এটাই তো চাই“পথ কি তার নিজের শেষকে জানে, যেখানে লুপ্ত ফুল আর স্তব্দ গান পৌঁছাল, যেখানে তারার আলােয় অনির্বাণ বেদনার দেওয়ালি-উৎসব।”—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই ভাষ্য যেন আমার সার্থক আত্মপরিচয়। সেই কবে সূচনার কথা; আজও আমার ক্ষীণ মনে পড়ে, তবে এ কথা সত্যি আমার শেষ ঠিকানা কোথায় তা আমিও জানি না! বহু যুগ আগে ঘন জঙ্গলের বুক চিরে মানুষ আমাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। গাছগাছালির ফাকে ফাকে এই ক্রমাগত চলাতেই তাে আমার আনন্দ। এভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়াই তাে জীবন। ধুলাে-মাটি দিয়ে তৈরি আমার শরীরে কত কাল ধরে কত কিছুর প্রলেপ পড়ল। ক্রমে শক্ত-জমাট হয়ে উঠলাম আমি। তবু থামতে পারলাম কোথায়! আমার থামা বারণ, কারণ ২ আমি যে রাজপথ, পথিক মানুষের চিরসখা।আমি গ্র্যান্ড ট্যাঙ্ক রােড। আমার বিস্তৃতি ডানকুনি থেকে দুর্গাপুর এক্সপ্রেস পর্যন্ত। আমি ভারতের প্রধান জাতীয় সড়কগুলির মধ্যে একটি। আমার দু-পাশে কত গাছপালা, কলকারখানা, বাড়ি। দিনরাত অশান্ত, অস্থির মানুষ ও তার যানবাহন আমার বুকের ওপর দিয়ে ছুটে চলেছে। এক একজনের এক-একরকম ছন্দ। তাদের গতিময় ছন্দের স্রোতের ভিন্ন ভিন্ন দোলা আমার প্রাণে তােলে শিহরণ। চরৈবেতি চরৈবেতি এই তাে আমাদের মন্ত্র। তবে এভাবেই নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে বেদনায় স্নান অসহায় মানুষের পায়ের শব্দে আমি অনুভব করেছি নৈরাশ্যের কম্পন। আবার তৃপ্ত মানুষের হাঁটায় সয়েছি দম্ভ ও আত্মবিশ্বাসের অনুরণন। আর দূর থেকে আসা মানুষজন যখন পায়ে পায়ে হাঁটে, তখন তাদের রােমাঞ্চ-কৌতুহল-উদ্দীপনা যেন প্রতিটি পদসঞ্চারের তালে ফুটে ওঠে। তবে ক্লান্ত পথিক অনেক পথ চলে যখন আমার প্রান্তে কোনাে নদীর সামনে ক্ষণকালের জন্য দাঁড়িয়ে পড়ে, তখন কৌতুক ও আনন্দে আমারও থামতে ইচ্ছে হয়।মানবজীবনের মতাে আমার জীবনেও যেন তিনটি অধ্যায়-শৈশব, যৌবন ও পরিণতির কাল। আমার শৈশব হল রাজপথের পত্তনের কাল, তখন লােকজন ছিল কম, গাছপালা ছিল বেশি। তখন গাড়িঘােড়ার সংখ্যা হাতে গােনা যেত। তাই দিনে-রাতে কোনাে মানুষের পদশব্দ শুনলেই আমার শিরায় শিরায় উত্তেজনার শিহরণ অনুভূত হত। মানুষের পায়ের শব্দের অপেক্ষায় আমি অধীর হয়ে থাকতাম। তারপর দিন গেল বদলে। গাড়িঘােড়া বাড়ল, লােকজন বাড়ল, রক্তপাতে, বেদনায় কেঁপে উঠলাম আমি। প্রতিবাদ জানিয়েছি, কিন্তু কে শােনে সে কথা!আজ আমি সংকীর্ণ, জরাজীর্ণ। আমার আজ অনেক বয়স। আমার অনেক জায়গায় ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে আছে। সরকার থেকে মেরামতির প্রচেষ্টা চালানাে হচ্ছে। তবে এখনও আমার সংস্কারে তারা হাত লাগায়নি। শুনেছি আমার উপর দিয়ে একটি নতুন ওভারব্রিজ স্থাপন করা হবে। আমার জৌলুষ আজ আর নেই। আমি মৃতপ্রায় অসাড়ের মতাে কোনােরকমে টিকে আছি। এখন আমার একটাই সান্ত্বনা আমি মানুষকে ঘরের সন্ধান দিই। ধুলাে-ধোয়া-কোলাহল থেকে ঘরের স্বস্তি ও স্তব্ধতায় মানুষকে নিয়ে যাই। মানুষের বেদনা ও ভালােবাসার সঙ্গে আমার ভলােবাসা ও যন্ত্রণাও আবর্তিত হয়। এই বােধটুকুই আমি মানুষের মধ্যে সঞ্চারিত করতে চাই।View attachment 163359
“পথ কি তার নিজের শেষকে জানে, যেখানে লুপ্ত ফুল আর স্তব্দ গান পৌঁছাল, যেখানে তারার আলােয় অনির্বাণ বেদনার দেওয়ালি-উৎসব।”—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই ভাষ্য যেন আমার সার্থক আত্মপরিচয়। সেই কবে সূচনার কথা; আজও আমার ক্ষীণ মনে পড়ে, তবে এ কথা সত্যি আমার শেষ ঠিকানা কোথায় তা আমিও জানি না! বহু যুগ আগে ঘন জঙ্গলের বুক চিরে মানুষ আমাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। গাছগাছালির ফাকে ফাকে এই ক্রমাগত চলাতেই তাে আমার আনন্দ। এভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়াই তাে জীবন। ধুলাে-মাটি দিয়ে তৈরি আমার শরীরে কত কাল ধরে কত কিছুর প্রলেপ পড়ল। ক্রমে শক্ত-জমাট হয়ে উঠলাম আমি। তবু থামতে পারলাম কোথায়! আমার থামা বারণ, কারণ ২ আমি যে রাজপথ, পথিক মানুষের চিরসখা।আমি গ্র্যান্ড ট্যাঙ্ক রােড। আমার বিস্তৃতি ডানকুনি থেকে দুর্গাপুর এক্সপ্রেস পর্যন্ত। আমি ভারতের প্রধান জাতীয় সড়কগুলির মধ্যে একটি। আমার দু-পাশে কত গাছপালা, কলকারখানা, বাড়ি। দিনরাত অশান্ত, অস্থির মানুষ ও তার যানবাহন আমার বুকের ওপর দিয়ে ছুটে চলেছে। এক একজনের এক-একরকম ছন্দ। তাদের গতিময় ছন্দের স্রোতের ভিন্ন ভিন্ন দোলা আমার প্রাণে তােলে শিহরণ। চরৈবেতি চরৈবেতি এই তাে আমাদের মন্ত্র। তবে এভাবেই নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে বেদনায় স্নান অসহায় মানুষের পায়ের শব্দে আমি অনুভব করেছি নৈরাশ্যের কম্পন। আবার তৃপ্ত মানুষের হাঁটায় সয়েছি দম্ভ ও আত্মবিশ্বাসের অনুরণন। আর দূর থেকে আসা মানুষজন যখন পায়ে পায়ে হাঁটে, তখন তাদের রােমাঞ্চ-কৌতুহল-উদ্দীপনা যেন প্রতিটি পদসঞ্চারের তালে ফুটে ওঠে। তবে ক্লান্ত পথিক অনেক পথ চলে যখন আমার প্রান্তে কোনাে নদীর সামনে ক্ষণকালের জন্য দাঁড়িয়ে পড়ে, তখন কৌতুক ও আনন্দে আমারও থামতে ইচ্ছে হয়।মানবজীবনের মতাে আমার জীবনেও যেন তিনটি অধ্যায়-শৈশব, যৌবন ও পরিণতির কাল। আমার শৈশব হল রাজপথের পত্তনের কাল, তখন লােকজন ছিল কম, গাছপালা ছিল বেশি। তখন গাড়িঘােড়ার সংখ্যা হাতে গােনা যেত। তাই দিনে-রাতে কোনাে মানুষের পদশব্দ শুনলেই আমার শিরায় শিরায় উত্তেজনার শিহরণ অনুভূত হত। মানুষের পায়ের শব্দের অপেক্ষায় আমি অধীর হয়ে থাকতাম। তারপর দিন গেল বদলে। গাড়িঘােড়া বাড়ল, লােকজন বাড়ল, রক্তপাতে, বেদনায় কেঁপে উঠলাম আমি। প্রতিবাদ জানিয়েছি, কিন্তু কে শােনে সে কথা!আজ আমি সংকীর্ণ, জরাজীর্ণ। আমার আজ অনেক বয়স। আমার অনেক জায়গায় ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে আছে। সরকার থেকে মেরামতির প্রচেষ্টা চালানাে হচ্ছে। তবে এখনও আমার সংস্কারে তারা হাত লাগায়নি। শুনেছি আমার উপর দিয়ে একটি নতুন ওভারব্রিজ স্থাপন করা হবে। আমার জৌলুষ আজ আর নেই। আমি মৃতপ্রায় অসাড়ের মতাে কোনােরকমে টিকে আছি। এখন আমার একটাই সান্ত্বনা আমি মানুষকে ঘরের সন্ধান দিই। ধুলাে-ধোয়া-কোলাহল থেকে ঘরের স্বস্তি ও স্তব্ধতায় মানুষকে নিয়ে যাই। মানুষের বেদনা ও ভালােবাসার সঙ্গে আমার ভলােবাসা ও যন্ত্রণাও আবর্তিত হয়। এই বােধটুকুই আমি মানুষের মধ্যে সঞ্চারিত করতে চাই।View attachment 163359
Thanku So mach
Lovely bro“পথ কি তার নিজের শেষকে জানে, যেখানে লুপ্ত ফুল আর স্তব্দ গান পৌঁছাল, যেখানে তারার আলােয় অনির্বাণ বেদনার দেওয়ালি-উৎসব।”—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই ভাষ্য যেন আমার সার্থক আত্মপরিচয়। সেই কবে সূচনার কথা; আজও আমার ক্ষীণ মনে পড়ে, তবে এ কথা সত্যি আমার শেষ ঠিকানা কোথায় তা আমিও জানি না! বহু যুগ আগে ঘন জঙ্গলের বুক চিরে মানুষ আমাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। গাছগাছালির ফাকে ফাকে এই ক্রমাগত চলাতেই তাে আমার আনন্দ। এভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়াই তাে জীবন। ধুলাে-মাটি দিয়ে তৈরি আমার শরীরে কত কাল ধরে কত কিছুর প্রলেপ পড়ল। ক্রমে শক্ত-জমাট হয়ে উঠলাম আমি। তবু থামতে পারলাম কোথায়! আমার থামা বারণ, কারণ ২ আমি যে রাজপথ, পথিক মানুষের চিরসখা।আমি গ্র্যান্ড ট্যাঙ্ক রােড। আমার বিস্তৃতি ডানকুনি থেকে দুর্গাপুর এক্সপ্রেস পর্যন্ত। আমি ভারতের প্রধান জাতীয় সড়কগুলির মধ্যে একটি। আমার দু-পাশে কত গাছপালা, কলকারখানা, বাড়ি। দিনরাত অশান্ত, অস্থির মানুষ ও তার যানবাহন আমার বুকের ওপর দিয়ে ছুটে চলেছে। এক একজনের এক-একরকম ছন্দ। তাদের গতিময় ছন্দের স্রোতের ভিন্ন ভিন্ন দোলা আমার প্রাণে তােলে শিহরণ। চরৈবেতি চরৈবেতি এই তাে আমাদের মন্ত্র। তবে এভাবেই নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে বেদনায় স্নান অসহায় মানুষের পায়ের শব্দে আমি অনুভব করেছি নৈরাশ্যের কম্পন। আবার তৃপ্ত মানুষের হাঁটায় সয়েছি দম্ভ ও আত্মবিশ্বাসের অনুরণন। আর দূর থেকে আসা মানুষজন যখন পায়ে পায়ে হাঁটে, তখন তাদের রােমাঞ্চ-কৌতুহল-উদ্দীপনা যেন প্রতিটি পদসঞ্চারের তালে ফুটে ওঠে। তবে ক্লান্ত পথিক অনেক পথ চলে যখন আমার প্রান্তে কোনাে নদীর সামনে ক্ষণকালের জন্য দাঁড়িয়ে পড়ে, তখন কৌতুক ও আনন্দে আমারও থামতে ইচ্ছে হয়।মানবজীবনের মতাে আমার জীবনেও যেন তিনটি অধ্যায়-শৈশব, যৌবন ও পরিণতির কাল। আমার শৈশব হল রাজপথের পত্তনের কাল, তখন লােকজন ছিল কম, গাছপালা ছিল বেশি। তখন গাড়িঘােড়ার সংখ্যা হাতে গােনা যেত। তাই দিনে-রাতে কোনাে মানুষের পদশব্দ শুনলেই আমার শিরায় শিরায় উত্তেজনার শিহরণ অনুভূত হত। মানুষের পায়ের শব্দের অপেক্ষায় আমি অধীর হয়ে থাকতাম। তারপর দিন গেল বদলে। গাড়িঘােড়া বাড়ল, লােকজন বাড়ল, রক্তপাতে, বেদনায় কেঁপে উঠলাম আমি। প্রতিবাদ জানিয়েছি, কিন্তু কে শােনে সে কথা!আজ আমি সংকীর্ণ, জরাজীর্ণ। আমার আজ অনেক বয়স। আমার অনেক জায়গায় ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে আছে। সরকার থেকে মেরামতির প্রচেষ্টা চালানাে হচ্ছে। তবে এখনও আমার সংস্কারে তারা হাত লাগায়নি। শুনেছি আমার উপর দিয়ে একটি নতুন ওভারব্রিজ স্থাপন করা হবে। আমার জৌলুষ আজ আর নেই। আমি মৃতপ্রায় অসাড়ের মতাে কোনােরকমে টিকে আছি। এখন আমার একটাই সান্ত্বনা আমি মানুষকে ঘরের সন্ধান দিই। ধুলাে-ধোয়া-কোলাহল থেকে ঘরের স্বস্তি ও স্তব্ধতায় মানুষকে নিয়ে যাই। মানুষের বেদনা ও ভালােবাসার সঙ্গে আমার ভলােবাসা ও যন্ত্রণাও আবর্তিত হয়। এই বােধটুকুই আমি মানুষের মধ্যে সঞ্চারিত করতে চাই।View attachment 163359
এইতো এটাই চাই
THANKU So MachLovely bro
U tooTHANKU So Mach
YaaU too
Thanku Didi,Tumio eirokom post korte paro School jibone Eirokom আত্যকথা লিখতে শিখেছোভালো লাগলো
হ্যাঁ Thankuবেশ ভাল লেখা