আমার লেখা এই গল্পটি ঠাকুরমার ঝুলি থেকে নেয়া। গল্পটিতে আমি আমার কল্পনা মিশিয়ে অতি প্রাঞ্জল ভাষায় লিখতে চেষ্টা করেছি। আজ ইন্টারনেটের যুগে সব ছেলে মেয়েদের হাতে নেট ভরা মুঠো ফোন। আমাদের সেই শীতের রাতে ঠাকুমার কাঁথার ভেতর ভাই বোনদের সাথে কুপীর আলোয় ঠাকুমার কাছে ঠাকুমার ঝুলির গল্প শোনা কোথায় হারিয়ে গেছে। আমি চেষ্টা করেছি আবার সেই ছোট বেলার স্মৃতিকে মনের মধ্যে জাগিয়ে তোলার। গল্পের থিমটা ঠাকুমার ঝুলি থেকে নেয়া, আমার নিজের কল্পনা মিশিয়ে লিখতে চেষ্টা করেছি। ভালো লাগলে বাড়ির ছোট দের পড়ে শোনাবেন।
**** ইচ্ছারূপী ডাইনী ****
চার দিকে ঘন বন বিশাল বিশাল গাছ নেই কোনো চলার পথ। ভয়ানক সব বন্য প্রাণী, ভুলেও কেউ ঢুকতে সাহস পায় না এই বনে। বনের মাঝে একটি ছোট পাহাড় আর সেই পাহাড়ের গুহার মধ্যে থাকে এক ইচ্ছারূপী ডাইনী। শয়তানের উপাসক। বহু বছর উপাসনা করে শয়তানকে তুষ্ট করে তার বরে আজ ডাইনী ইচ্ছারূপধারী। ইচ্ছা করলেই ডাইনী যে কোনো রূপ ধারন করতে পারে। বনের আসপাশ লোকালয়ের সবাই জানে এই মূর্তিমতী ভয়ানক ইচ্ছারূপী ডাইনীর কথা। তাই সবাই এই হিংস্র শ্বাপদসংকুল বনটাকে এড়িয়ে চলে। ইচ্ছারূপী ডাইনী তার আরাধ্য দেবতা শয়তানের কাছ থেকে আদেশ পায়, একশটি রাজপুত্র কে ধরে এনে মন্ত্র দিয়ে তাদের পুতুল করে তার হাতে তুলে দিলে ডাইনীকে অমরত্বের বর দেবে। আর সেই হবে ডাইনী সমাজের অধিশ্বরী। ডাইনীও বহু দিন ধরে বিভিন্ন রাজ্য থেকে রাজপুত্রদের ধরে নিয়ে এসে মন্ত্রের জোরে পুতুল করে রেখেছে। তাই আসে পাশের সব রাজ্যের রাজা রানীরা এই ডাইনীর ভয়ে তটস্থ থাকে আর রাজপুত্রদের একলা কোথাও বের হতে দেয় না।
এদিকে ইচ্ছারূপী ডাইনী নিরানব্বইটি রাজপুত্রকে পুতুল বানিয়ে ফেলেছে, বাকি মাত্র আর একটা রাজপুত্র। তার পরেই সে হয়ে যাবে অমর, ডাইনী সমাজের অধীশ্বরী। তাই ডাইনী শেষ রাজপুত্রের খোঁজে বিশাল এক শকুনির রূপ ধরে পাখা মেলে উড়ে পরলো আকাশে, নিশ্চিত কোথাও না কোথাও আর একটা রাজপুত্রের খোঁজ পাবেই।
হিমালয়ের কোলে ছবির মত একটি রাজ্য। ধর্মপ্রান রাজার রাজত্বে প্রজারা সুখে বসবাস করে। রাজার দুই রানী, বড় রানীর এক ছেলে, নাম অরুন, বয়স একুশ বাইশ। এরই ভেতর অস্ত্রবিদ্যায় বড় বড় যোদ্ধাদেরকেও হার মানিয়ে দিয়েছে। ছোট রানীরও একটি ছেলে, নাম বরুন, বয়স মাত্র পাঁচ ছ বছর । অরুন ছোট ভাই বরুনকে প্রানের থেকেও বেশি ভালোবাসে।
রাজ প্রাসাদের সকলে খুব সতর্ক থাকে যাতে কোনো ভাবেই দুষ্ট ইচ্ছারূপী ডাইনী ছোট কুমার বরুণকে চুরি করে নিয়ে যেতে না পারে।
এক দিন প্রাসাদের বাগানে বড় ভাই অরুন ছোট ভাই বরুনকে নিয়ে খেলা করছে আর সেই সময় আকাশ দিয়ে উড়ে যেতে যেতে শকুনি রূপী ডাইনীর নজরে পরে গেলো খালি বাগানে দুই রাজপুত্র খেলছে। যেমন দেখা আর তেমনি কাজ। উচু আকাশ থেকে শকুনি রূপী ডাইনী সো সো করে নেমে এলো নিচে রাজ বাগানে আর বিশাল দুটো পাখা দিয়ে ঢেকে ছো মেরে ছোট রাজপুত্র বরুনকে তুলে নিয়ে উড়ে গেলো আকাশে। চোখের সামনে ছোট ভাই বরুনকে শকুনিকে তুলে নিয়ে যেতে দেখে বড় ভাই অরুন প্রথমটায় হতচকিত হয়ে পরেছিল, তার পরেই নিজেকে সামলে নিয়ে অস্ত্র নিয়ে ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হয়ে শকুনির পেছনে ধাওয়া করলো। যে করেই হোক ছোট ভাইকে বাঁচাতে হবে।নিজের রাজ্য আর অনেক রাজ্যের সিমানা পেড়িয়ে শকুনির পেছনে ঘোড়ার পিঠে চলতে চলতে অবশেষে অরুন কুমার সেই ইচ্ছারূপী ডাইনীর বনের কাছে উপস্থিত হলো। তার পর আর শকুনি টা কে দেখতে পাচ্ছে না। কি করবে বুঝতে পারছে না বড় রাজকুমার অরুন। হটাৎ দেখে কাছেই একটি কালি মায়ের মন্দির। ঘোড়া থেকে নেমে অরুন আস্তে আস্তে মন্দিরে প্রবেশ করে দু হাত জোর করে চোখ বুঁজে মায়ের কাছে প্রার্থনা করে বলে, মাগো বলে দাও কোথায় পাবো আমার ভাই কে কি করে ডাইনীর হাত থেকে ওকে বাঁচাবো।
ওর প্রর্থনা শুনে মা দৈববাণী দিলেন। অরুন শুনতে পেলো মা ওকে বলছেন, তুই তোর ভাইকে খুঁজে পাবি, কিছু দূরে বনের মধ্যে একটি কুটির দেখতে পাবি, সেখানে শুভঙ্করী বলে একটি মেয়ের দেখা পাবি, সেই তোকে সাহায্য করবে তোর ভাইকে ডাইনীর কবল থেকে উদ্ধার করতে।
অরুন মাকে প্রণাম করে বেড়িয়ে পরলো। বনের মধ্যে কিছু দূর যেতেই দেখলো একটি সুন্দর ছিমছাম কুটির তার সামনে দাঁড়িয়ে একটি অতি সুন্দর অল্প বয়েসী মেয়ে। অরুন কে দেখে মেয়েটি এগিয়ে এসে বললো, আমি জানি তুমি আসবে তাই তোমার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি আর এও জানি তুমি তোমার ছোট ভাইকে ডাইনীর হাত থেকে উদ্ধার করতে এসেছ। আমি তোমাকে সাহায্য করবো। আমার নাম শুভঙ্করী। এই বলে অরুন কে নিয়ে শুভঙ্করী কুটিরের মধ্যে গিয়ে অরুনকে তিনটি জিনিস দেখালো, আর জিনিস গুলোর গুনাগুন বলে গেলো। প্রথমটা একটা আতস কাচ, যার ভেতর দিয়ে দেখলে ছদ্যবেশ থাকলেও তার আসল চেহারাটা দেখা যায়। দ্বিতীয় একটি মন্ত্রপূত পাথরের টুকরো যেটা কারুর দিকে ছুড়ে মারলে সে ধ্বংস হয়ে যাবে আর তৃতীয়টি একটি শঙ্খ যেটা বাজালে বশিকরণে পুতুল হয়ে যাওয়া মানুষ আবার প্রাণ ফিরে পেয়ে মানুষ হয়ে যায়। সব শুনে বড় কুমার শুভঙ্করীকে জিগ্যেস করে জানতে পারলো ভবিষ্যৎ বাণী আছে শুভঙ্করীর হাতেই ইচ্ছারূপী ডাইনীর ধ্বংস। আরও জানতে পারলো যত দিন না শুভঙ্করী ষোলো বছরে পা না দেবে তত দিন শুভঙ্করী ডাইনী কে ধ্বংস করতে পারবে না। এবার শুভঙ্করী অরুন কুমার কে বললো, কুমার আজ আমি ষোলো বছরে পা রেখেছি আজই আমি ডাইনিকে ধ্বংস করতে চাই। চলুন আমার সাথে। দুজনে মিলে গভীর অরণ্যে ডাইনীর গুহার সামনে এসে অরুন বললো, শুভঙ্করী তুমি এখানে অপেক্ষা করো আমি বরুনকে নিয়ে আসি। বলে তীর ধনুক হাতে অরুন গুহার মধ্যে ঢুকে দেখে অনেক গুলো পুতুল শুয়ে আছে। ডাইনীকে দেখে অরুন তলোয়ার তীর ধনুক নিয়ে ডাইনীকে আক্রমণ করলো। কিন্তু মায়াবী ডাইনী সব কিছু অক্লেশে এড়িয়ে গিয়ে মন্ত্র বলে অরুনকেও পুতুল বানিয়ে দিল। ডাইনী দেখেছিলো রাজপুত্রের সাথে একটি মেয়ে এসেছিল, নিশ্চয়ই গুহার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। ইচ্ছাধারী ডাইনী অরুনের রূপ ধারন করলো। এদিকে অরুনের গুহা থেকে বেড়োতে দেরী দেখে শুভঙ্করী চিৎকার করে বড় রাজকুমার বড়রাজকুমার বলে ডাকাডাকি করতেই অরুন রূপধারী ডাইনী গুহার বাইরে বেড়িয়ে এলো। শুভঙ্করীর কেমন সন্দেহ হওয়াতে হাতের আতস কাচ দিয়ে দেখতেই দেখে, এতো রাজকুমার নয় এতো সেই দুষ্ট ডাইনী। সঙ্গে সঙ্গে শুভঙ্করী মন্ত্রপূত পাথরের খণ্ড ডাইনীর দিকে ছুড়ে মারতেই ভয়ংকর একটা শব্দ আর আগুনের লেলিহান শিখায় ইচ্ছারূপী ডাইনী জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে গেলো। ডাইনীকে ধ্বংস করে শুভঙ্করী অরুনকে খুঁজতে গুহার ভেতরে ঢুকে দেখে একশোর জায়গায় একশো একটি পুতুল শুয়ে আছে। শুভঙ্করী বুঝলো দুষ্ট ডাইনী অরুনকেও পুতুল বানিয়ে দিয়েছে । তখন সে কালি মাকে স্মরণ করে হাতের শঙ্খ বাজাতেই দেখে সেই একশো একটি পুতুল আবার মানুষ হয়ে গেছে। তার মধ্যে অরুনও আছে। অরুন তখন ছোট ভাই বরুনের হাত ধরে শুভঙ্করীর সামনে এসে দাঁড়াতেই শুভঙ্করী বরুনকে কোলে নিয়ে খুব আদর করলো । তার পর অরুন শুভঙ্করী আর বরুনকে নিয়ে ঘোড়ায় চড়ে নিজের রাজ্যে ফিরে এলো। দুই ছেলেকে ফিরে পেয়ে রাজা রাণীরা আর সারা প্রাসাদে উৎসব লেগে গেলো । শুভঙ্করীর সব কথা বড় রাজকুমারের কাছে শুনে খুব খুশি হয়ে রাজা মশাই আর রাণীমারা শুভঙ্করীর সাথে বড় রাজপুত্র অরুনের মহা ধুমধাম করে বিয়ে দিয়ে দিলেন। তার পর থেকে সবাই সুখে শান্তিতে দিন কাটাতে থাকলো। এখানেই আমার গল্পের নটে গাছটি মুড়োলো।
******&&&&&&******
**** ইচ্ছারূপী ডাইনী ****
চার দিকে ঘন বন বিশাল বিশাল গাছ নেই কোনো চলার পথ। ভয়ানক সব বন্য প্রাণী, ভুলেও কেউ ঢুকতে সাহস পায় না এই বনে। বনের মাঝে একটি ছোট পাহাড় আর সেই পাহাড়ের গুহার মধ্যে থাকে এক ইচ্ছারূপী ডাইনী। শয়তানের উপাসক। বহু বছর উপাসনা করে শয়তানকে তুষ্ট করে তার বরে আজ ডাইনী ইচ্ছারূপধারী। ইচ্ছা করলেই ডাইনী যে কোনো রূপ ধারন করতে পারে। বনের আসপাশ লোকালয়ের সবাই জানে এই মূর্তিমতী ভয়ানক ইচ্ছারূপী ডাইনীর কথা। তাই সবাই এই হিংস্র শ্বাপদসংকুল বনটাকে এড়িয়ে চলে। ইচ্ছারূপী ডাইনী তার আরাধ্য দেবতা শয়তানের কাছ থেকে আদেশ পায়, একশটি রাজপুত্র কে ধরে এনে মন্ত্র দিয়ে তাদের পুতুল করে তার হাতে তুলে দিলে ডাইনীকে অমরত্বের বর দেবে। আর সেই হবে ডাইনী সমাজের অধিশ্বরী। ডাইনীও বহু দিন ধরে বিভিন্ন রাজ্য থেকে রাজপুত্রদের ধরে নিয়ে এসে মন্ত্রের জোরে পুতুল করে রেখেছে। তাই আসে পাশের সব রাজ্যের রাজা রানীরা এই ডাইনীর ভয়ে তটস্থ থাকে আর রাজপুত্রদের একলা কোথাও বের হতে দেয় না।
এদিকে ইচ্ছারূপী ডাইনী নিরানব্বইটি রাজপুত্রকে পুতুল বানিয়ে ফেলেছে, বাকি মাত্র আর একটা রাজপুত্র। তার পরেই সে হয়ে যাবে অমর, ডাইনী সমাজের অধীশ্বরী। তাই ডাইনী শেষ রাজপুত্রের খোঁজে বিশাল এক শকুনির রূপ ধরে পাখা মেলে উড়ে পরলো আকাশে, নিশ্চিত কোথাও না কোথাও আর একটা রাজপুত্রের খোঁজ পাবেই।
হিমালয়ের কোলে ছবির মত একটি রাজ্য। ধর্মপ্রান রাজার রাজত্বে প্রজারা সুখে বসবাস করে। রাজার দুই রানী, বড় রানীর এক ছেলে, নাম অরুন, বয়স একুশ বাইশ। এরই ভেতর অস্ত্রবিদ্যায় বড় বড় যোদ্ধাদেরকেও হার মানিয়ে দিয়েছে। ছোট রানীরও একটি ছেলে, নাম বরুন, বয়স মাত্র পাঁচ ছ বছর । অরুন ছোট ভাই বরুনকে প্রানের থেকেও বেশি ভালোবাসে।
রাজ প্রাসাদের সকলে খুব সতর্ক থাকে যাতে কোনো ভাবেই দুষ্ট ইচ্ছারূপী ডাইনী ছোট কুমার বরুণকে চুরি করে নিয়ে যেতে না পারে।
এক দিন প্রাসাদের বাগানে বড় ভাই অরুন ছোট ভাই বরুনকে নিয়ে খেলা করছে আর সেই সময় আকাশ দিয়ে উড়ে যেতে যেতে শকুনি রূপী ডাইনীর নজরে পরে গেলো খালি বাগানে দুই রাজপুত্র খেলছে। যেমন দেখা আর তেমনি কাজ। উচু আকাশ থেকে শকুনি রূপী ডাইনী সো সো করে নেমে এলো নিচে রাজ বাগানে আর বিশাল দুটো পাখা দিয়ে ঢেকে ছো মেরে ছোট রাজপুত্র বরুনকে তুলে নিয়ে উড়ে গেলো আকাশে। চোখের সামনে ছোট ভাই বরুনকে শকুনিকে তুলে নিয়ে যেতে দেখে বড় ভাই অরুন প্রথমটায় হতচকিত হয়ে পরেছিল, তার পরেই নিজেকে সামলে নিয়ে অস্ত্র নিয়ে ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হয়ে শকুনির পেছনে ধাওয়া করলো। যে করেই হোক ছোট ভাইকে বাঁচাতে হবে।নিজের রাজ্য আর অনেক রাজ্যের সিমানা পেড়িয়ে শকুনির পেছনে ঘোড়ার পিঠে চলতে চলতে অবশেষে অরুন কুমার সেই ইচ্ছারূপী ডাইনীর বনের কাছে উপস্থিত হলো। তার পর আর শকুনি টা কে দেখতে পাচ্ছে না। কি করবে বুঝতে পারছে না বড় রাজকুমার অরুন। হটাৎ দেখে কাছেই একটি কালি মায়ের মন্দির। ঘোড়া থেকে নেমে অরুন আস্তে আস্তে মন্দিরে প্রবেশ করে দু হাত জোর করে চোখ বুঁজে মায়ের কাছে প্রার্থনা করে বলে, মাগো বলে দাও কোথায় পাবো আমার ভাই কে কি করে ডাইনীর হাত থেকে ওকে বাঁচাবো।
ওর প্রর্থনা শুনে মা দৈববাণী দিলেন। অরুন শুনতে পেলো মা ওকে বলছেন, তুই তোর ভাইকে খুঁজে পাবি, কিছু দূরে বনের মধ্যে একটি কুটির দেখতে পাবি, সেখানে শুভঙ্করী বলে একটি মেয়ের দেখা পাবি, সেই তোকে সাহায্য করবে তোর ভাইকে ডাইনীর কবল থেকে উদ্ধার করতে।
অরুন মাকে প্রণাম করে বেড়িয়ে পরলো। বনের মধ্যে কিছু দূর যেতেই দেখলো একটি সুন্দর ছিমছাম কুটির তার সামনে দাঁড়িয়ে একটি অতি সুন্দর অল্প বয়েসী মেয়ে। অরুন কে দেখে মেয়েটি এগিয়ে এসে বললো, আমি জানি তুমি আসবে তাই তোমার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি আর এও জানি তুমি তোমার ছোট ভাইকে ডাইনীর হাত থেকে উদ্ধার করতে এসেছ। আমি তোমাকে সাহায্য করবো। আমার নাম শুভঙ্করী। এই বলে অরুন কে নিয়ে শুভঙ্করী কুটিরের মধ্যে গিয়ে অরুনকে তিনটি জিনিস দেখালো, আর জিনিস গুলোর গুনাগুন বলে গেলো। প্রথমটা একটা আতস কাচ, যার ভেতর দিয়ে দেখলে ছদ্যবেশ থাকলেও তার আসল চেহারাটা দেখা যায়। দ্বিতীয় একটি মন্ত্রপূত পাথরের টুকরো যেটা কারুর দিকে ছুড়ে মারলে সে ধ্বংস হয়ে যাবে আর তৃতীয়টি একটি শঙ্খ যেটা বাজালে বশিকরণে পুতুল হয়ে যাওয়া মানুষ আবার প্রাণ ফিরে পেয়ে মানুষ হয়ে যায়। সব শুনে বড় কুমার শুভঙ্করীকে জিগ্যেস করে জানতে পারলো ভবিষ্যৎ বাণী আছে শুভঙ্করীর হাতেই ইচ্ছারূপী ডাইনীর ধ্বংস। আরও জানতে পারলো যত দিন না শুভঙ্করী ষোলো বছরে পা না দেবে তত দিন শুভঙ্করী ডাইনী কে ধ্বংস করতে পারবে না। এবার শুভঙ্করী অরুন কুমার কে বললো, কুমার আজ আমি ষোলো বছরে পা রেখেছি আজই আমি ডাইনিকে ধ্বংস করতে চাই। চলুন আমার সাথে। দুজনে মিলে গভীর অরণ্যে ডাইনীর গুহার সামনে এসে অরুন বললো, শুভঙ্করী তুমি এখানে অপেক্ষা করো আমি বরুনকে নিয়ে আসি। বলে তীর ধনুক হাতে অরুন গুহার মধ্যে ঢুকে দেখে অনেক গুলো পুতুল শুয়ে আছে। ডাইনীকে দেখে অরুন তলোয়ার তীর ধনুক নিয়ে ডাইনীকে আক্রমণ করলো। কিন্তু মায়াবী ডাইনী সব কিছু অক্লেশে এড়িয়ে গিয়ে মন্ত্র বলে অরুনকেও পুতুল বানিয়ে দিল। ডাইনী দেখেছিলো রাজপুত্রের সাথে একটি মেয়ে এসেছিল, নিশ্চয়ই গুহার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। ইচ্ছাধারী ডাইনী অরুনের রূপ ধারন করলো। এদিকে অরুনের গুহা থেকে বেড়োতে দেরী দেখে শুভঙ্করী চিৎকার করে বড় রাজকুমার বড়রাজকুমার বলে ডাকাডাকি করতেই অরুন রূপধারী ডাইনী গুহার বাইরে বেড়িয়ে এলো। শুভঙ্করীর কেমন সন্দেহ হওয়াতে হাতের আতস কাচ দিয়ে দেখতেই দেখে, এতো রাজকুমার নয় এতো সেই দুষ্ট ডাইনী। সঙ্গে সঙ্গে শুভঙ্করী মন্ত্রপূত পাথরের খণ্ড ডাইনীর দিকে ছুড়ে মারতেই ভয়ংকর একটা শব্দ আর আগুনের লেলিহান শিখায় ইচ্ছারূপী ডাইনী জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে গেলো। ডাইনীকে ধ্বংস করে শুভঙ্করী অরুনকে খুঁজতে গুহার ভেতরে ঢুকে দেখে একশোর জায়গায় একশো একটি পুতুল শুয়ে আছে। শুভঙ্করী বুঝলো দুষ্ট ডাইনী অরুনকেও পুতুল বানিয়ে দিয়েছে । তখন সে কালি মাকে স্মরণ করে হাতের শঙ্খ বাজাতেই দেখে সেই একশো একটি পুতুল আবার মানুষ হয়ে গেছে। তার মধ্যে অরুনও আছে। অরুন তখন ছোট ভাই বরুনের হাত ধরে শুভঙ্করীর সামনে এসে দাঁড়াতেই শুভঙ্করী বরুনকে কোলে নিয়ে খুব আদর করলো । তার পর অরুন শুভঙ্করী আর বরুনকে নিয়ে ঘোড়ায় চড়ে নিজের রাজ্যে ফিরে এলো। দুই ছেলেকে ফিরে পেয়ে রাজা রাণীরা আর সারা প্রাসাদে উৎসব লেগে গেলো । শুভঙ্করীর সব কথা বড় রাজকুমারের কাছে শুনে খুব খুশি হয়ে রাজা মশাই আর রাণীমারা শুভঙ্করীর সাথে বড় রাজপুত্র অরুনের মহা ধুমধাম করে বিয়ে দিয়ে দিলেন। তার পর থেকে সবাই সুখে শান্তিতে দিন কাটাতে থাকলো। এখানেই আমার গল্পের নটে গাছটি মুড়োলো।
******&&&&&&******