• We kindly request chatzozo forum members to follow forum rules to avoid getting a temporary suspension. Do not use non-English languages in the International Sex Chat Discussion section. This section is mainly created for everyone who uses English as their communication language.

আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা ( গল্প)

Boy Friend

Epic Legend
Chat Pro User
আমার নতুন গল্প।
** আমার স্বপ্নে দেখা রাজকণ্যা **

হটাত ফেসবুকের নিউজ ফিডে কেউ একজন অচেনা মহিলা আমার খুব প্রিয় গায়ক শ্যামল মিত্রের একটা পুরনো গান আপলোড করে দিয়েছে।
" আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা থাকে, সাত সমুদ্র তেরো নদীর পাড়ে, ময়ূরপঙ্খী ভিড়িয়ে দিয়ে সেথা, দেখে এলেম তারে " আমার কিশোর জীবনের এক মিষ্টি রোমান্টিক গান।
অনেক দিন বাদে গানটা শুনতে শুনতে মনটা কেমন জানি অতীত অনেক অতীতে চলে গেলো।
সালটা উনিশশো ষাট, সদ্য স্কুল ফাইনাল পাশ করেছি। বেলেঘাটার রাসমনি বাজারে ছয় ঘর এক উঠান ভাড়া বাড়িতে থাকি মা ভাই বোনদের সাথে। দেশবন্ধু হাই স্কুল বেলেঘাটার খুব নাম করা স্কুল। আজো বহাল তবিয়তে বিদ্যমান। সেই স্কুলের ছাত্র ছিলাম। আমার মনে পরে আজকের ফুলবাগানের একটু আগে কালি মন্দিরের উল্টো দিকে একটা পার্ক আছে আমাদের ছোট বেলাতেও ছিল তার পাশে গুরুদাস কলেজ নামে একটি কলেজ আমি স্কুল লিভ করার বছর পাঁচেক আগে স্থাপিত হয়েছিল। কোএডুকেশন কলেজ। কলকাতা ইউনিভার্সিটির আন্ডারে। বাড়ির কাছে তাই কোনো হেজিটেট না করে ফার্স্ট ইয়ার ইন্টারমেডিয়েট সাইন্সে ভর্তি হয়ে গিয়েছিলাম। তখন সদ্য নতুন গুরুদাস কলেজের একটাই বিল্ডিং ছিল। আজ আমার পুরান কলেজ কলেবরে বৃদ্ধি হয়ে চারটে বিল্ডিংয়ে দাঁড়িয়ে।
আমার তখন ষোলো বছর বয়েস। সদ্য গোঁফের রেখা বেরিয়েছে, আয়না দিয়ে কতবার দেখি আর কেমন জানি নিজেকে হিরো হিরো মনে হয়। সে যুগে সিনেমা ছিল সাদা কালো। আমার ভিষণ ভিষণ ফেভারিট হিরো ছিল বোম্বের দেবানন্দ। দেবানন্দের মাথার চুলের একটা বিশেষ স্টাইল ছিল বা দিকে সিঁথি আর ডান দিকে সামনের দিকে একটু ফোলানো যাকে আমরা টেরি কাটা বলতাম। বলতে নেই আমারও সেই সময় এক মাথা চুল ছিল আর স্নানের পর দেবানন্দের স্টাইলের চুল করার জন্য আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চিরুনীর উল্টো দিক দিয়ে ঠেলে ঠেলে টেরি বানাতাম। আজ এই বয়েসেও আমার মাথার হাল্কা হয়ে যাওয়া চুলে কিন্তু দেবানন্দের ছোঁয়া লেগে আছে। যাই হোক যা বলছিলাম। আমি সারা স্কুল লাইফটাই হাফ প্যান্ট আর হাফ সার্টে চালিয়ে দিয়েছি। মাঝে মাঝে অবস্য একটু হায়ার ক্লাসে মানে নাইন টেনে বাড়ি থেকে পাজামা আর হাফ সার্ট স্কুল যাওয়ার জন্য বরাদ্য হয়েছিল। ভিষণ লোভ হতো ফুল প্যান্ট পরার। তখন কোনো রকম টেরিলিন বা সিন্থেটিকের জামা প্যান্ট এর প্রচলনই হয় নি। মাখন জিনের ফুল প্যান্ট ছেলেদের মধ্যে খুব জনপ্রিয় ছিল। আমার মনে আছে নতুন কলেজে ভর্তি হয়েছি আমার মতো বেড়ালের ভাগ্যেও ছিকে ছিড়ে গিয়েছিল। বাড়ি থেকে আমাকে দুটো দু কালারের ফুল প্যান্ট বানিয়ে দিয়েছিল। তার মধ্যে একটা মাখন জিনের। উফ মনে হয়েছিলো হিরো দেবানন্দ হওয়ার দিকে এক ধাপ যেন এগিয়ে গেলাম। এমন একটা ভাব আর চালচলন মনের মধ্যে এসে গিয়েছিল যেন কত বড় হয়ে গেছি। যাই হোক এবারে বলি আমার প্রথম দিন কলেজের কথা। মনে আছে সেদিন ছিল সোমবার, সকাল দশটায় ক্লাস, তারাতাড়ি স্নান করে একটু টিফিন করেই বেড়িয়ে পরেছিলাম কলেজের দিকে। জানতাম প্রথম দিন দু একটা ক্লাস হয়েই ছুটি হয়ে যাবে। আমার বাড়ি থেকে গুরুদাস কলেজ কুড়ি পঁচিশ মিনিটের রাস্তা। একটা প্রচন্ড উত্তেজনা আর খুশি মনের মধ্যে, আর ভাবছি কি জানি কত জন মেয়ে আমাদের ফার্স্ট ইয়ার সাইন্সে এডমিশন নিয়েছে। ভাবতেও পারছি না আমারও কোনো মেয়ে বন্ধু হতে পারে আমারই ক্লাসের কেউ। যাই হোক এই সব ভাবতে ভাবতে পোঁছে গেলাম কলেজের মেন গেটে। উফ মনে হচ্ছে কোথায় এসে পরেছি। হাতে একটা করে বই খাতা নিয়ে ছেলে মেয়েরা কলেজে ঢুকছে। কি সুন্দর দেখতে সব, কাকে ছেড়ে কাকে দেখবো। আমার দু চোখে তখন স্বপ্ন আর স্বপ্ন আর ভাবছি এদের মধ্যে ক জন আমাদের ক্লাসের হতে পারে। পায়ে পায়ে ঢুকে গেলাম কলেজের ভেতর। আমাদের ফার্স্ট ইয়ার সাইন্সের ক্লাস রুম দোতালায় গ্যালারিতে। ঢুকে গেলাম ক্লাস রুমে। বিশাল গ্যালারি, সিড়ির ধাপে ধাপে দুপাশে দুটো করে বেঞ্চ। মাঝখানে প্যাসেজ। একটু আগেই ঢুকে গিয়েছিলাম ক্লাস রুমে।কয়েকজন ছাত্র বসে আছে সবাই অচেনা আমারই বয়েসী। আমি থার্ড রো এর একটা বেঞ্চে বসে পরলাম।
আর অধীর আগ্রহে দরজার দিকে তাকিয়ে আছি ক জন ছাত্রী আসে তার জন্য। ধীরে ধীরে ক্লাস রুম ভরে যাচ্ছে সবাই ছাত্র আর সবাই তাকিয়ে আছে দরজার দিকে হটাত একটি মেয়ে ঢুকলো একটা খাতা হাতে নিয়ে, আমি স্পষ্ট শুনতে পেলাম ছাত্রদের মধ্যে একটা খুশীর গুঞ্জন।
যাই হোক ক্লাস শুরু হওয়ার ঘন্টা বেজে গেলো , তাকিয়ে দেখি আমরা জনা পঞ্চাশ ছাত্র আর সাকুল্যে তিন জন ছাত্রী। সকলের দিকে তাকিয়ে দেখি সব ছাত্রদের মুখে একটা স্বপ্ন ভঙ্গ আর হতাশার ছবি। আমারও ভেতর থেকে একটা বুক ভাঙ্গা দীর্ঘনিশ্বাস বেড়িয়ে এসেছিল সেদিন।
আর্টস স্ট্রিমে উপছে পরা ছাত্রীদের ভীর দেখে আমাদের মন আরো খারাপ হয়ে গিয়েছিল। সারা কলেজে রঙিন রঙিন প্রজাপতির মেলা সব ছাত্র ছাত্রীদের উচ্ছ্বাস কলরব আর আমাদের ক্লাসে মরুভূমির নিস্তব্ধতা।
এই ভাবে শুরু হয়েছিল আমার প্রথম কলেজ জীবনের প্রথম দিন।
দু দিন বাদে নোটিশ বোর্ডে সোমবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ক্লাস রুটিন। আমরা সবাই খাতায় লিখে নিতে নিতে চোখ আটকিয়ে গেলো মঙ্গলবার আর শুক্রবারে। একি দেখছি ওই দু দিন আমাদের বাংলা ক্লাস হবে ফার্স্ট ইয়ার আর্টসের সাথে কম্বাইন্ড। আমাদের ছাত্রদের মনে যেন ক্যাডবেরির লাড্ডু ফাটলো। খুশিতে ঝলমল করে উঠলো আমাদের সকলের মুখ। নেক্সট ডে মঙ্গলবার, প্রথম পিরিয়ড বাংলা। আমরা সকাল সকাল ক্লাসে উপস্থিত। আমাদের গ্যালারি কাস রুম টা বিশাল বড় তাই এই রুমেই কম্বাইন্ড ক্লাস হবে। ধীরে ধীরে আর্টসের স্টুডেন্ট রা আসতে শুরু করেছে। বসার বন্দোবস্ত এক সাইডে ছেলেরা আরেক সাইডে মেয়েরা। উফ উত্তেজনায় আমাদের যে কি অবস্থা। কি সুন্দর সুন্দর পরীর মতো মেয়েরা রঙ বেরঙের এক ঝাক প্রজাপতি। আমাদের চোখে মুখে মুগ্ধতা আর খুশীর ছোঁয়া। আমার মনের মধ্যে গুন গুন করে উঠলো শ্যামল মিত্রের এই গানটা, আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা থাকে......
সেই শুরু হয়েছিল আমার জীবনে বড় হওয়ার প্রথম সিড়ি। তারপর গঙ্গা দিয়ে কত জল বয়ে গেছে, কত সহস্র সূর্য অস্ত চলে গেছে জীবন আকাশে। কলেজ জীবন শেষ করে যাদবপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং তার পর কর্মক্ষেত্র। আজ রিটায়ার্ড লাইফে ফেসবুকের নিউজ ফিডে আপলোড করা শ্যামল মিত্রের গানটা শুনতে শুনতে মনটা চলে গিয়েছিল সেই ফেলে আসা অতিতে। আজ অবসর সময় কাটাই কিছু কিছু লেখা পড়া করে। ফেসবুকের অনেক গ্রুপে আমার কবিতা, গল্প অনেকের পছন্দ। হটাত আমার পাশে বসে আমার অতিতের প্রেম বর্তমানের গিন্নির গলা, আমাকে বলছে কি দারুন গানটা বলো,? আমার মনটা এখন দারুন রোমান্টিক হয়ে আছে, যে মাথায় দু লাইন কবিতা এসে গেলো, আমার গিন্নির জন্য।
" চোখের তারায় আঁকা
হয়ে গেছো তুমি,
আকাশের তারা হয়ে জ্বলছো,
মনে মনে আমি স্বপ্ন দেখেছি
কানে কানে ভালোবাসি তুমি
বোলছো। @@@@@@@@@@@@
 
Top