কলকাতা, বাংলার প্রাণকেন্দ্র, যেখানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ যাতায়াত করেন। এই শহরের গণপরিবহণ ব্যবস্থার এক অন্যতম প্রধান অঙ্গ হল বাস। যুগের পর যুগ ধরে বাস শুধুমাত্র একটি পরিবহণ মাধ্যম নয়, এটি হয়ে উঠেছে কলকাতার সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।কলকাতায় বাস পরিষেবা শুরু হয় ১৯২০-এর দশকে। তবে নিয়মিত বাস চলাচল শুরু হয় ১৯৪০-এর দশকের দিকে। ব্রিটিশ আমলে ট্রামই ছিল মূল গণপরিবহণ ব্যবস্থা, কিন্তু শহরের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কারণে বাসের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। স্বাধীনতার পর কলকাতা শহরে সরকারি এবং বেসরকারি বাস পরিষেবার প্রসার ঘটে। ১৯৬০-এর দশকে কলকাতা রাজ্য পরিবহণ সংস্থা (CSTC) এবং পরবর্তীতে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম (WBTC) গঠিত হয়।কলকাতার বাস সাধারণ মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নিত্যদিনের অফিসযাত্রী, ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ— সকলের জন্য বাস এক সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী পরিবহণ। কম খরচে দূরত্ব অতিক্রম করার জন্য এটি শহরবাসীর অন্যতম প্রধান ভরসা।এছাড়াও, কলকাতার বাসের চালক ও কন্ডাক্টরদের বিশেষ ভঙ্গি, বাসের পেছনের সিটে আড্ডা, জানালার পাশের বাতাস—সব মিলিয়ে এটি শুধুমাত্র যাতায়াত নয়, এক ধরনের অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।কলকাতার মানুষ বাসের প্রতি এক বিশেষ অনুভূতি পোষণ করেন। স্কুল বা কলেজ জীবনের প্রথম দিন থেকে অফিসযাত্রার প্রতিদিনের গল্প, প্রেমের প্রথম দেখা থেকে বন্ধুত্বের গভীর আলোচনা—সবই কখনো না কখনো বাসে বসেই ঘটে গেছে।পুরনো দোতলা বাস থেকে শুরু করে নতুন ইলেকট্রিক বাস, প্রতিটি পরিবর্তন শহরবাসীর মনে স্মৃতির ছাপ রেখে যায়। বাস শুধু একটি গাড়ি নয়, এটি কলকাতার চিরচেনা স্পন্দন, যা প্রতিদিন শহরকে বাঁচিয়ে রাখে।কলকাতার বাস শুধুমাত্র এক যানবাহন নয়, এটি শহরের সংস্কৃতি ও আবেগের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রযুক্তির সাথে সাথে যখনই নতুন নতুন বাস আসে, পুরনো বাস হারিয়ে যায়, তখন শহরবাসীর মনে এক নস্টালজিয়া সৃষ্টি হয়। কিন্তু যাই হোক, বাসের চাকা ঘুরতেই থাকে, আর সেই সাথে এগিয়ে চলে
কলকাতা ও তার অসংখ্য মানুষের জীবন।
*Notification
কলকাতা ও তার অসংখ্য মানুষের জীবন।
*Notification
