1610 সাল থেকে সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবার বড়িশায় তাদের আদি বাসভবনে দুর্গাপূজার আয়োজন করে আসছেন।এটিই সম্ভবত কলকাতার প্রাচীনতম দুর্গোৎসব। বর্তমানে এই পরিবারের সাত শরিকের বাড়িতে সাতটি দুর্গাপূজা হয়। এগুলির মধ্যে ছয়টি বড়িশায় ও একটি বিরাটিতে।1757 সালে শোভাবাজার রাজবাড়িতে নবকৃষ্ণ দেব দুর্গাপূজা শুরু করেন। তার নির্দেশিত পথেই দুর্গাপূজা পরবর্তীকালে কলকাতার ধনিক বাবু সম্প্রদায়ের মর্যাদার প্রতীক হয়ে ওঠে। শাস্ত্রাচার এই সব পূজায় গৌণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।যে পূজায় যত বেশি সংখ্যক আমন্ত্রিত ইংরেজ অতিথি উপস্থিত হতেন,সেই পূজার মর্যাদা ততই বাড়ত। দেবীপ্রতিমার সম্মুখেই মুসলমান বাইজি নাচের আসর বসত।ইংরেজরা এসে নাচগান করতেন, তাদের জন্য উইলসন হোটেল থেকে গোরু ও শূকরের মাংস আনানো হত এবং মদ্যপানের আসরও বসত।রানি রাসমণি এই প্রথার বিরুদ্ধে গিয়ে শুদ্ধাচারে তার জানবাজারের বাড়িতে দুর্গাপূজা শুরু করেন। তিনি ইংরেজ অতিথিদের চিত্তবিনোদনের বদলে তার দেশীয় প্রজাদের বিনোদনের জন্য পূজা উপলক্ষে যাত্রানুষ্ঠানের আয়োজন করতেন। ১৮৬১ সালে তার মৃত্যুর পর রানির জামাতাগণ নিজ নিজ বাসভবনে রানির প্রদর্শিত পথেই দুর্গাপূজার আয়োজন করতে থাকেন।কলকাতায় আরো অনেক বাড়িতে এই ভাবে দুর্গাপূজা শুরু হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে কলকাতায় বারোয়ারি দুর্গাপূজার সূচনা ঘটে। ১৯১০ সালে ভবানীপুরের বলরাম বসু ঘাট রোডে ভবানীপুর সনাতন ধর্মোৎসাহিনী সভার পক্ষ থেকে বারোয়ারি দুর্গাপূজা আয়োজিত হয়। এই পূজাটি আজও হয়ে আসছে। এরপর 1911 সালে শ্যামপুকুর আদি সর্বজনীন,1913 সালে শ্যামবাজারের শিকদারবাগান, 1919সালে নেবুবাগান অর্থাৎ বর্তমান বাগবাজার সর্বজনীন এবং 1926সালে সিমলা ব্যায়াম সমিতির বারোয়ারি দুর্গাপূজা শুরু হয়।