার ভালোবাসার মানুষ গার্ল ফ্রেন্ড বা স্ত্রী বর্তমান। কেমন অবাক হয়ে ভাবে রাহুল, আর নিজেকে সেই অজানা পরিবারের একজন বলে মনে হয়। নাঃ জানতেই হবে কার হৃদয় নিয়ে ও হেসে খেলে বেড়াচ্ছে। তার নিজের লোকেরাই বা তাকে ছাড়া কেমন আছে। যেমন ভাবা তেমন কাজ। রাহুলের মনের এই ভাবনার সলিউশন একমাত্র সুদেস্না আন্টি। এক দিন সুদেষ্ণা আন্টির সাথে দেখা হলে আবদার করে বসে রাহুল ওর ডোনারের নাম ঠিকানাটা জানতে। ডাক্তারদের এথিকস অনুযায়ী ডোনি কে ডোনারের ডিটেলস বলা যায় না। ডঃ সুদেষ্ণা অনেক রিফিউজ করা সত্বেও রাহুল কে নিবৃত করা যায় নি। তাই বাধ্য হয়ে মোটামুটি একটা আপত্ম স্নেহে সুদেষ্ণা রাহুলকে সোমার নাম এড্রেস আর মোবাইল নাম্বারটাও দেয় কিন্তু রাহুলকে বারবার বলে দেয় ও যে সেই পেসেন্ট সেটা না জানাতে। রাহুলও কথা দেয়, যাদের জন্য আজ এই সুন্দর পৃথিবীতে ও বেঁচে আছে, হেসে খেলে বেড়াচ্ছে, তাদের মন থেকে কৃতজ্ঞতা আর ধন্যবাদ জানাবে এর বেশি কিছু নয়।
পরের দিন সানডে রাহুল গাড়ী নিয়ে পৌঁছে যায় গড়িয়ার পূর্ব পল্লীতে। ঠিকানা মেলাতেই দেখতে পেলো ওই ঠিকানায় একটা ছোট্ট ছিমছাম দোতালা বাড়ি। কাছের একটা চা সিগারেটের দোকান, এক কাপ চা নিয়ে দোকানদারের সাথে গল্প করতে করতে জেনে যায় রাহুল। ওই বাড়ির একতালার ভাড়াটে স্বামী স্ত্রী অরুণ আর সোমা। খুবই দুঃখের সঙ্গে জানালো দোকানদার এই কয়েক মাস হোলো স্বামীটি একটা বাইক এক্সিডেন্টে মারা গেছে। বিধবা স্ত্রী সোমা এখন এখানে একলাই থাকে।
আর বেঁচে থাকার জন্য কাছেই মেট্রোপলিস মলে একটা মেয়েদের ড্রেসের শোরুমে সেলস গার্লের চাকরী করছে। রাহুল ভাবলো যাক এক দিনে যথেষ্ট ইনফর্মেশন পাওয়া গেছে। সেদিন ফিরে আসে রাহুল। ভাবতে থাকে স্বামী হারা একটি মেয়ে এই পৃথিবীতে একাই সংগ্রাম করে চলেছে।
ভাবতেই দুঃখে রাহুলের বুকটাতে একটা মোচড় দিয়ে ওঠে।
পরের দিন সোমবার নিশ্চয়ই আজ সোমা মলে যাবে ডিউটিতে। রাহুল গাড়ী নিয়ে সকাল দশটার মধ্যেই পৌঁছে যায় গড়িয়ার পূর্বপল্লীতে। গাড়ীতেই বসে থাকে রাহুল। খানিকক্ষণ বাদেই দেখতে পায় একটি মেয়ে খুব সুন্দর করে শাড়ি পরা হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে মাথা নিচু করে বেড়িয়ে এলো, হনহন করে বাস স্ট্যান্ডের দিকে চলে গেলো। এক ঝলক মেয়েটির মুখটা দেখতে পেয়েছে রাহুল। মিষ্টি মুখটাতে বিষাদের ছায়া,
সব কিছু হারিয়ে যেন চোখ দুটোতে
শুধুই শুন্যতা।
এক দিন সোমাকে ফলো করে মেট্রোপলিস মলে ও যে বুটিকটাতে সেলস গার্ল সেই শোরুমটাও দেখে এসেছে রাহুল। ভরসা পায়নি সোমার সামনে যেতে। এই ভাবেই বেশ কয়েক দিন কেটে যায়।
সোমার আজকাল কিছুই ভালো লাগে না। অরুণ চলে যাবার পর পৃথিবীটাই ওর কাছে শুন্য হয়ে গেছে। বেঁচে থাকতে হয় তাই একটা সেলস গার্লের চাকরি জোগাড় করে নিয়েছে। সোমা আর অরুণ দুজনে দুজনকে অসম্ভব ভালোবাসতো। এখনো সোমার মন জুড়ে অরুণ আর অরুণ। অরুণ নেই তার মধ্যে তবুও একটু ভালোলাগে ভাবতে, কেউ একজনতো আছে যার বুকের মধ্যে ওর অরুণের হৃদয় এখনো বেঁচে আছে। কে জানে কে সেই মানুষটা একবার দেখতে পেলে তার বুকে হাত বুলিয়ে অনুভব করত ওর অরুণের হৃদয়কে।
আজ কাল সোমা লক্ষ করছে, কয়েক দিন থেকে একটি গাড়ী ওদের বাড়ির কাছেই দাঁড়িয়ে থাকে। গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটিও খুবই হ্যান্ডসাম। বড় ঘরের ছেলে বলেই মনে হয়। সানগ্লাস পরা থাকলেও সোমা বুঝতে পারে ওকেই দেখছে। আজকাল ওর বুটিকের সামনেও ছেলেটিকে দেখতে পায় সোমা। দু একবার ছেলেটির চোখে চোখ পড়েছে সোমার। কেন জানি ছেলেটির চোখে সোমা কোনো খারাপ কিছু উপলব্ধি করে নি। ভাবে কি চায় ছেলেটি ওর কাছে।
হটাৎ করে রাহুল সোমার সামনে যেতে চাইছে না, কি জানি কি ভেবে বসবে।
ইতি মধ্যে রাহুল বাবার সাথে কাজে
যোগ দিয়েছে। নাঃ এবার সোমার সাথে দেখা করে কথা বলতেই হবে, ওর জীবন দানের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাতেই হবে। মনস্থির করে অফিসে বসেই সোমার নাম্বারে একটা মেসেজ করে রাহুল। লেখে, আপনি আমাকে চিনবেন না, আমি সেই সৌভাগ্যবান যে আপনার স্বামীর হার্ট বুকে নিয়ে নতুন জীবন পেয়েছি। আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানানোর একটা সুযোগ চাইছি আপনার কাছে। আজ বিকেল ছটার সময় আমি মেট্রোপলিস মলের ফুড কোর্টে আপনার জন্য অপেক্ষা করব। আশা করি নিরাশ করবেন না।*** ঠিক দুপুর একটার সময় সোমাদের আধঘন্টার জন্য লাঞ্চ ব্রেক। বাড়ি থেকে আনা টিফিন বক্সটা খুলতে যাবে ঠিক সেই সময় সোমার মোবাইলে এস এম এসের টোন। অবাক হয়ে ভাবে সোমা ওকে কে এখন মেসেজ করছে। মোবাইলটা হাতে নিয়ে মেসেজ ওপেন করে মেসেজটা পড়ে সোমা আরো অবাক
হয়ে যায়। রাহুল সেনের মেসেজ। এই তাহলে সেই মানুষ যাকে সোমা অরুনের হার্ট ডোনেট করেছে। ওর সাথে দেখা করে কৃতজ্ঞতা জানাতে চায়। মেসেজটা পড়ে সোমাও মনে মনে খুশি হয়। ও নিজেওতো চাইছিল দেখতে সেই মানুষটাকে যার বুকে বেঁচে আছে ওর অরুণের হৃদয়।
মেট্রোপলিসের ফুড কোর্টটা থার্ড ফ্লোরে আর সোমাদের বুটিক শোরুমটা ফার্স্ট ফ্লোরে। তাই সাড়েপাঁচটা বাজতেই সোমা ফ্রেস রুমে যেয়ে ফ্রেস হয়ে, একটু টিপটপ করে নেয় নিজেকে। আয়না দিয়ে কপালের টিপ টাকে ঠিক করতে করতে সোমা নিজেই কেমন আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছে। কেন জানি হটাত মনটা খুব ভালো লাগছে। তাহলে কি অলখ্যে ওর অরুণ ওকে ডাকছে?। ঘড়িতে দেখে ছটা বেজে পাঁচ মিনিট। এস্কালেটরে উঠে যায় ফোর্থ ফ্লোরে। ফুড কোর্টে ছড়ানো ছিটানো ভাবে বসে আছে কয়েক জন। সোমা ভাবে কি করে ও চিনবে রাহুল সেন কে? হটাতই চোখ পড়ে যায় কোণের টেবিলে। সেই ছেলেটি যে এই কয়েক দিন ধরে ওকে শ্যাডো করেছে। এখানেও বসে আছে? খুব রাগ হয়ে যায় সোমার। রাগে নিজেকে ধরে রাখতে পারে না সোমা। সোজা কোণার টেবিলের সামনে যেয়ে রাহুলের চোখে চোখ রেখে রাগত ভাবে বলে, কি ব্যাপার বলুনতো? কয়েক দিন ধরে দেখছি আপনি আমাকে ফলো করছেন। কি চান আপনি? রাহুল আগেই সোমাকে দেখতে পেয়েছিল, বুঝতে পারেনি সোমা হটাত রেগেমেগে ওর সামনে এসে ওকে চার্জ করবে। সোমার কথা শুনে শশব্যস্ত হয়ে রাহুল উঠে দাঁড়ায়। হাত জোড় করে বলে, না না কিছু মনে করবেন না, কয়েক দিন ধরে চেষ্টা করছিলাম আপনার সাথে কথা বলার জন্য। আমি রাহুল সেন, আমি আপনাকে মেসেজ করেছিলাম। শুনে সোমাতো আকাশ থেকে পড়লো , সেকি ছিছি কি লজ্জা বলুনতো, কি সব বলে ফেললাম আপনাকে, বলে জিভ কাটে সোমা। এবার লজ্জা পাওয়ার পালা রাহুলের, বলে নানা আমি কিছু মনে করিনি।বসুন বসুন। রাহুল দু কাপ কফির অর্ডার দিয়ে বলে, আমি জানি আপনার নাম সোমা দেবী, আমি আপনার কাছে সারা জীবন কৃতজ্ঞ হয়ে থাকবো, এই যে আমি এখন আপনার সামনে বসে আছি এই জীবনটা আপনারই দেয়া। সে দিন অনেক দুঃখের মাঝেও আপনি যে আপনার স্বামী অরুণ বাবুর হার্ট আমাকে ডোনেট করে আমাকে নতুন জীবন দান করেছিলেন সেটা শুধু মাত্র কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পরিশোধ করা যায় না। সোমা অনেক্ষণ রাহুলের কথা শুনে হটাতই রাহুলের হাত দুটো ধরে ঝড়ঝড় করে কেঁদে ফেলে বলে না না আপনি নন আমি কৃতজ্ঞ আপনার কাছে। আপনি বুকে করে আমার অরুণের চিহ্ন ধরে রেখেছেন। আপনার হাতটা ছুঁয়ে আমি যেন আমার অরুণের ছোঁয়া পাচ্ছি।
আপনার কাছে আমার একটা অনুরোধ আমি কি মাঝে মাঝে আপনার দেখা পেতে পারি? আমি ভাবতে পারবো আমার অরুন চিরকালের জন্য হারিয়ে যায় নি, আমার কাছে কাছেই আছে। সোমার দুচোখ ভরা জল আর ব্যাকুলতা রাহুলের মনটাকে এমন ভাবে নাড়া দিচ্ছিল, কিছুতেই নিজেকে ঠিক রাখতে পারছিল না। সোমার হাত দুটো দু হাতে চেপে ধরে রাহুল বললো আমি কথা দিচ্ছি আমি আপনার কাছে আসবো, যখনি আপনি ডাকবেন। তারপর কোথা দিয়ে এক ঘন্টা কেটে যায় মেট্রোপলিস মলের ফুড কোর্টে দুজনে বুঝতেই পারে নি।
সেদিন সোমাকে রাহুল নিজের গাড়িতে বাড়ি পৌঁছিয়ে দিয়েছিল।
এই ভাবে দিন কেটে যায়, সোমার নিঃস্ব জীবনে রাহুল যেন আকাশ ভাঙা বৃষ্টির মত, ওর শুকিয়ে যাওয়া মন আবার ভরে উঠছে সবুজ রঙে। আজকাল পাড়ার সবাই লক্ষ করে দেখেছে সব কিছু হারিয়ে ফেলা বিমর্ষ মেয়েটা আবার আগের মত হাসিখুশি হয়ে উঠছে। আবার সুন্দর করে সাজগোজ করে বেড়োচ্ছে। যেদিন রাহুলের সাথে দেখা হওয়ার কথা সে দিন সকাল থেকে মনটা কেমন হালকা মেঘের মত নীল আকাশে পাখনা মেলা বলাকার মত উড়ে বেড়ায়। দুজনে মিলে অফিসের পরে ঘুরে বেড়ায় সারা কলকাতা শহর কখনো নিকো পার্ক কখনো ইকো পার্ক। কখনো বা গঙার পাড়। কখন যে ওরা দুজনে দুজনের কাছে আপনি থেকে তুমি হয়ে গেছে বুঝতেও পারেনি । রাহুল লক্ষ্য করে দেখেছে সোমা রাহুলকে যখনই নির্জনে একলা পায়, রাহুলের সার্টের বোতাম খুলে ওর কানটা চেপে ধরে রাহুলের বা দিকের বুকে, রাহুলের হার্টের শব্দ শোনে চোখ বুঁজে, মুখে ফুটে ওঠে ভালো লাগার একটা তৃপ্তির আবেশ। মাঝে মাঝে বুকে মাথা চেপে রেখে ফিসফিস করে বলে দেখেছ রাহুল তোমার বুকের মধ্য থেকে আমার অরুন খালি আমার নাম করছে। তারপর দু হাতে রাহুল কে জড়িয়ে ধরে রাহুলের বুকে মুখ গুঁজে অনেকক্ষণ চুপ করে থাকে। রাহুল ঠিক বুঝতে পারে না তখন সোমা ওকে জড়িয়ে ধরে আছে না কল্পনায় অরুণকে জড়িয়ে ধরে আছে। রাহুল আরো লক্ষ্য করে দেখেছে নির্জনতায় রাহুলকে আদর করতে করতে অজান্তেই সোমা কতবার রাহুলকে অরুণ বলে ডেকেছে। বুঝতে পারে আজ রাহুল সোমার কাছে যতটা না রাহুল তার থেকেও বেশি অরুণ।
এই ব্যাপারটা আজ কাল সোমাকেও ভাবাচ্ছে, যখনি রাহুলের কাছে যায় ওর কাছে রাহুল হয়ে যায় অরুণ। বুঝতে পারে অরুণের প্রতি ওর ভালোবাসা এত ডিপ রুটেড যা ও মন থেকে কোনো দিনই ঝেড়ে ফেলতে পারবে না বা অন্য কোনো ছেলের ভালোবাসা ওর মনে অরুণের জায়গাটা নিতে পারবে না। এটা এক ধরনের সাইকিক ফেজ অফ মাইন্ড।
তাই মাঝে মাঝে যখন সোমা একা থাকে মনটাকে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করে। সত্যি কি ও ধীরে ধীরে রাহুলের প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়ছে? নাকি রাহুলের মধ্যে ওর মন ওর হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা অরুণকে খুঁজে পায় তাই রাহুলের প্রতি ওর এত আকর্ষণ?
বুঝতে পারে সোমা ওদের দুজনের এই সম্পর্ক টা ঠিক নরমাল সম্পর্ক হয়ে উঠছে না। ভবিষ্যৎ এ দুজনের কেউ সুখী হতে পারবে না। অনেক ভেবে সোমা একটা ডিসিশনে আসে, এই সম্পর্ক থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে।
কষ্ট হয় রাহুলের জন্য, ওর তো কোনো দোষ নেই, ওতো সত্যিই ভালোবাসে সোমাকে। তাও বর্তমানের আঘাত ভবিষ্যতের অনেক বড় আঘাতের থেকে বাঁচিয়ে দেবে ওকে। অল্প দিনের পরিচয় ঠিক এক দিন ভুলে যেতে পারবে ওকে। চোখ দুটো জলে ভরে আসে সোমার, রাহুলকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবতে, ওর বুকের মধ্যেইতো সোমার অরুণ বেঁচে আছে। তাও কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি হতেই হবে সোমাকে।
দুদিন রাহুল খুবই বিজি ছিলো বিজনেসের কাজে ঠিক মত সোমার খবর নেয়া হয় নি। কয়েকবার ফোন করেছিল, সুইচড অফ। একটু অবাকই হয় রাহুল। এমনত হবার নয়। সোমার দিক থেকেও কোনো সাড়া না পেয়ে সেদিন গাড়ী নিয়ে সোজা পৌঁছে যায় সোমার ফ্ল্যাটে। দেখে তালা বন্ধ, চিন্তিত হয়ে ফিরে আসবে হটাত অই বাড়ির দোতালা থেকে এক মহিলা রাহুলকে দাঁড়াতে বলে নেমে এলো। বললো আপনি সোমাকে খুঁজছেন? রাহুল ঘাড় নাড়তেই মহিলা যা বললেন শুনে রাহুলের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেল।
তিন দিন আগেই নাকি সোমা সমস্ত ডিউজ মিটিয়ে ফ্ল্যাট ছেড়ে দিয়েছে। কোথায় গেছে কেউ জানে না। শুধু কোনো একজন রাহুল সেনের নামে একটা মুখ বন্ধ খামে চিঠি রেখে গেছে, অনুরোধ করে গেছে রাহুল আসলে চিঠিটা দিতে। রাহুল নিজের পরিচয় দিতে মহিলা ঘর থেকে খামটা এনে রাহুলের হাতে দিল। এত বড় একটা শক রাহুলের মনটাকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে। চিঠিটা হাতে নিয়ে কোনো মতে গাড়ীতে বসে, আস্তে আস্তে চলে গেলো গঙ্গার পারে। একটা বেঞ্চিতে বসে চিঠিটা খোলে রাহুল। দেখে সুন্দর গোটগোট করে মেয়েলি হাতের লেখায় সোমা লিখেছে। " রাহুল আমি জানি আমাকে তুমি কখনোই ক্ষমা করতে পারবে না, তাও আমাকে তোমার কাছ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিতে হচ্ছে। কারণ আমি বুঝতে পারছিলাম আমি তোমার মধ্যে অরুণকেই সব সময় খুঁজে পাচ্ছিলাম। তুমি আর অরুণ আমার কাছে একই শরীরে দুটো অস্তিত্ব হয়ে উঠছিলে। আমি জানি তুমিও মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যেতে যখন তোমাকে আদর করতে করতে অরুণ অরুণ বলে ডাকতাম। আমি তোমাকে পেয়ে যেমন বিষণ্ণ পৃথিবী থেকে আলোয় ঝলমল ফুলে ফুলে ভড়া জীবনে ফিরে এসেছিলাম তেমনি আবার আমার মনটা একটা সাইকিক ফেজে ঢুকে যাচ্ছিল। রাহুল আর অরুণ আমার কাছে মিলেমিশে এক হয়ে যাচ্ছিল। এতে আমি যে তোমাকে কোনো দিনই সুখী করতে পারব না সেটা আমি বুঝতে পেরেছি। তাই ভবিষ্যৎ এ তোমাকে অনেক বড় দূঃখ দেয়ার থেকে আমি নিজেকে তোমার থেকে অনেক দূরে নিয়ে যাচ্ছি। তোমাকে আমি খুব ভালোবাসি রাহুল, অরুণ চলে যাওয়ার পর তুমি আমার জীবনের মরুভূমিতে জল সিঞ্চন করে আবার সবুজ করে ফুলে ফুলে ভড়িয়ে দিয়েছো। কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তোমার ভালোবাসাকে ছোট করব না। জেনো যেখানেই থাকবো তোমার আর অরুণের ভালোবাসা নিয়ে ভালোই থাকবো। তুমিও ভালো থেকো সোনা। "
চিঠিটা পড়তে পড়তে রাহুলের দুচোখ ভড়ে ওঠে জলে একদম শেষে সোমার নামটা কেমন ঝাপসা হয়ে যায় ওর চোখে। চিঠিটা হাতে নিয়ে চোখ তুলে তাকায় রাহুল, সন্ধ্যা হয়ে গেছে, দূরে দ্বিতীয় হুগলী সেতুর মাথায় সূর্য অস্ত যাচ্ছে, পশ্চিম আকাশ লালে লাল হয়ে উঠছে, সামনে গঙ্গা নদীর জল যেন রাহুলের বুকের বাঁধ ভাঙ্গা রক্তে রক্ত নদী হয়ে যাচ্ছে।
কোন মতে নিজেকে সামলে নিয়ে উঠে দাঁড়ায় রাহুল। মাথা নিচু করে আস্তে আস্তে হেটে গাড়িতে গিয়ে বসে গাড়িতে স্টার্ট দেয় ।********
 
আমার মতে এই বড়ো গল্প গুলো পার্ট 1 এর A,b,c করে দেওয়া যেতে পারে। এই রকম পার্ট 2,3,4 এর করে দেওয়া যেতে পারে।। তাতে তোমার সময় বাঁচবে আর আমাদেরও পড়তে সুবিধা হবে।। আর গল্পটা ভালো হয়েছে এটার ধারাবাহিক কবে আসবে
তুমি ঠিকই বলেছো । এবার থেকে গল্প বড় হলে ক্রমশ করে পোস্ট করবো ।থ্যাংকস ফর সাজেশন ।
 
Top