**** ঝাপু ****
কুরিয়ারে একটা বিয়ের চিঠি আমারই নামে, সই করে নিলাম, ওপরে লেখা ফ্রম Mr & Mrs ,Basu
অবাক হয়ে ভাবছিলাম কে হতে পারে, খুলে দেখি জয়ন্ত বাসু আর
অনিমা বাসুর বড় মেয়ে তনিমার বিয়ের চিঠি। চোখ দুটো আটকিয়ে গেলো অনিমার নামটাতে।
সিনেমার ফ্ল্যাশ ব্যাকের মতো মনটা চলে গেলো পঁচিশ বছর পেছনে।
আমি আর সন্তোষ তখন হরিহর আত্মা বন্ধু। কাছাকাছি বাড়ি, এক সাথে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ি। বিকেল হলেই দুই বন্ধু মিলে সারা কলকাতা
চষে বেড়াতাম, তারপর সন্তোষের ঘরে বসে আড্ডা। ওদের বাড়ীতেই প্রথম দেখেছিলাম অনিমাকে।
সন্তোষের কাছেই শুনেছিলাম ওর ডাক নাম ঝাপু। রোজই আসতো সন্তোষের বোনের কাছে। ছিপছিপে মিষ্টি একটা মেয়ে। ওকে দেখলেই বুঝতে পারতাম আমার ব্লাড প্রেশার বেড়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে সন্তোষের সাথে কথা বলতে আমরা যেখানে
গল্প করি সেখানেও আসতো। সন্তোষের সাথে কিছুক্ষন গল্প করে চলে যেত, আমাকে কোনো
পাত্তাই দিত না। আমি অনেক কষ্ট করে নিজেকে সপ্রতিভ রাখার চেষ্টা করতাম। এই ভাবে দিন কেটে যাচ্ছিল। একদিন সন্তোষ আমাকে বললো বিকেল পাচটার সময় প্রাচী সিনেমার সামনে থাকতে, ও আসলে দুজনে মিলে ঘুরতে বেড়বো। যথা সময়ে বাসে করে যাচ্ছি, শিয়ালদা এলে নামতে যাচ্ছি, হটাৎ পেছন থেকে আমার সার্ট ধরে টান,আর একটি মেয়ের গলা....আমি আগে নামবো।
তাকিয়ে দেখি ঝাপু,মুখে এক গাল মিষ্টি হাসি। দুজনেই বাস থেকে নেমে হাটছি, হটাৎ জিগ্যেস করলো, আপনি কোথায় যাবেন? আমি বললাম প্রাচী সিনেমার সামনে,শুনেই কেমন ঝলমল করে উঠলো ওর মুখ, আরে আমিওতো ওখানেই যাচ্ছি। আপনি কার সাথে দেখা করতে যাচ্ছেন? আমি বললাম সন্তোষ ওখানে আসবে। শুনে অবাক হয়ে বললো আমাকেওতো সন্তোষদাই এখানে আসতে বলেছে। অনেকক্ষণ দুজনে প্রাচীর সামনে অপেক্ষা করেছিলাম। সন্তোষ কিন্তু সেদিন আমাদের কাছে আসেনি। বরং সেদিন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল দুটি মনের কাছাকাছি আসার শুভলগ্ন। ওখান থেকেই আমরা দুজনে চলে গিয়েছিলাম ভিক্টোরীয়া মেমোরিয়ালে। কত গল্প, ফুচকা খাওয়া। চুপচাপ পাশাপাশি বসে কোনো কথা না বলে অনেক কথা বলা।
আজ এতদিন বাদেও সেই অনিমার সাথে আমার প্রথম দিনের স্মৃতি একটুও মুছে যায়নি মন থেকে।
তারপর গঙ্গা দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল, হাজার সূর্য অস্ত গেছে পশ্চিম আকাশে। দুজনে মিলে ময়দানের ট্রাম রাস্তা ধরে হাত ধরে হেটে বেড়ানো,নিউ মার্কেটে ভীরের মাঝে হারিয়ে যাওয়া আর গঙ্গার বুকে নৌকোর মাঝে দুজনে দুজনের
কাছে কত অঙ্গীকার।
পারিনি ধরে রাখতে অনিমাকে। সংসারের নিয়ম মেনে একদিন সানাই বাজা সন্ধ্যায় ফুলের সাজে
সালংকারা আমার অনিমা সিঁথিতে তুলে নিয়েছিল আর এক জনের হাতের সিঁদুর।
আজ এত দিন পরে ওর মেয়ের বিয়ের নিমন্ত্রণ পত্রে অনিমার নাম
টা দেখে, মনে পরে গেলো, ওর
ডাক নামটা..... ঝাপু।
কুরিয়ারে একটা বিয়ের চিঠি আমারই নামে, সই করে নিলাম, ওপরে লেখা ফ্রম Mr & Mrs ,Basu
অবাক হয়ে ভাবছিলাম কে হতে পারে, খুলে দেখি জয়ন্ত বাসু আর
অনিমা বাসুর বড় মেয়ে তনিমার বিয়ের চিঠি। চোখ দুটো আটকিয়ে গেলো অনিমার নামটাতে।
সিনেমার ফ্ল্যাশ ব্যাকের মতো মনটা চলে গেলো পঁচিশ বছর পেছনে।
আমি আর সন্তোষ তখন হরিহর আত্মা বন্ধু। কাছাকাছি বাড়ি, এক সাথে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ি। বিকেল হলেই দুই বন্ধু মিলে সারা কলকাতা
চষে বেড়াতাম, তারপর সন্তোষের ঘরে বসে আড্ডা। ওদের বাড়ীতেই প্রথম দেখেছিলাম অনিমাকে।
সন্তোষের কাছেই শুনেছিলাম ওর ডাক নাম ঝাপু। রোজই আসতো সন্তোষের বোনের কাছে। ছিপছিপে মিষ্টি একটা মেয়ে। ওকে দেখলেই বুঝতে পারতাম আমার ব্লাড প্রেশার বেড়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে সন্তোষের সাথে কথা বলতে আমরা যেখানে
গল্প করি সেখানেও আসতো। সন্তোষের সাথে কিছুক্ষন গল্প করে চলে যেত, আমাকে কোনো
পাত্তাই দিত না। আমি অনেক কষ্ট করে নিজেকে সপ্রতিভ রাখার চেষ্টা করতাম। এই ভাবে দিন কেটে যাচ্ছিল। একদিন সন্তোষ আমাকে বললো বিকেল পাচটার সময় প্রাচী সিনেমার সামনে থাকতে, ও আসলে দুজনে মিলে ঘুরতে বেড়বো। যথা সময়ে বাসে করে যাচ্ছি, শিয়ালদা এলে নামতে যাচ্ছি, হটাৎ পেছন থেকে আমার সার্ট ধরে টান,আর একটি মেয়ের গলা....আমি আগে নামবো।
তাকিয়ে দেখি ঝাপু,মুখে এক গাল মিষ্টি হাসি। দুজনেই বাস থেকে নেমে হাটছি, হটাৎ জিগ্যেস করলো, আপনি কোথায় যাবেন? আমি বললাম প্রাচী সিনেমার সামনে,শুনেই কেমন ঝলমল করে উঠলো ওর মুখ, আরে আমিওতো ওখানেই যাচ্ছি। আপনি কার সাথে দেখা করতে যাচ্ছেন? আমি বললাম সন্তোষ ওখানে আসবে। শুনে অবাক হয়ে বললো আমাকেওতো সন্তোষদাই এখানে আসতে বলেছে। অনেকক্ষণ দুজনে প্রাচীর সামনে অপেক্ষা করেছিলাম। সন্তোষ কিন্তু সেদিন আমাদের কাছে আসেনি। বরং সেদিন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল দুটি মনের কাছাকাছি আসার শুভলগ্ন। ওখান থেকেই আমরা দুজনে চলে গিয়েছিলাম ভিক্টোরীয়া মেমোরিয়ালে। কত গল্প, ফুচকা খাওয়া। চুপচাপ পাশাপাশি বসে কোনো কথা না বলে অনেক কথা বলা।
আজ এতদিন বাদেও সেই অনিমার সাথে আমার প্রথম দিনের স্মৃতি একটুও মুছে যায়নি মন থেকে।
তারপর গঙ্গা দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল, হাজার সূর্য অস্ত গেছে পশ্চিম আকাশে। দুজনে মিলে ময়দানের ট্রাম রাস্তা ধরে হাত ধরে হেটে বেড়ানো,নিউ মার্কেটে ভীরের মাঝে হারিয়ে যাওয়া আর গঙ্গার বুকে নৌকোর মাঝে দুজনে দুজনের
কাছে কত অঙ্গীকার।
পারিনি ধরে রাখতে অনিমাকে। সংসারের নিয়ম মেনে একদিন সানাই বাজা সন্ধ্যায় ফুলের সাজে
সালংকারা আমার অনিমা সিঁথিতে তুলে নিয়েছিল আর এক জনের হাতের সিঁদুর।
আজ এত দিন পরে ওর মেয়ের বিয়ের নিমন্ত্রণ পত্রে অনিমার নাম
টা দেখে, মনে পরে গেলো, ওর
ডাক নামটা..... ঝাপু।