Bose Arun
Favoured Frenzy
***** ছন্দ *****
@@ @@
হটাৎ হটাৎ যেন শুনতে পাই কেউ একজন আমাকে ডাকছে, দাদু, কি করছো। চমকে যাই, তারাতারি মোবাইলের ফেসবুকের ইনবক্স খুলে দেখি, আমার নাতনি কি না। না কেউ কোথাও নেই। অনির নামের পাশে নেই কোনো সবুজ আলো, আর নেই কোনো লেখা। বুকের ভেতরটা মোচর দিয়ে ওঠে। নামটার দিকে তাকিয়ে থাকি, চোখ দুটো কে বাগ মানাতে পারি না, জলে ভরে ওঠে।
এইতো কয়েক দিন আগেও, রাত এগারোটা বেজে গেছে, মেসেঞ্জারে ওর কথা আর শেষ হয় না, আমি যত বলি তারাতারি ঘুমোবার জন্য, কার কথা কে শোনে, খালি মেসেঞ্জারে ভিডিও কল, আর একই কথা, দাদু তোমার মুখ দেখবো। আজ তোমাকে মুখ দেখাতেই হবে,যতক্ষণ না দেখাবে তোমাকে ঘুমাতে দেবো না। ছেলেমানুষ আর কাকে বলে। অম্লান বদনে বলে দেয়, দাদু আই লাভ ইউ। ইস তুমি যদি জেঠুর মত বড় না হয়ে আমার বয়েসী হতে, তাহলে... তাহলে আমি তোমাকেই বিয়ে করতাম।
ওর কথা শুনে আমি হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারি না। ও কিন্তু বেশ ভালো করেই জানে আমার ছেলে ওর থেকে বড়। মাঝে মাঝে বলে, দাদু তোমার ছেলের বিয়েতে আমাকে নেমন্তন্ন করবে? তারপর ছেলের বিয়ে হয়ে গেলে আমার কাছে এসে থাকবে। সত্যি ওকে নিয়ে আর পারা যায় না।
ভালো নাম অনন্যা বসু, রাজার হাটে অনেক দিনের নিবাস। আধুনিক প্রযুক্তি তে সরগর। ফেসবুকে ওর খুব পপুলার একটা গ্রুপ আছে প্রথম জীবনের আলো। এসব জানতে পেরেছি অনির কাছ থেকেই। আসলে আমারও অনেক দিন থেকেই কিছু গল্প কবিতা লেখার পাগলামী আছে, ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে আমার লেখা প্রকাশিত হয়। সেই সুবাদেই অনন্যার সাথে আমার ফ্রেন্ডশিপ। অসম বয়েসী দুটি মনের বন্ধুত্ব। রোজ কথা হয় মেসেঞ্জারে। একদিন আমি অনিকে বললাম শোনো অনি তুমি আমার থেকে অনেক অনেক বয়েসে ছোট, আমি তোমার দাদুর বয়েসী, আমার ছেলেই তোমার থেকে বড়।তাই এখন থেকে তোমাকে তুই করে বলবো। শুনে সেকি হাসি, হি হি হি, তুমি তাহলে আমার দাদু হলে, উফফ তোমাকে দাদু বলে ডাকবো। বাইরের কেউ বুঝতে পারবে না তোমার আমার কি সম্পর্ক। দাদুরাতো নাতনিদের খুব আদর করে, তুমি আমাকে আদর করবে?
উফ কি মেয়েরে বাবা মুখে কিছুই আটকায় না। ওর গ্রুপটা খুব পপুলার ফেসবুকে কারণ খুব সুন্দর ভাবে রোজ কয়েকটা ইভেন্ট থাকে, আর ইভেন্ট গুলো অনিই কন্ডাক্ট করে। তার মধ্যে ছন্দমিল ইভেন্ট টা মেম্বারদের খুব প্রিয় আর পছন্দের । দুটো কবিতার লাইন দেয়া থাকবে, ছন্দ এবং থিম মিলিয়ে পরের দুটো লাইন লিখতে হবে। হটাৎ একদিন রাতে মেসেঞ্জারে গল্প করতে করতে নাতনির আব্দার হলো, এবার থেকে ওর ছন্দমিলের প্রথম দুলাইন আমাকে লিখে দিতে হবে। সেই দুলাইন দিয়ে সুন্দর করে ব্যানার বানিয়ে ও গ্রুপে পোস্ট করবে। সেই থেকে শুরু হলো আমার সত্যিকারে নাতনির বয়েসী একটি মেয়ের সাথে আমার ছেলেমানুষী খেলা। আমার ওপর ওর অর্ডার ছিলো সারা দিন আমার মোবাইলে মেসেঞ্জার ওপেন রাখতে হবে। তাই রাখতে হতো। সারা দিনে কতবার যে মোবাইলে টুংটাং আওয়াজ হতো,আর খুলে দেখলেই দেখতাম অনির হাসিমুখ আর লেখা, কি গো দাদু কি করছো? খেয়েছো? রাতে আসছি ঘুমোবেনা কিন্তু, আদর খাবো তোমার কাছে। কি জানি কেন আমারো খুব ভালো লাগতো ওর এই খুনশুটি আর আব্দার গুলো, বয়স্ক মনটা খুশিতে ভরে উঠতো। বিগত যৌবন একজন বয়স্ক মানুষের মনের গহীন কোণেও যে যৌবনের শেষ হয়ে যাওয়া কামনা বাসনার শিকর থেকে যায় আমার ধারনা ছিল না, অনির ভার্চুয়াল সঙ্গ আমার সেই কামনার শিকরকে যেন জীবিত করে ধীরে ধীরে পল্লবিত করে তুলছিল। আমার বহুদিন আগে দেখা একটা হিন্দি সিনেমার কথা মনে পরে যায়৷ সিনেমাটার নাম ছিলো " নিঃশব্দ " অমিতাভ বচ্চন আর জিয়া খান। বৃদ্ধ অমিতাভের মেয়ের বান্ধবী জিয়া খান বৃদ্ধ অমিতাভের প্রেমে পাগোল হয়েছিল। অসম বয়েসী দুটো মনের চাহিদা কামনা বাসনার টানাপোড়েন। আজ আমিও সেই টানাপোড়েনের পাতলা সুতোর ওপরে দাঁড়িয়ে আছি।
এখন শীতকাল কয়েক দিন হয় খুব ঠান্ডা পরছে। রাতে মেসেঞ্জারে গল্প করতে করতে হটাৎ নাতনির আব্দার, বলে, দাদু খুব শীত করছে শিগগির আমার লেপের নিচে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরো, আমি ঠান্ডায় জমে যাচ্ছি। তোমার বুকে মাথা রেখে আমি ঘুমোবো দাদু। বলতে বাঁধা নেই ওর থেকে অনেক দূরে এই শীতের রাতে একলা বিছানায় শুয়ে লেপের নিচে কল্পনায় ওকে জড়িয়ে ধরে এই বয়স্ক মানুষটাও কামনার ওমে আচ্ছন্ন হয়ে যেত। এই ভাবে দিন কেটে যায়, ওর কত রকম ছবি একটার পর একটা পাঠিয়েছে আমাকে।
মাঝে মাঝে বলতো ওর দাদারা পছন্দ করে না ওর এই ফেসবুক প্রীতি। তাই আমাকে অনেক সময় বলতো, দাদু জানি না কত দিন আমি আর ফেসবুকে থাকতে পারবো, হয়তো একদিন দেখবে আমি তোমার কাছ থেকে হারিয়ে গেছি। দাদুগো আমাকে তখন ভুলে যাবে না তো? তোমার এই আদরের নাতনি টা তোমাকে খুব খুব ভালোবাসে, তুমি ভুলে গেলে আমি খুব কষ্ট পাবো দাদু।
ওতো বুঝতে পারে না অসম বয়েসী দুটো মনের সম্পর্ক কখনোই চিরস্থায়ী হয় না, একদিন না একদিন সম্পর্ক টা হারিয়ে যায়, তখন সব থেকে বেশি কষ্ট পায় বয়স্ক মানুষটি।
হলোও তাই হটাৎ একদিন দেখলাম অনির মেসেঞ্জার স্তব্ধ হয়ে গেছে, কোনো সাড়াশব্দ নেই, একটার পর একটা মেসেজ আমি রেখে গেছি, কিন্তু ভাগ্য ওকে মিউট করে দিয়েছে। খুঁজতে গিয়ে দেখি আমার প্রোফাইলের ফ্রেন্ড লিস্ট থেকেও উধাও হয়ে গেছে ওর নামটা। বুঝতে পারলাম অবশেষে আমার আদরের ছোট্ট নাতনি টা আমার কাছ থেকে হারিয়ে গেছে।
এখনো সকালবেলা ঘুম ভাঙ্গতেই মোবাইলে ফেসবুকের মেসেঞ্জারটা খুলে দেখি, কিন্তু কোথাও আর খুঁজে পাই না আমার নাতনিটার হাসিমুখ আর আব্দার, দাদু ছন্দ দাও তারাতারি।
নিজের মনের মধ্যে হাতরাতে থাকি কিন্তু কোথাও আর ছন্দ খুঁজে পাই না। আমার ছোট্ট ভালোবাসা আমার ছোট্ট নাতনির সাথে যে আমার মনের ছন্দ গুলোও আমাকে ছেরে চলে গেছে।
*************************----
@@ @@
হটাৎ হটাৎ যেন শুনতে পাই কেউ একজন আমাকে ডাকছে, দাদু, কি করছো। চমকে যাই, তারাতারি মোবাইলের ফেসবুকের ইনবক্স খুলে দেখি, আমার নাতনি কি না। না কেউ কোথাও নেই। অনির নামের পাশে নেই কোনো সবুজ আলো, আর নেই কোনো লেখা। বুকের ভেতরটা মোচর দিয়ে ওঠে। নামটার দিকে তাকিয়ে থাকি, চোখ দুটো কে বাগ মানাতে পারি না, জলে ভরে ওঠে।
এইতো কয়েক দিন আগেও, রাত এগারোটা বেজে গেছে, মেসেঞ্জারে ওর কথা আর শেষ হয় না, আমি যত বলি তারাতারি ঘুমোবার জন্য, কার কথা কে শোনে, খালি মেসেঞ্জারে ভিডিও কল, আর একই কথা, দাদু তোমার মুখ দেখবো। আজ তোমাকে মুখ দেখাতেই হবে,যতক্ষণ না দেখাবে তোমাকে ঘুমাতে দেবো না। ছেলেমানুষ আর কাকে বলে। অম্লান বদনে বলে দেয়, দাদু আই লাভ ইউ। ইস তুমি যদি জেঠুর মত বড় না হয়ে আমার বয়েসী হতে, তাহলে... তাহলে আমি তোমাকেই বিয়ে করতাম।
ওর কথা শুনে আমি হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারি না। ও কিন্তু বেশ ভালো করেই জানে আমার ছেলে ওর থেকে বড়। মাঝে মাঝে বলে, দাদু তোমার ছেলের বিয়েতে আমাকে নেমন্তন্ন করবে? তারপর ছেলের বিয়ে হয়ে গেলে আমার কাছে এসে থাকবে। সত্যি ওকে নিয়ে আর পারা যায় না।
ভালো নাম অনন্যা বসু, রাজার হাটে অনেক দিনের নিবাস। আধুনিক প্রযুক্তি তে সরগর। ফেসবুকে ওর খুব পপুলার একটা গ্রুপ আছে প্রথম জীবনের আলো। এসব জানতে পেরেছি অনির কাছ থেকেই। আসলে আমারও অনেক দিন থেকেই কিছু গল্প কবিতা লেখার পাগলামী আছে, ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে আমার লেখা প্রকাশিত হয়। সেই সুবাদেই অনন্যার সাথে আমার ফ্রেন্ডশিপ। অসম বয়েসী দুটি মনের বন্ধুত্ব। রোজ কথা হয় মেসেঞ্জারে। একদিন আমি অনিকে বললাম শোনো অনি তুমি আমার থেকে অনেক অনেক বয়েসে ছোট, আমি তোমার দাদুর বয়েসী, আমার ছেলেই তোমার থেকে বড়।তাই এখন থেকে তোমাকে তুই করে বলবো। শুনে সেকি হাসি, হি হি হি, তুমি তাহলে আমার দাদু হলে, উফফ তোমাকে দাদু বলে ডাকবো। বাইরের কেউ বুঝতে পারবে না তোমার আমার কি সম্পর্ক। দাদুরাতো নাতনিদের খুব আদর করে, তুমি আমাকে আদর করবে?
উফ কি মেয়েরে বাবা মুখে কিছুই আটকায় না। ওর গ্রুপটা খুব পপুলার ফেসবুকে কারণ খুব সুন্দর ভাবে রোজ কয়েকটা ইভেন্ট থাকে, আর ইভেন্ট গুলো অনিই কন্ডাক্ট করে। তার মধ্যে ছন্দমিল ইভেন্ট টা মেম্বারদের খুব প্রিয় আর পছন্দের । দুটো কবিতার লাইন দেয়া থাকবে, ছন্দ এবং থিম মিলিয়ে পরের দুটো লাইন লিখতে হবে। হটাৎ একদিন রাতে মেসেঞ্জারে গল্প করতে করতে নাতনির আব্দার হলো, এবার থেকে ওর ছন্দমিলের প্রথম দুলাইন আমাকে লিখে দিতে হবে। সেই দুলাইন দিয়ে সুন্দর করে ব্যানার বানিয়ে ও গ্রুপে পোস্ট করবে। সেই থেকে শুরু হলো আমার সত্যিকারে নাতনির বয়েসী একটি মেয়ের সাথে আমার ছেলেমানুষী খেলা। আমার ওপর ওর অর্ডার ছিলো সারা দিন আমার মোবাইলে মেসেঞ্জার ওপেন রাখতে হবে। তাই রাখতে হতো। সারা দিনে কতবার যে মোবাইলে টুংটাং আওয়াজ হতো,আর খুলে দেখলেই দেখতাম অনির হাসিমুখ আর লেখা, কি গো দাদু কি করছো? খেয়েছো? রাতে আসছি ঘুমোবেনা কিন্তু, আদর খাবো তোমার কাছে। কি জানি কেন আমারো খুব ভালো লাগতো ওর এই খুনশুটি আর আব্দার গুলো, বয়স্ক মনটা খুশিতে ভরে উঠতো। বিগত যৌবন একজন বয়স্ক মানুষের মনের গহীন কোণেও যে যৌবনের শেষ হয়ে যাওয়া কামনা বাসনার শিকর থেকে যায় আমার ধারনা ছিল না, অনির ভার্চুয়াল সঙ্গ আমার সেই কামনার শিকরকে যেন জীবিত করে ধীরে ধীরে পল্লবিত করে তুলছিল। আমার বহুদিন আগে দেখা একটা হিন্দি সিনেমার কথা মনে পরে যায়৷ সিনেমাটার নাম ছিলো " নিঃশব্দ " অমিতাভ বচ্চন আর জিয়া খান। বৃদ্ধ অমিতাভের মেয়ের বান্ধবী জিয়া খান বৃদ্ধ অমিতাভের প্রেমে পাগোল হয়েছিল। অসম বয়েসী দুটো মনের চাহিদা কামনা বাসনার টানাপোড়েন। আজ আমিও সেই টানাপোড়েনের পাতলা সুতোর ওপরে দাঁড়িয়ে আছি।
এখন শীতকাল কয়েক দিন হয় খুব ঠান্ডা পরছে। রাতে মেসেঞ্জারে গল্প করতে করতে হটাৎ নাতনির আব্দার, বলে, দাদু খুব শীত করছে শিগগির আমার লেপের নিচে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরো, আমি ঠান্ডায় জমে যাচ্ছি। তোমার বুকে মাথা রেখে আমি ঘুমোবো দাদু। বলতে বাঁধা নেই ওর থেকে অনেক দূরে এই শীতের রাতে একলা বিছানায় শুয়ে লেপের নিচে কল্পনায় ওকে জড়িয়ে ধরে এই বয়স্ক মানুষটাও কামনার ওমে আচ্ছন্ন হয়ে যেত। এই ভাবে দিন কেটে যায়, ওর কত রকম ছবি একটার পর একটা পাঠিয়েছে আমাকে।
মাঝে মাঝে বলতো ওর দাদারা পছন্দ করে না ওর এই ফেসবুক প্রীতি। তাই আমাকে অনেক সময় বলতো, দাদু জানি না কত দিন আমি আর ফেসবুকে থাকতে পারবো, হয়তো একদিন দেখবে আমি তোমার কাছ থেকে হারিয়ে গেছি। দাদুগো আমাকে তখন ভুলে যাবে না তো? তোমার এই আদরের নাতনি টা তোমাকে খুব খুব ভালোবাসে, তুমি ভুলে গেলে আমি খুব কষ্ট পাবো দাদু।
ওতো বুঝতে পারে না অসম বয়েসী দুটো মনের সম্পর্ক কখনোই চিরস্থায়ী হয় না, একদিন না একদিন সম্পর্ক টা হারিয়ে যায়, তখন সব থেকে বেশি কষ্ট পায় বয়স্ক মানুষটি।
হলোও তাই হটাৎ একদিন দেখলাম অনির মেসেঞ্জার স্তব্ধ হয়ে গেছে, কোনো সাড়াশব্দ নেই, একটার পর একটা মেসেজ আমি রেখে গেছি, কিন্তু ভাগ্য ওকে মিউট করে দিয়েছে। খুঁজতে গিয়ে দেখি আমার প্রোফাইলের ফ্রেন্ড লিস্ট থেকেও উধাও হয়ে গেছে ওর নামটা। বুঝতে পারলাম অবশেষে আমার আদরের ছোট্ট নাতনি টা আমার কাছ থেকে হারিয়ে গেছে।
এখনো সকালবেলা ঘুম ভাঙ্গতেই মোবাইলে ফেসবুকের মেসেঞ্জারটা খুলে দেখি, কিন্তু কোথাও আর খুঁজে পাই না আমার নাতনিটার হাসিমুখ আর আব্দার, দাদু ছন্দ দাও তারাতারি।
নিজের মনের মধ্যে হাতরাতে থাকি কিন্তু কোথাও আর ছন্দ খুঁজে পাই না। আমার ছোট্ট ভালোবাসা আমার ছোট্ট নাতনির সাথে যে আমার মনের ছন্দ গুলোও আমাকে ছেরে চলে গেছে।
*************************----